চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে নগরীর প্রথম আন্ডারপাস হচ্ছে
প্রকাশ : ২৩ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
তামীম রহমান, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট মোড়ে নগরীর প্রথম আন্ডারপাস নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) আনুমানিক ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নাগরিক যাতায়াতের সুবিধা মাথায় রেখে এমন ঘোষণা দেয়। প্রায় ছয় মাস সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর নকশা প্রণয়ন করে দরপত্র আহ্বান করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। সিটি করপোরেশন থেকে প্রাথমিকভাবে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের চিন্তা করা হলেও সেখানে ফ্লাইওভারের উচ্চতা কম হওয়ায় আন্ডারপাস নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, বহদ্দারহাট খুব গুরুত্বপূর্ণ মোড়। প্রতিদিন প্রচুর মানুষের জমায়েত হয় সেখানে। তো প্রচুর গাড়িও আসা-যাওয়া করে। তাই লোকজন রাস্তা পারাপার করে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে। লোকজন স্বাচ্ছন্দ্যে ও নির্ভয়ে রাস্তা পার হতে পারে না। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। মানুষ যাতে খুব সহজে রাস্তা পার হতে পারে, তাই আন্ডারপাস নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, বাস্তবায়ন হতে যাওয়া আন্ডারপাসে কিছু হকারকেও বসার ব্যবস্থা করা হবে। দীর্ঘ প্রায় ছয় মাস সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে এর নকশা প্রণয়ণের কাজ শেষ হয়েছে। আন্ডারপাসের নকশা প্রণয়নে কাজ করেছে ‘ডিজাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট লিমিটেড (ডিপিএম)’। চসিকের তথ্য মতে, নগরীর অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক বহাদ্দারহাট এলাকায় প্রতি ঘণ্টায় ১ হাজারেরও বেশি মানুষ রাস্তা পারাপার হন। চারিদিকে সংযোগ সড়ক থাকায় এই মোড়ে গাড়ির চাপও থাকে বেশি। ফলে সড়ক পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। আন্ডারপাসটির দুটি প্রবেশ পথ থাকবে; বহদ্দারহাট পুলিশ বক্সের সামনে একটি এবং আরাকান রোডের উত্তর পাশে অন্যটি। ৪১ দশমিক ২ মিটার দীর্ঘ এবং ১০ মিটার প্রশস্ত আন্ডারপাসটির উচ্চতা হবে ৪ মিটার। দুই প্রবেশ মুখে একটি করে দুটি সিঁড়ি এবং একটি করে দুটি স্কেলেটরও (চলন্ত সিঁড়ি) থাকবে। আন্ডারপাসের দুই পাশে মোট ২০টি দোকান নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি দোকানের জন্য আন্ডারপাসের ২ দশমিক ৭৫ মিটার জায়গা লাগবে। মাঝখানে সাড়ে ৪ মিটার (প্রায় ১৫ ফুট) জায়গা থাকবে মানুষের হাঁটার জন্য। আরাকান সড়কের নিচ দিয়ে পথচারী পারাপারের জন্য ৪১ দশমিক ২ মিটার দৈর্ঘের আন্ডারপাস নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এটি হবে চট্টগ্রামের প্রথম আন্ডারপাস। পাশাপাশি দেশের প্রথম স্কেলেটরযুক্ত আন্ডারপাস। প্রকল্পের নথি অনুসারে, আন্ডারপাসটির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ কোটি টাকা। বহদ্দারহাট পুলিশ বক্সের সামনে থেকে আরাকান সড়কের উত্তর পাশে আন্ডারপাসের মধ্য দিয়ে চলাফেরা করা যাবে। আন্ডারপাসটি হবে ৪১ দশমিক ২ মিটার দীর্ঘ এবং ১০ মিটার প্রশস্ত। এর উচ্চতা ৪ মিটার। দুই প্রবেশ মুখে একটি করে দুইটি সিঁড়ি থাকবে। থাকবে একটি করে দুইটি স্কেলেটরও (চলন্ত সিঁড়ি)। আন্ডারপাসের ভেতর হকার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে দুই পাশে ১০টি করে ২০টি দোকান নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি দোকানের জন্য আন্ডারপাসের ২ দশমিক ৭৫ মিটার জায়গা লাগবে। এসব দোকান বাদ দিলে মাঝখানে সাড়ে ৪ মিটার বা প্রায় ১৫ ফুট জায়গা থাকবে মানুষের হাঁটার জন্য। ডিপিএম’র প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, বহদ্দারহাট মোড়ে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ১ হাজারের বেশি লোক রাস্তা পারাপার করেন। কয়েকটি সড়কের সংযোগ থাকায় এ মোড়ে গাড়ির চাপও থাকে বেশি। ফলে রাস্তা পারাপারকারীদের সবসময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। মহিলা, শিশু এবং বয়স্কদের এ ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনায় পথচারীদের আহত হওয়ারও খবর রয়েছে। এ অবস্থায় আন্ডারপাস নির্মাণ হলে দুর্ঘটনা এড়িয়ে নির্বিঘ্নে রাস্তা পারাপার করতে পারবেন পথচারীরা। প্রতিষ্ঠানটির প্রকৌশলী মোজাফ্ফর আলী মামুন জানান, নির্মিত হতে যাওয়া আন্ডারপাসে শুধু মানুষ পারাপার হবে। আমরা যে স্টাডি করেছি তাতে দেখেছি প্রতি ঘণ্টায় গড়ে হাজারের বেশি লোক রাস্তা পারাপার করে বহদ্দারহাটে। পিক আওয়ারে সেটি আরো বেশি। বিপুলসংখ্যক যে মানুষ রাস্তা পার হন, তাদের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। আন্ডারপাস হলে সেটি আর থাকবে না। আধুনিক সব সুবিধা থাকবে আন্ডারপাসে। রাস্তা পার হতে গিয়ে বয়স্ক এবং অসুস্থদের সমস্যা হয়। স্কেলেটর থাকায় সে সমস্যাও হবে না। বহদ্দারহাটের জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আন্ডারপাসে যেন পানি প্রবেশ না করে, সেভাবেই ডিজাইন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে দুই প্রবেশমুখে ক্যানোপি থাকবে। ক্যানোপির ফলে পানি ঢুকতে পারবে না। এটা ফ্ল্যাড লেবেল থেকে অনেক উঁচু হবে। মূল সড়কের পাশে যে ফুটপাত, তার চেয়ে আরো দুই ফুট উঁচু হবে সেটি। এরপরও যদি কোনো কারণে পানি প্রবেশ করে, তা নিষ্কাশনে দুইটি পাম্প থাকবে সেখানে। এতে করে কোনো পানি আন্ডারপাসে জমে থাকতে পারবে না।