ছিল কাঠফাটা রোদ; অতি তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল জনজীবন। তাপমাত্রার পারদ উঠেছিল ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দেশের বৃহদাংশ ছিল উত্তপ্ত চুল্লির মতো। প্রাণ-প্রকৃতিতে যখন নাভিশ্বাস উঠেছিল; ঠিক তখনই স্বস্তি নিয়ে আসে বৃষ্টি। এরপর কয়েকদিন ছিল ঝড়বৃষ্টির কবলে। কোথাও কোথাও হয়েছে শিলাবৃষ্টিও। হয়েছে কালবৈশাখি ঝড়। এতেই কমেছিল তাপমাত্রা। স্বস্তি ফিরেছিল জনজীবনে। তবে এই অবস্থা এখন শুধুই অতীত। বৃষ্টির দেখা মিলছে না গত পরশু, অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে। দেশের কোথাও কোথাও শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, গতকাল পর্যন্ত ৪২ জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে তাপপ্রবাহ। যা অব্যাহত থাকবে আরও কিছুদিন। তবে এই সময়ে তাপপ্রবাহের বিস্তৃতি বাড়বে আরও কিছু জেলায়। সংস্থাটি বলছে, তাপপ্রবাহের এই সময়ে জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে। একই সঙ্গে সারা দেশের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। এর মধ্যেই বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য দুঃসংবাদ দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া অফিস। সংস্থাটি বলছে- বঙ্গোপসাগরে এরইমধ্যে শক্তিশালী একটি ঘূর্ণিঝড়ের আদর্শ পরিবেশ তৈরি হয়েছে। যা চলতি মাসের শেষের দিকে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি এরইমধ্যে শক্তি সঞ্চার করছে। আগামী ২০ মে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে। সেটি সোজা উত্তর দিকে শক্তিবৃদ্ধি করবে। ২৪ মে এটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে। ২৫ মে সন্ধ্যার পর ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসতে পারে।
হিন্দুস্তান টাইমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টির নাম রেমাল। এর নামকরণ করেছে ওমান। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, রেমালও আম্ফানের মতো বিধ্বংসী হতে পারে। তবে এটির শক্তি কতটুকু; শেষ পর্যন্ত সুপার সাইক্লোনে রূপ নেবে কি না, তা জানতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২১ মে প্রবল শক্তি নিয়ে দেশের উপকূলে আঘাত হানে আয়লা। সে সময় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় দেশের কৃষকদের। ২০২০ সালের ২০ মে দেশের উপকূলে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। তবে সুন্দরবনের কারণে রক্ষা পাওয়া গেছে সে যাত্রায়। এবার সেই আয়লা-আম্ফানের মাসেই ধেয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমালের।