ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

১২ কোটি টাকা ব্যয়েও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত পরিবহণসেবা

প্রকাশ : ২০ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ইবি প্রতিনিধি

শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রশাসন বার্ষিক বাজেটের বড় একটি অংশ ব্যয় করে পরিবহন খাতে। তবুও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত পরিবহন সেবা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন খাতে বার্ষিক ১১ থেকে ১২ কোটি টাকা ব্যয় হলেও পরিবহন সেবা নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আনা-নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলে ছোট বড় মিলিয়ে মোট ৪৬টি বাস রয়েছে। এরই মধ্যে নিয়মিত চলাচল করে ৪৩টি। বাকি তিনটি মেরামতের জন্য গ্যারেজে আছে। এর মধ্যে পরিবহন প্রশাসন দিনে ট্রিপ হিসেবে ভাড়া করে বাস চালায় ৩২টি।

ভাড়া বাসে কুষ্টিয়া রুটে ট্রিপ প্রতি ২ হাজার ১৫০ টাকা ও ঝিনাইদহে রুটে প্রতি ট্রিপে মালিক পক্ষকে দিতে হয় ২ হাজার ৬৫০ টাকা। ভাড়া বাসের ট্রিপ প্রতি ভাড়া ও ক্যাম্পাসের নিজস্ব বাসের তেল ও মেরামত খরচ বাবদ পরিবহণ দপ্তরের বার্ষিক ব্যয় ১১ থেকে ১২ কোটি টাকা। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে পরিবহণ দপ্তরের মোট ব্যয় হয়েছিল ১১ কোটি ৬২ লাখ ৯২ হাজার ৫৮৩ টাকা এবং চলমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসের পরিবহন দপ্তরের মোট ব্যয় ৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৮ হাজার ২৩৩ টাকা। অভিযোগ রয়েছে বিপুল অর্থ ব্যয়েও কাঙ্খিত পরিবহণসেবা পাচ্ছে না সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন রুটে শিক্ষার্থীর তুলনায় বাসের ট্রিপ কম দেয়া, ফিটনেসবিহীন ভাড়া বাস ব্যবহার ও শিক্ষার্থীদের সাথে বাসের ড্রাইভার ও হেল্পারদের অসদাচরণসহ নানা অভিযোগ। এদিকে প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লেও সে তুলনায় বাড়েনি পরিবহনে গাড়ির বহর। ফলে গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।এদিকে তুলনামূলকভাবে ভালো বাসগুলো শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য এবং ফিটনেসবিহীন ভাড়া বাসগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। ফিটনেসবিহীন বাস যেকোনো সময়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে বলে অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের। ক্যাম্পাস থেকে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ শহরের দূরত্ব যথাক্রমে ২৪ ও ২২ কিলোমিটার হওয়ায় যাতায়াতে সময় লাগে প্রায় ১ ঘণ্টা। এসব ফিটনেসবিহীন বাসে প্রতিদিন চলাচল করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া করা বাসগুলোতে বসার সিট ভাঙা, গ্লাস ভাঙা ও বিভিন্ন স্থান ভাঙা থাকাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাজিদুল ইসলাম উজ্জ্বল বলেন, নিজস্ব বাসে চলাচলে কোনো ঝামেলা হয় না। কিন্তু ভাড়ায়চালিত বাসগুলোর চালক ও তার সহকারীরা আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পথে থামিয়ে বাইরের যাত্রী ওঠান। অনেক সময় শিক্ষার্থীদের রেখে চলে আসেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, পরিবহন সেক্টরটা ডেলে সাজানোর জন্য একটা বড় বাজেটের দরকার। সরকার যদি কখনো বড় বাজেট দেয়, তাহলে সব সমস্যা মিটানো যাবে। শিক্ষার্থীরা ভাড়ায়চালিত বাসের বিরুদ্ধে যে কোনো অভিযোগ দিলে আমরা সাথে সাথে সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেই।