সুসংবাদ প্রতিদিন

আনারসের ভালো দামে খুশি চাষি

প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

আবহাওয়া চাষের অনুকূলে থাকায় এ বছর মৌলভীবাজারের পাহাড়-টিলায় আগাম জাতের আনারসের ভালো ফলন হয়েছে। উৎপাদনের এ মৌসুমে চাষিরা ন্যায্য দাম পেয়ে খুবই খুশি। প্রতিদিন শ্রীমঙ্গলের আড়তজুড়ে প্রায় কোটি টাকার আনারস কেনাবেচা হচ্ছে। মৌলভীবাজারের এ সুস্বাদু আনারস খুব শিগগিরই রপ্তানির চিন্তাভাবনা চলছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ বলেন, মৌলভীবাজারের উৎপাদিত আনারস শিগগিরই বিদেশে রপ্তানির বিষয়ে সরকার একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে চাষিরা আরো লাভবান হবেন। সম্প্রতি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার একাধিক পাহাড়ে দেখা যায়, টিলার বুকজুড়ে সাজানো-গোছানো অপরূপ দৃশ্যের এক একটি আনারস বাগান। কাঁটাযুক্ত গাঢ় সবুজের পাতায় পাতায় ডানা মেলেছে শত শত কাঁচা-পাকা আনারস। তবে অসময়ে আগাম জাতের এ আনারস চাষে চাষিদের শুরুতে চরম বেগ পোহাতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে সেচ সংকট মোকাবিলা ও অধিক দামে একাধিকবার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়েছে। এতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর চাষিদের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। তারপরও এবার আনারসের ভালো ফলন হয়েছে। উৎপাদনের এ ভরা মৌসুমে চাষিরা আনারসের ন্যায্যদাম পেয়ে খুবই খুশি। চাষি সামছুল হক জানান, তিনি এ বছর তিন থেকে চারটি টিলায় আনারস চাষ করেছেন। প্রথম দিকে সেচ সমস্যার সম্মুখীন হন তিনি। তবে সমস্যা কাটিয়ে তার বাগানে আনারসের ভালো ফলন হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনি ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার আনারস বিক্রি করেছেন। আরেক চাষি জসিম উদ্দিন জানান, এখন পর্যন্ত তার বাগান থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকার আনারস বিক্রি হয়েছে। তার বাগানে অন্তত আরো দেড় লাখ আনারস আছে। বাজারের এ দাম অব্যাহত থাকলে এ বছর লাভের পরিমাণ বেশি থাকবে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখা উপজেলায় আনারসের চাষাবাদ হয়ে এলেও সবচেয়ে বেশি চাষ ও উৎপাদন হয় শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায়। এ জেলায় ‘হানিকুইন’, ‘জায়েন্ড কিউ’ এবং ‘ক্যালেন্ডার’ এ তিন জাতের মধ্যে বিলাতি জাতের আনারস হানিকুইনেরই উৎপাদন হয় বেশি এবং এর চাহিদাও ব্যাপক। গরমের কারণে রসালো ফল আনারসের ব্যাপক চাহিদা থাকায় প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার আনারস কেনা-বেচা হচ্ছে- শ্রীমঙ্গল আড়তে। কৃষি অফিসের তথ্য মতে, জেলায় ১ হাজার ২১৫ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে আনারস চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। নতুন বাজার আড়ত সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. আবু তাহের বলেন, ছোট সাইজের আনারস হালি প্রতি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, মাঝারি সাইজের আনারস ৮০ থেকে ১০০ এবং বড় সাইজের আনারস হালি প্রতি ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর সর্বাধিক বড় সাইজটা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। তবে কাটা বাজারের এই দাম উঠানামা করে। আড়তে প্রতিদিন কম করে প্রায় কোটি টাকার আনারস কেনাবেচা হচ্ছে। এতে আড়তদাররা যেমন খুশি, তেমনি চাষিরাও ভালো দাম পাচ্ছেন বলে জানান তিনি।