সুসংবাদ প্রতিদিন
শ্রীপুরে লিচুর বাম্পার ফলন
প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
জ্যৈষ্ঠ মাস শুরু হয়েছে। এ মাসকে বলা হয় মধুমাস। এই মাসে বিভিন্ন রকমের ফলের মৌ মৌ গন্ধে মোহিত থাকে চারপাশ। বছরজুড়ে অন্যান্য ফলের মধ্যে লিচু অন্যতম। গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় মধুমাসের মধু ফল চায়না-৩ জাতের লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষিদের মুখেও ফুটেছে হাসি। শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এখন লিচু ঘিরেই চলছে ব্যস্ততা। এ যেন লিচুর উৎসব। চায়না-৩ জাতসহ অন্যান্য জাতের লিচুর ফলন বেশি হওয়ায় এ উপজেলার লিচু চাষিদের মুখে ফুটেছে হাসি। বাদুড়ের কবল থেকে লিচু রক্ষায় রাত জেগে পাহারা দেওয়া, দিনে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গাছ থেকে লিচু নামানো ও থোকা বাঁধার পর তা গাড়িতে করে স্থানীয় বাজারে নিয়ে যাওয়া; লিচুকে ঘিরে এভাবেই ব্যস্ত রয়েছেন এ উপজেলার সাধারণ মানুষ। উঁচু চালা জমি সমৃদ্ধ শ্রীপুরের রসালো লিচুর কদর রয়েছে দেশজুড়েই। উপজেলাজুড়ে প্রায় ১২ হাজার কৃষক এই লিচুকে ঘিরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকেন। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় এই উপজেলায় চায়না-৩ জাতসহ অন্যান্য লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। এই জ্যৈষ্ঠ মাসজুড়েই এখন লিচুকে ঘিরেই গায়ের কৃষাণ-কৃষাণীরা ব্যস্ত। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য মতে, সবচেয়ে বেশি লিচুর আবাদ হয় শ্রীপুর উপজেলায়। স্বাদের দিক দিয়ে শ্রীপুরের লিচুর ভিন্নতা থাকায় এর চাহিদাও বেশি। এবার শ্রীপুর উপজেলায় ৭৩০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ করা হয়েছে। চলতি বছর লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮৬০ মেট্রিক টন। এদিকে প্রতিনিয়ত শ্রীপুরের লিচুর চাহিদা বাড়ায় প্রতি বছরই এ উপজেলাজুড়ে সম্প্রসারণ হচ্ছে লিচু চাষ। এ লিচু চাষে কৃষকের রুচির ভিন্নতার সাথে জাতেরও পরিবর্তন হয়। এখানে আবাদ হচ্ছে চায়না-৩, বোম্বাই ও পাতি লিচু।
উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ী গ্রামের লিচু চাষি সুমন মৃধা বলেন, এবার লিচু গাছে মুকুল আসার পর প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়ায় লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। দামও বেশি পাওয়ার আশা করছি। সুমন মৃধা চায়না-৩ জাতের লিচু গাছ লাগিয়েছেন। তার চায়না-৩ জাতসহ অন্যান্য ৩০টি লিচু গাছ রয়েছে। তিনি গত বছর লিচু বিক্রি করেছিলেন আড়াই লাখ টাকার। এবার আশা করছেন লিচু বিক্রি করবেন ৪ লাখ টাকার। উপজেলার কেওয়া পূর্ব খণ্ড গ্রামের মাসুদ মিয়া বলেন, ফলনের দিক দিয়ে এবার লিচুর দারুণ ফলন হয়েছে। বাগানে উৎপাদিত লিচু কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য নিয়ে যান স্থানীয় বাজারগুলোতে। ভালো দাম পাওয়ার আশায় অনেকেই চলে যান রাজধানীতে। জ্যৈষ্ঠ মাস পুরোটা সময়ই লিচু পাওয়া যায়। এবার অন্যান্য সময়ের চেয়ে ভালো ফলন ও দাম পাওয়া যাচ্ছে।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, ‘আমরা কয়েক বছর ধরে স্থানীয় কৃষকদের লিচু চাষ ও সম্প্রসারণে উদ্বুদ্ধ করায় প্রতিনিয়ত বাণিজ্যিকভাবে বাড়ছে লিচু চাষ। এবার উপজেলাজুড়ে তীব্র দাবদাহ থাকার পরও লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। মাঝখানে কিছুদিন দাবদাহ থাকায় লিচু ফেটে নষ্ট হওয়া এবং ঝড়ে পড়ে যাওয়ার পরও গত বছরের তুলনায় উৎপাদন ভালো ফলন হয়েছে। সব মিলিয়ে কৃষকদের উৎপাদন পুষিয়ে যাবে। তাছাড়া ভোক্তা পর্যন্ত বিষমুক্ত লিচু পৌঁছার ব্যাপারে আমরা প্রথম থেকেই নজরদারি করেছি এবং করে যাব।’