কক্সবাজারে চুরির অপবাদে দুই জেলেকে হত্যা
প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার
কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলে ‘চুরির অপবাদে’ দুই জেলেকে ধরে নিয়ে রাতভর প্রহারের পর এবং বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বেলা ১২টায় সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্প সংলগ্ন মনুপাড়ায় ঘেরের কিনার থেকে মরদেহ দুইটি উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মছিউর রহমান।
নিহতরা হলেন, কক্সবাজার সদরের খুরুশকূল ইউনিয়নের মনুপাড়ার বাসিন্দা জামাল হোসেনের ছেলে আব্দুল খালেক (২২) এবং একই এলাকার আবু তাহেরের ছেলে মো. ইয়াছিন আরাফাত (২৪)। নিহত দুইজনই পেশায় জেলে।
স্থানীয়দের বরাতে মছিউর রহমান বলেন, সকালে সদরের খুরুশকূল ইউনিয়নের মনুপাড়ায় জনৈক শামশুল হুদার মৎস্য ঘেরের পাশে দুই ব্যক্তির মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৎস্য ঘেরের বাঁধের উপর উপুড় অবস্থায় দুইজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতদের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন না থাকলেও বৈদ্যুতিক শকের মতো পোড়া ক্ষত রয়েছে। প্রাথমিকভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করলেও প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ খোঁজখবর নিচ্ছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
খুরুশকূল ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান ছিদ্দিকী বলেন, সকালে স্থানীয়দের কাছ থেকে মনুপাড়াস্থ মৎস্য ঘেরের পাশে দুই যুবকের মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পৌঁছেন। পরে তিনি বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন। কি কারণে মৃত্যু হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও নিহতদের শরীরে বৈদ্যুতিক শকের চিহ্ন রয়েছে বলে চেয়ারম্যানও নিশ্চিত করেন।
নিহত ইয়াছিনের বাবা আবু তাহের বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে তার ছেলেকে বাড়ি ডেকে নেন স্থানীয় কাজল মেম্বার ও শামসু মেম্বারের ছেলে ইমতিয়াজ। ধারণা করছি, তাদের মনুপাড়াস্থ মৎস্য ঘেরে নিয়ে চুরির অপবাদে পিটিয়ে এবং বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার পর মরদেহ পাশে ফেলে দেয়।
আব্দুল খালেকের বাবা জামাল হোসেন একই কথা উল্লেখ করে বলেন, আমার ছেলেসহ দুজনই জেলে। তাদের ধরে নিয়ে মারধর করে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার পর প্রভাবশালীরা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন।
নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আটক দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সম্পর্কে জানান চেষ্টা করছেন বলেও উল্লেখ করেন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মছিউর রহমান।
এদিকে, হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি প্রচার পাবার পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আরো বড় কোনো অঘটন ঘটার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।