মিয়ানমারের সংঘাত পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর এর প্রভাব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এই সংঘাত নিরসনে আসিয়ান ও অন্যান্য প্রধান আঞ্চলিক নেতাদের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। গতকাল বুধবার (২২ মে) এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ এবং অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী সিনেটর পেনি ওং গত মঙ্গলবার ঢাকায় প্রথম মন্ত্রী পর্যায়ের সংলাপ করেন। তারা ৫০ বছরেরও বেশি কূটনৈতিক সম্পর্ক ও জনগণের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বের কথা উল্লেখ করেন। তারা স্বীকার করেন যে, রাজনৈতিক পর্যায়ে উচ্চ পর্যায়ের সফর সম্পর্ককে আরো নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে।
উভয় দেশের মন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান কৌশলগত গভীরতার প্রশংসা করেছেন। তারা বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক, ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আসিয়ান আউটলুকের মধ্যে সামঞ্জস্য উল্লেখ করেছেন। তারা শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ভীতি ও হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত একটি অঞ্চল দেখতে চান বলেও জানান। উভয় দেশের মন্ত্রী ইন্দো-প্যাসিফিকের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার, নৌ-চলাচল স্বাধীনতা এবং বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। অস্ট্রেলিয়া এবং বাংলাদেশ সামুদ্রিক নিরাপত্তা হুমকি, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, সাইবার অপরাধ এবং মানব পাচার প্রতিরোধসহ সমসাময়িক চ্যালেঞ্জের বাস্তব সমাধানের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। উভয় দেশের মন্ত্রী ইন্দো-প্যাসিফিক এবং মধ্যপ্রাচ্যের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেছেন। মন্ত্রীরা গাজার ভয়ানক মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তারা উদ্বেগ জানিয়েছেন। মন্ত্রীরা ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ এবং সারা বিশ্বে এর প্রতিক্রিয়া নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমানা ও জাতিসংঘ সনদের নীতি অনুসারে সংলাপ এবং কূটনীতির মাধ্যমে শান্তি প্রক্রিয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বাড়ানোর লক্ষ্যে সহযোগিতা দিতে একমত হয়েছেন উভয় মন্ত্রী। এ সময় মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণের উদারতা স্বীকার করেছে অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং মঙ্গলবার দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসেন।