ঢাকা ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অন্যরকম

ভারতে বিক্রি হচ্ছে গাধার দুধ

ভারতে বিক্রি হচ্ছে গাধার দুধ

মাল বহনের জন্য বিশ্বে গাধা ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। গাধা নামটি শুনলে আমাদের মাথায় আসে অবলা প্রাণীর কথা যেটিকে দিয়ে করানো যায় হাড়ভাঙা খাটুনি, বহন করানো যায় ভারী মালামাল। গাধা যে দুধ দেয় এবং সেই দুধ যে বিক্রি করা যায়, সে কথা ক’জনের মাথায় আসে?

তবে সবার চেয়ে আলাদা ভারতের গুজরাটের যুবক ধিরেন সোলাঙ্কি। তিনি তার গ্রামে ৪২টি গাধা নিয়ে তৈরি করেছেন একটি খামার। এই খামারে উৎপাদিত গাধার দুধ বিক্রি করে তিনি মাসে ২ থেকে ৩ লাখ রুপি আয় করছেন। তার খামারের দুধ যায় মূলত দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যতে। তিনি গাধার প্রতি লিটার দুধ বিক্রি করেন ৫ থেকে ৭ হাজার রুপিতে, যেখানে ১ লিটার গরুর দুধের দাম মাত্র ৬৫ রুপি। গাধার খামার প্রতিষ্ঠা এবং সেগুলোর দুধ বিক্রির শুরুটা কীভাবে হয়েছিল, সেই কথা জানিয়েছেন ধিরেন সোলাঙ্কি। তিনি বলেছেন, ‘আমি সরকারি চাকরি খুঁজছিলাম। আমি কিছু বেসরকারি চাকরিও পেয়েছিলাম। তবে সেখান থেকে পাওয়া বেতনে আমার পরিবার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছিল। আমি দক্ষিণ ভারতে গাধা পালন সম্পর্কে জানতে পেরেছিলাম। আমি কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করি এবং ৮ মাস আগে খামারটি প্রতিষ্ঠা করি। আমি ২২ লাখ রুপি খরচ করে ২০টি গাধা নিয়ে খামার শুরু করি।’

তিনি আরো বলেন, ‘শুরুটা কঠিন ছিল। গুজরাটে গাধার দুধের কোনো চাহিদাই নেই। প্রথম পাঁচ মাসে আমার কোনো আয় হয়নি।’ এই যুবক জানিয়েছেন, পরবর্তীতে তিনি দক্ষিণাঞ্চলের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বর্তমানে তিনি কর্ণাটক এবং কেরালাতে গাধার দুধ সরবরাহ করছেন। আর তার ক্রেতা হলো কসমেটিকস কোম্পানি। এসব কোম্পানি তাদের কসমেটিকসে গাধার দুধ ব্যবহার করে। গাধার দুধ ফ্রিজারে সংরক্ষণ করা হয় যেন এটি ফ্রেশ থাকে। দুধগুলো প্রথমে শুকানো হয় এরপর পাউডারে (গুঁড়া) রূপান্তরিত করা হয়।

গাধার ১ লিটার গুঁড়া দুধের দাম ১ লাখ রুপিও ছাড়ায়। গাধার দুধের উপকারিতা : প্রাচীন আমলে গাধার দুধ অনেক ব্যবহৃত হত। কেউ কেউ বলে থাকেন মিসরের রানী ক্লিওপেট্রা গাধার দুধ দিয়ে গোসল করতেন। গ্রিক ফিজিশিয়ান হিপোক্রেটস, যাকে ওষুধের জনক হিসেবে বলা হয়, তিনি লিভারসহ বিভিন্ন সমস্যার জন্য গাধার দুধ খেতে বলতেন। গাধার দুধের বিভিন্ন উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও আধুনিক বিশ্বে এটির ব্যবহার কমে গেছে।

যদিও সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞানীরা আবারও এ দুধ নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। তবে উচ্চমূল্যের কারণে সাধারণ মানুষের গাধার দুধের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই। বিজ্ঞানীদের তথ্য অনুযায়ী, গাধার দুধের গঠন অনেকটা মানুষের দুধের মতো। ফলে এটি ছোট্ট শিশুদের গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে খাওয়ানো যায়। বিশেষ করে যাদের গরুর দুধের কারণে অ্যালার্জি হয়। এছাড়া রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ডায়বেটিসের জন্যও গাধার দুধ উপকারী।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত