জেলেপাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে আনন্দ

পদ্মা-মেঘনায় মিলছে ইলিশ লাখ টাকা মণ

প্রকাশ : ১২ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শওকত আলী, চাঁদপুর

চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ইলিশের দেখা মিলতে শুরু করেছে। জেলেদের জালে এখন মাঝে মধ্যে রুপালি ইলিশ ধরা পড়ার খবর মিলছে। এতে করে জেলে ও জেলেপাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে আনন্দ পরিলক্ষিত হচ্ছে। তারা এখন আশার আলো দেখছে। তাদের মতে সামনে বৃষ্টি হলেই তাদের কাঙ্ক্ষিত ইলিশ আরো বেশি করে ধরা পড়বে। হরিণা মাছঘাটে ইলিশের মণ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ মাছঘাটে মেঘনার তাজা ইলিশ উঠতেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। চাঁদপুর সদরের মেঘনা উপকূলীয় অন্যতম হরিণা ফেরিঘাট সংলগ্ন মাছঘাটে খুবই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে রুপালি ইলিশ। এ হরিণা মাছঘাটে ৯০০ গ্রাম ওজনের প্রতিমণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ টাকায়।

পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশ কম এবং আমদানি না থাকায় বাজার দর এতো বেশি বলে জানিয়েছেন চাঁদপুরের ব্যবসায়ীরা। গতকাল বিকালে ওই ঘাটে কিছু সময় অবস্থান করে আড়তে আনা ইলিশের দাম জানা গেল। তবে এই ঘাটে সাধারণ ক্রেতার চাইতে খুচরা ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বেশি। তারা ঘাটের আড়ত থেকে তাজা ইলিশ কিনে শহরে এনে বিক্রি করে থাকে। এই মাছঘাটে দুটি সময় জেলেরা ইলিশ নিয়ে আড়তে আসেন। রাতে যারা মাছ ধরেন তারা নিয়ে আসেন সকালে এবং সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যারা মাছ ধরেন তারা নিয়ে আসেন বিকালের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এছাড়াও দিনজুড়েই আড়তগুলোতে কম-বেশি ইলিশসহ অন্যান্য মাছ বিক্রি হয়ে থাকে।

হরিণা মাছঘাটে গিয়ে দেখা যায়, তাজুল ইসলাম ছৈয়ালের আড়তে একজন জেলে নিয়ে আসেন বড় সাইজের তিনটি এবং ছোট সাইজের তিনটি ইলিশ। চাঁদপুর শহর থেকে আসা একজন খুচরা ব্যবসায়ী ছোট ৩টি ইলিশ (জাটকা সাইজ) কিনলেন ৮০০ টাকায়। আর মধ্যম সাইজের ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের ৩টি কিনলেন ৩ হাজার টাকায়। এই আড়তেই ৫০০ গ্রাম সাইজের একটি চিংড়ি বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকায়। পাশের আড়তে সকাল থেকে জমিয়ে রাখা ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২ হাজার ৫০০ টাকায়। একজন ক্রেতা ৪টি ইলিশ কিনলেন ৯ হাজার ৪০০ টাকায়।

এখানে আসা বিল্লাল হোসেন নামের মাছ ব্যবসায়ী বলেন, আজকে ছোট সাইজের ইলিশ প্রতিহালি বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকা দরে। বড় সাইজেরগুলো কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। বড় সাইজের পোয়া মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। নদীতে মাছ থাকলে প্রতিদিন এই আড়তে ১০ থেকে ১৫ মণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে।

এই আড়তের প্রবীণ মাছ ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম ছৈয়াল বলেন, নদীতে মাছ খুবই কম। আমদানি কম হলে ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো যায় না। যে কারণে দাম এখন খুবই চড়া। বছরের সবচাইতে বেশি দামে এখন ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। তবে এই আড়তের ইলিশ তাজা। বরফ ছাড়াও ক্রেতাদের নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

সিরাজুল ইসলাম ছৈয়াল আরো বলেন, সামনে বর্ষা মৌসুম আসন্ন। এখন নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। নদীতে পানি আরো বাড়লে ও বৃষ্টি হলে ইলিশসহ বিভিন্ন মাছের আমদানি হবে বলে আশা করা যায়।