দেশের অন্যান্য জেলায় গাছ থেকে আম নামানোর সময়সীমা বেঁধে দেয়া হলেও আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে থাকছে না কোনো সময়সীমা। ফলে যখন পাকবে তখনই বাজারে নামবে এই জেলার সুস্বাদু ও সুমিষ্ট আম। এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খাঁন। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ম্যাংগো ক্যালেন্ডার প্রণয়ন ও বাজারজাত বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই মতবিমিয় আয়োজন করেন জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খাঁন বলেন, আম চাষি-বাগানি আর কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবারের মৌসুমে গাছ থেকে আম নামানোর নির্দিষ্ট কোন সময় বেঁধে দেওয়া হচ্ছে না। গাছে আম পাকলেই বাজারজাত করতে পারবেন চাষিরা। তবে অপরিপক্ব আম বাজারজাত করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সদর উপজেলার পুরাতন বাজার, শিবগঞ্জের কানসাট, ভোলাহাট ও রহনপুনের আম বাজারের সকল সিন্ডিকেটের বিপক্ষে কাজ করবে জেলা প্রশাসন। আম চাষিদের জিম্মি করে মধ্যস্থতাকারী লাভবান না হয় সেদিকে খেয়াল করা হবে। বাজার মনিটরিং করতে জেলা প্রশাসনের একটি টিম মাঠে কাজ করবে। আম চাষি ও বাগান মালিকরা মতবিনিময় সভায় বলেছেন, আবহাওয়ার কারণে এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের মুকুল ও ফলন কম। তারপরেও তীব্র তাপপ্রবাহে ঝরে পড়েছে অনেক আমের গুটি। কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি হওয়ায় আমের গুটি ঝরা অনেক রোধ হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন ৩০-৪০ শতাংশ গাছে আম আছে। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে পাকা আম বাজারে নামতে শুরু করবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পলাশ সরকার বলেন, এবার আমের জন্য অফ ইয়ার বা কম ফলনের বছর। ফলে আমের উৎপাদন কম হলে, দামও বাড়বে। এই বছর আম চাষিরা কাঙ্ক্ষিত দামে আম বিক্রি করতে পারবেন বলে আমরা আশাবাদী।
তিনি আরও বলেন, ম্যাংগো ক্যালেন্ডার না দেওয়াই ভালো। কারণ আবহাওয়ার কারণে বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের আগে যদি আম পেকে যায় তাহলে চাষিরা বাজারে আম বিক্রি করতে হিমশিম খাবে।
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহবুব-উল ইসলাম, আম গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোখলেসুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক, শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীমসহ অন্যরা।
উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবছর ৩৭ হাজার ৬০৪ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিকটন। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৫ হাজার মেট্রিকটন বেশি।