ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাজধানীর বাজারদর

ডিমের হালি ৫৫ টাকা কমেনি সবজির দামও

ডিমের হালি ৫৫ টাকা কমেনি সবজির দামও

বাজারে ডিমের হালি হাফ সেঞ্চুরি ছুঁয়েছে। পাড়া-মহল্লার দোকানেও ৫৫ টাকা হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৫ টাকা, আর দুই সপ্তাহ আগে ৪০ টাকা। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি হালি ডিমের দাম ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। কমেনি সবজির দামও।

এখন মাছ-মাংসের দাম বেশি, এমন সময় নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের ভরসা ডিম। তবে এই পণ্যের দাম হঠাৎ করে অস্থির হয়ে যাওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করছেন অনেকে। ক্রেতারা জানান মাছ-মাংস কেনা সামর্থ্য না থাকায় ডিম রান্না করে দিলে সন্তানরা খুশি হতো। তবে এখন সেটাও কিনতে কষ্ট হচ্ছে।

তবে ডিম বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ডিমের উৎপাদনে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। কয়েকদিন আগেও প্রচণ্ড গরমের কারণে খামারে অনেক মুরগি মারা গেছে। ফলে বাজারে ডিমের সরবরাহ হুট করে কমে গেছে। ঢাকায় ডিমের বড় দুটি পাইকারি বাজার আছে। এর একটি কারওয়ান বাজারসংলগ্ন তেজগাঁও রেলস্টেশন পাইকারি ডিমের বাজার। অন্যটি পুরান ঢাকার কাপ্তানবাজার। এই দুই বাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন পাইকারিতে ১০০ বাদামি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১৮০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। তবে প্রান্তিক খামারিরা ডিমের দাম কমা বাড়া নিয়ে তেজগাঁও আড়তমালিকদের সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন। তারা বলছেন, কিছুদিন আগে ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমিয়ে দেন আড়তমালিকরা। যে সময় সারাদেশে ডিম হিমাগারে মজুত হয়েছে। এখন দাম বাড়িয়ে তারা মুনাফা করছে।

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার জানান সারাদেশে মেসেজের মাধ্যমে তারা (তেজগাঁও আড়তমালিকরা) ডিমের দাম নির্ধারণ করে। হুট করে তারা দাম কমিয়ে দিয়ে খামারিদের থেকে ডিম নিয়ে হিমাগারে সংরক্ষণ করে, এরপর আবার দাম বাড়িয়ে এ সিন্ডিকেট মুনাফা লুটছে।

তিনি বলেন, ঢাকার আড়তগুলোতে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ লাখ ডিম বিক্রি হলেও তারা সারাদেশে বিক্রিত ৪ কোটি ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে। প্রতিদিন তারা মেসেজ দিয়ে বাজারদর জানিয়ে দেয় সারাদেশে থাকা আড়তদারদের। তারা এখন ডিমের বাজারে সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেট।

এদিকে, বাজারে সবজির চড়া দাম প্রায় তিন-চার সপ্তাহ ধরে। এক কেজি বেগুনের দাম এখন ১০০ থেকে ১২০ টাকা। কাকরোল-বরবটিরও এমন দর। এমনকি সস্তা দামে পরিচিত পেঁপের কেজিও এখন ৮০ টাকা।

সবজির বাজার ছাড়াও বাড়তি উত্তাপ দেখা গেছে সব ধরনের মাছ, সোনালি মুরগি, পেঁয়াজ, আদা, রসুনের দামে। অন্যান্য পণ্যও চড়াদামে আটকে রয়েছে। এছাড়া প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে পেঁয়াজের দাম নতুন করে বাড়তে দেখা গেছে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকা, যা আগের চেয়ে ৫ টাকা বেশি। এছাড়া আদা কিংবা রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকার নিচে মিলছে না।

অন্যদিকে, ব্রয়লার মুরগির দামে ততটা হেরফের না হলেও সোনালি মুরগির দাম বেশ বেড়েছে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৪২০ টাকা। যা দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ৮০ টাকা বেশি। তবে ব্রয়লার ২২০-২৩০ টাকার মধ্যে কেনা যাচ্ছে।

এছাড়া বাজারে দুই সপ্তাহ ধরে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে মাছের দাম। ক্রেতারা মাছ কিনতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। নদী ও হাওরের মাছ সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে অনেক আগেই। চাষের মাছও এখন বেশ চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে।

মাছ বিক্রেতারা বলছেন ১ মাস আগের চেয়ে মাছ কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। এতে আমাদের বেচাকেনা কমেছে। ব্যবসা করা কঠিন হয়ে গেছে। আড়তে মাছ নাই। যা পাই চড়া দাম। কাস্টমার নিচ্ছে না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত