ঢাকা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দেড় মাস পর ঈদুল আজহা

ব্যস্ত সময় পার করছেন চট্টগ্রামের খামারিরা

ব্যস্ত সময় পার করছেন চট্টগ্রামের খামারিরা

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছেন চট্টগ্রামের খামারিরা। তাই বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন গৃহস্থ, ছোট ও বড় সব খামারি। তাদের হাতে লালিত-পালিত পশুটি যাতে সুন্দর দেখায় এবং বাজারে এর প্রাপ্য দামটুকু পাওয়া যায় সেদিকে খেয়াল রাখছেন তারা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রেড চিটাগাং, শাহিওয়াল, নেপালি, ব্রাহামার মতো সুন্দর গরুর চাহিদাই বেশি চট্টগ্রামের কোরবানির পশুর হাটে। এ জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার চট্টগ্রামের খামারিদের মধ্য থেকে মোট গবাদি পশুর প্রাপ্যতা ধরা হয়েছে ৮ লাখ ৪২ হাজার ৩৫৯টি। এর মধ্যে ষাঁড় ৩ লাখ ৪৮ হাজার ২৭৬টি, বলদ ১ লাখ ৪০ হাজার ৩৫৫টি, গাভী ৩৭ হাজার ৮৪৪টি। মোট গরু ৫ লাখ ২৬ হাজার ৪৭৫টি। এছাড়া মহিষ ৭১ হাজার ৩৬৫টি, ছাগল ১ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৩টি, ভেড়া ৫৮ হাজার ৬৯২টি, অন্যান্য ৪৪টি। এবার কোরবানিতে চট্টগ্রামে পশু চাহিদা রয়েছে প্রায় ৮ লাখ ৭৯ হাজার ৭৬৫টি গবাদি পশুর। এ হিসাবে ঘাটতি প্রায় ৩৭ হাজার ৪০৬টি। ২০২৩ সালে চট্টগ্রামে কোরবানি হয়েছে ৮ লাখ ১৭ হাজার ১২৯টি পশু। স্থানীয়ভাবে পশুর জোগান দেওয়া হয়েছে ৮ লাখ ৪২ হাজার ১৬৫টি। এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম জানান, কোরবানির এখনো প্রায় দেড় মাস বাকি। এখনো অনেক খামারি গরু মোটাতাজা করার উদ্দেশ্যে সংগ্রহ করছেন। আমরা গৃহস্থ ও খামারিদের যেসব গরু কোরবানির বাজারে বিক্রির উপযোগী তার একটি সম্ভাব্য ডাটা সংগ্রহ করেছি। তাতে দেখা যাচ্ছে ৩৭ হাজারের মতো পশু কম রয়েছে। তবে আশার কথা হচ্ছে চট্টগ্রামের কোরবানির হাটে রেডকাউ, শাহিওয়ালের মতো সুন্দর গরুর চাহিদাই বেশি। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বেপারি ও খামারিরা এখানকার বড় বড় পশুর হাটগুলোতে গরু নিয়ে আসে। তাই সংকট হবে না। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ন্যায্য মূল্য পেলে খামারি ও গৃহস্থরা গরু পালনে উদ্বুদ্ধ হন। সরকারিভাবে গরুর কৃত্রিম প্রজনন, চিকিৎসা, পরামর্শ, উন্নতমানের ঘাস চাষে উদ্বুদ্ধ করাসহ খামার স্থাপনে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। এতে গবাদিপশু উৎপাদনে দেশে নীরব বিপ্লব চলছে। চট্টগ্রাম জেলা ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মিল্কভিটার পরিচালক নাজিম উদ্দিন হায়দার জানান, কর্ণফুলী উপজেলাতেই দেড় হাজার খামার রয়েছে। পুরো জেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ৪ লাখ খামার আছে। আশাকরি এবারও কোরবানির পশুর হাটে গবাদিপশুর সংকট হবে না। তিনি আরও বলেন, দুঃখের বিষয় হচ্ছে অত্যধিক গরমের কারণে অনেক গবাদিপশু খাবার খাচ্ছে না। হিট স্ট্রোকেও আক্রান্ত হচ্ছে। আবার বিদ্যুতের সংকটও প্রকট। গরুকে গোসল দেওয়ার পানির পাম্প চালানো, তাপমাত্রা সহনীয় রাখতে বৈদ্যুতিক পাখা চালানোর ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। গোখাদ্য বিশেষ করে সয়াবিন বাজারজাতকরণে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। চাক্তাই-আসাদগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে ভেজাল ডেইরি ফিড তৈরি করা হচ্ছে। এগুলোর বিরুদ্ধে আমরা প্রশাসনের অভিযান চাই। কৃষির মতো ডেইরি শিল্পের উদ্যোক্তাদের সুযোগ-সুবিধা ও ভর্তুকি বাড়ানোর দাবি জানাই। ফয়সাল নামে একজন উদ্যোক্তার সাথে কথা বলে জানা যায়, তার খামারে ৮০টি গরু, ২৫টি মহিষ, ১৩০টি ছাগল তিনি কোরবানি উপলক্ষ্যে লালন-পালন করছেন। গত বছরের কিছু পশু এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছেন। কিছু গত বছরের শেষের দিকে সংগ্রহ করেছেন। যদিওবা এ প্রচণ্ড গরমে পশুগুলো লালন-পালনে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু তিনি আশাবাদী, এ বছর কোরবানিতে পশু বিক্রি করে ভালো বাজার মূল্য পাবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত