যুদ্ধ শেষে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী হবে এ নিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে একটি ‘পরিকল্পনা’ দেওয়ার চ্যালেঞ্জ করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। গত বুধবার টেলিভিশনে দেওয়া একটি বিবৃতিতে এই চ্যালেঞ্জ করেছেন তিনি। গাজায় যেকোনো ধরনের দীর্ঘমেয়াদি সামরিক কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করে আসছেন গ্যালান্ট। তার এমন চ্যালেঞ্জকে সমর্থন জানিয়েছেন দেশটির যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য বেনি গান্তজও। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তবে তিনি গ্যালান্টের নাম উল্লেখ না করে ইঙ্গিতে বলেছেন, গাজায় ৮ মাস ধরে চলা সংঘাতে এখনও হামাসকে ধ্বংস করতে না পারায় অজুহাতে তৈরি করছেন অবসরপ্রাপ্ত এডমিরাল। তবে নেতানিয়াহুর এমন মন্তব্যে সন্তুষ্ট হতে পারেননি দেশটির যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার মন্ত্রী ও মধ্যপন্থি সাবেক জেনারেল বেনি গান্তজও। তিনি গ্যালান্টের পক্ষ নিয়ে বলেছেন, ‘প্রতিরক্ষামন্ত্রী সত্য কথাই বলেছেন।’
গ্যালান্ট বলেছিলেন, হামাসকে পরাজিত করার এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে ৭ অক্টোবর জিম্মি হওয়া ইসরায়েলিদের পুনরুদ্ধার করার যে লক্ষ্য নেতানিয়াহু সরকার নিয়েছে, সেগুলো পূরণ করতে হলে গাজায় অবশ্যই একটি বিকল্প ফিলিস্তিনি শাসনের ভিত্তি স্থাপন করতে হবে।
তিনি আরো বলেছেন, ‘আমাদের অবশ্যই গাজায় হামাসের শাসনক্ষমতা ভেঙে দিতে হবে। আর তা করতে হলে আমাদের সামরিক পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সেখানে হামাসের বিকল্প একটি শাসক প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
এরকম কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া গেলে তাদের হাতে দুটি বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তবে সেগুলো যে ইতিবাচক নয় তা উল্লেখ করতে ভুলেননি তিনি। গ্যালান্ট বলেছেন, ‘এই ধরনের বিকল্প না থাকলে সেখানে নেতিবাচক দুটি বিকল্প অবশিষ্ট থাকবে: হয় গাজায় হামাসের শাসন, নতুবা গাজায় ইসরায়েলি সামরিক শাসন।’ তবে তিনি উল্লেখিত উভয় বিকল্পেরই বিরোধিতা করেন গ্যালান্ট। যুদ্ধ শেষে গাজায় হামাস কিংবা ইসরায়েলি সামরিক শাসন, এর কোনোটিই দেখতে চান না তিনি। নেতানিয়াহুকে আনুষ্ঠানিকভাবে এরকম কোনো পরিকল্পনা ত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী। গ্যালান্ট বলেছেন, অক্টোবরে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকেই হামাসের বিকল্প হিসেবে ‘শত্রু নয় এমন একটি ফিলিস্তিনি শাসক’ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা প্রচারের চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তবে এ বিষয়ে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা থেকে কোনো প্রকার প্রতিক্রিয়া পাননি।