ফেসবুকে মহানবীকে নিয়ে জবির দুই শিক্ষার্থীর কটূক্তি

* সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড় * বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি

প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সাজেদুর রহমান, জবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৌদ্ধ-ধর্মালম্বী শিক্ষার্থী কাওয়িং কেইনের বিরুদ্ধে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত কেইন কাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একটি পোস্টের কমেন্টে তিনি মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তি করেন। মুহূর্তের মধ্যেই এ মন্তব্যের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ও অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। জানা যায়, বুদ্ধিস্ট প্রোভার্ড নামক ফেসবুক পেজের একটি ভিডিও নিজের প্রোফাইলে শেয়ার দেন মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এডিশন দেওয়ান। শেয়ারকৃত ওই ভিডিও পোস্টের কমেন্টে কাওয়িং কেইন মোহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তি ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। ওই মন্তব্যে হা হা রিয়েক্ট ও স্টিকার কমেন্ট করেন মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী এডিশন দেওয়ান। এছাড়া তাদের উভয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় আরো বেশ কিছু ফেসবুক পোস্টে ধর্মীয় কটূক্তি ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ রয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ওই পেইজে শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, বুদ্ধ ধর্মের ধর্মগুরু গৌতম বুদ্ধের জীবনী সম্পর্কে একজন ইসলামী বক্তার আলোচনা শেয়ার করা হয়। ওই ইসলামী বক্তা বৌদ্ধ ধর্মের ঐতিহাসিক উৎপত্তি ও গৌতম বুদ্ধের অবদান ব্যাখ্যা করেন। ভিডিওটির কোনো অংশেই গৌতম বুদ্ধকে নিয়ে কোনো বিরূপ বক্তব্য লক্ষ্য করা যায়নি। সেই পোস্টে ইসলামের নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন জবি শিক্ষার্থী কাওয়িং কেইন।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরুর পর কাওয়িং কেইন সেই বিতর্কিত মন্তব্য মুছে ফেলেন। কিছুক্ষণ পর এডিশন দেওয়ানও তার পোস্ট মুছে ফেলেন।

এ বিষযে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইব্রাহীম খলীল বলেন, এই দুই শিক্ষার্থী শুধু এবার নয়, তারা নিয়মিত ইসলামকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। আবার তারা সমস্যায় পড়লে বা আলোচনায় আসলে নামমাত্র ক্ষমা চাচ্ছে। আমরা তাদের এ ধরনের কাজের তীব্র নিন্দা ও যথাযথ শাস্তির আওতায় আনতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কাওয়িং কেইন বলেন, হুজুর আমাদের গৌতম বুদ্ধকে নিয়ে কথা বলেছেন। মার্কেটিং বিভাগের এক ফ্রেন্ড ভিডিওটি শেয়ার দিয়েছেন। আমি ওই পোস্টের কমেন্টে বক্সে হুজুরকে উদ্দেশ্য করে গালি দিয়েছি; ধর্মকে লক্ষ্য করে না। ধর্মকে নিয়ে গালি দেওয়া আমার উদ্দেশ্য ছিল না। ‘মোহাম্মদ’ ইসলাম ধর্মের নবী বা কিছু; এ ব্যাপারে আমি জানতাম না। আমি সেই হুজুরের নামও জানতাম না।

হুজুরের নাম না জানা সত্ত্বেও ‘মোহাম্মদ’ শব্দ উল্লেখ করে এমন কটুক্তি কারণ জানতে চাইলে কেইন বলেন, আমি দেখেছি মুসলমানদের নামের প্রথমে ‘মোহাম্মদ’ থাকে। তাই হুজুরের নামের প্রথমে ‘মোহাম্মদ’ থাকতে পারে বলে ‘মোহাম্মদ’ লিখেছি।

অপর অভিযুক্ত এডিশন দেওয়ান বলেন, আমি হুজুরের নাম জানতে চেয়ে পোস্টটি শেয়ার দিয়েছি। কেইনের কমেন্টে খারাপ লাগছে। খারাপ লাগা থেকে আমি হা হা রিয়েক্ট ও স্টিকার কমেন্ট করেছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিষয়টি কথা বলছি। এটি খুব নিম্নমানের মন্তব্য। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের থেকে এই ধরনের মন্তব্য আশা করি না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।