ঢাকা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব নিল শামসুল হক ফাউন্ডেশন

মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব নিল শামসুল হক ফাউন্ডেশন

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামক আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তারের পর নতুন করে চার দিনের রিমান্ডে আছেন। ওই আশ্রমে আশ্রিত শিশু, অসহায় বৃদ্ধ, ভারসাম্যহীন মানুষগুলোর দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছে আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন। এর কর্ণধার আমাদের কাছে এসেছিলেন। তিনি ওই আশ্রমে রেখেই আশ্রিতদের সেবা দেবেন।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে ডিবি প্রধান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমে বর্তমানে ৪৫ জন শিশু আছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার। শুনানির একপর্যায়ে তিনি বলেন, আশ্রমে বর্তমানে ৪৫টা বাচ্চা আছে। ডিবিকে বলেন, তাদের নিয়ে যেতে। ৫ মে তিন দিনের রিমান্ড শেষে মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির মিরপুর জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ কামাল হোসেন। এরপর তাকে মানবপাচার আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে ডিবি পুলিশ। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুব তাকে মানবপাচার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এছাড়া শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তারের আদালত তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালতে মিল্টন সমাদ্দারের আর্জির ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিবি প্রধান হারুন বলেন, আমরা মিল্টন সমাদ্দারকে নতুন মামলায় চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছি। তথাকথিত মানবতার ফেরিওয়ালা সেজে মানুষকে প্রতারিত করে বৃদ্ধ, অনাথ, মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন মানুষকে দেখিয়ে তিনি যে টাকা কামাচ্ছিলেন তা তার অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছিল। তিনি কিন্তু এসব টাকা ওই আশ্রিত মানুষের পেছনে খরচ করছিলেন না, চিকিৎসা দিচ্ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে আরো অনেক লোমহর্ষক তথ্য আমরা পেয়েছি। তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষ না করে কিছু বলা ঠিক হবে না। হারুন বলেন, আমরা একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে পেয়েছি। তিনি আমাদের এখানে এসেছিলেন। আমরা তাকে অনুরোধ করেছি। প্রতিষ্ঠানের নাম আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মিল্টন সমাদ্দারের ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামক আশ্রমের পুরো দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছেন। সব খরচ তিনি বহন করবেন। ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের আশ্রিত গরিব, অসহায় মানুষগুলোকে সেবা সেখানেই দেবে আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন। আপাতত এটা চলবে। পরে অন্য চিন্তাভাবনা করব।

মানবপাচার আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ চার দিনের রিমান্ডে থাকা মিল্টন সমাদ্দার জিজ্ঞাসাবাদে নতুন করে কী তথ্য পেলেন- জানতে চাইলে হারুন বলেন, যেসব তথ্য আমরা পেয়েছি, সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। সব অভিযোগেরই তদন্ত হবে। কোনোক্রমেই ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

মিল্টন সমাদ্দারকে মাদকসেবী বলছেন। মাদকসেবনের ব্যাপারে কী ধরনের তথ্য পেয়েছেন- জানতে চাইলে হারুন বলেন, তিনি যে মাদক সেবন করেন, ইয়াবা খান, সেটি তো তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। তার আশ্রমে যারা মারা গেছেন, তাদের ডেথ সার্টিফিকেট নিজেই দিতেন, ডাক্তারের সিল স্বাক্ষর জালিয়াতি করতেন। তাদের যে কোথায় কবর দেওয়া হলো! সে তথ্য কিন্তু তিনি আস্তে আস্তে স্বীকার করা শুরু করেছেন। তদন্ত শেষ হলে এ ব্যাপারে জানানো হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত