অবৈধ কারেন্ট জালসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত অন্যান্য জালের ব্যবহার বন্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।
গতকাল দুপুরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ক্যাপ্টেন মাসুক হাসান আহমেদ অডিটোরিয়ামে সামুদ্রিক মৎস্য ব্যবস্থাপনায় সম্পৃক্ত অংশীজনের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। মো. আব্দুর রহমান বলেন, কোনোক্রমেই অবৈধ কারেন্ট জালসহ নিষিদ্ধঘোষিত অন্যান্য জাল ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। এসব জাল ব্যবহার করে মাছের ডিম পর্যন্ত তুলে ফেলা হচ্ছে এবং দেশের স্বার্থে, দেশের সম্পদ রক্ষার স্বার্থে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ উন্নয়নের স্বার্থে অবৈধ জালের বিস্তার অবশ্যই রোধ করতে হবে। তা করা না গেলে আমাদের কোনো পরিকল্পনাই কাজে আসবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সামুদ্রিক মৎস্য রক্ষার্থে কোনো অবস্থাতেই অবৈধ উপায়ে ও অবৈধ জাল ব্যবহার করা যাবে না বলে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। তিনি আইনগত ব্যবস্থার পাশাপাশি এটিকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। কারেন্ট জাল ব্যবহার করে মাছ ধরে ফেললে কোনো প্রযুক্তিই কাজে আসবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরার বিষয়ে যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তা যথাযথভাবে পালনের জন্য অংশীজনের প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, এ বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন নৌযান কর্তৃক সাগরে সব ধরনের মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ থাকবে। অংশীজনের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, মৎস্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হ্রদ, নদী ও সাগরের মাধ্যমে জীবন-জীবিকার উন্নয়নে যা কিছু করার প্রধান মন্ত্রীর নেতৃত্বে তার সব কিছুই করা হবে। তবে এটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আপনাদের।
মৎস্যমন্ত্রী আরো বলেন, সাগরে মাছ ধরার ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। তবে এসব সমস্যা সমাধানে মন্ত্রণালয় আন্তরিক রয়েছে বলে জানান তিনি। জাহাজের মালিকানা পরিবর্তনের বিষয়ে জটিলতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি এ জটিলতা নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান।
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, শেখ হাসিনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে এই দেশ গড়ে তোলা হবে। রাজনীতি যারা করে তাদের রাজনৈতিক আদর্শ থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের কথা চিন্তা না করে ১৬ কোটি মানুষের কথা চিন্তা করেন।
এর আগে সকালে চট্টগ্রামে মৎস্য অধিদপ্তরাধীন সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্টের আওতায় ১০তলা ভিতবিশিষ্ট সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তর ও ফিশারিজ সেন্টার অব এক্সসিলেন্স এবং বিএফডিসি অকশন শেড কাম ট্রেনিং সেন্টারের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী।
মৎস্যমন্ত্রী চট্টগ্রাম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রসহ মৎস্য-সংক্রান্ত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং সংশ্লিষ্টদের প্রতি তিনি এ সময় বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্টের পরিচালক মোঃ জিয়া হায়দার চৌধুরী। এছাড়া মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মোঃ আলমগীর, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশেনর চেয়ারম্যান সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা জান্নাত এ সময় উপস্থিত ছিলেন।