গরমে পেটের সমস্যায় করণীয়

প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

গরমকাল আসার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ছে পেটের সমস্যা। ডায়রিয়া, বদহজম থেকে শুরু করে বমি বমি ভাব লেগেই আছে। প্রায় প্রতিটি ঘরেই পেটের অসুখে আক্রান্ত রোগীর দেখা মিলবে। কিন্তু কেন? এই সময়ে এই রোগের উপদ্রব কেন বাড়ছে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? বাঙালি যেমন ভোজন রসিক, তেমনই পেটরোগাও বটে! অনুষ্ঠান বাড়িতে একটু বেশি খেয়ে ফেললে কিংবা তেল-মসলার পরিমাণ সামান্য বেশি হয়ে গেলেই পেটের গোলমাল শুরু হয়ে যায়। আর কথায় কথায় মুঠো মুঠো ওষুধ খাওয়ার বদভ্যাস তো আছেই। চিকিৎসকদের মতে, গ্যাস-অম্বলের সমস্যা আজকাল ঘরে ঘরে। গরমে এই সমস্যা আরো বেড়ে যায়। কিন্তু খুব বেশি ওষুধ নির্ভর হয়ে পড়া কিন্তু মোটেই ভালো নয়। ঘন ঘন গ্যাস-অম্বলের ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস নানা ক্রনিক অসুখকে ডেকে আনে। তাই স্বাভাবিক উপায়ে হজম ক্ষমতা বাড়ানো ও হজম উপযোগী খাবার খাওয়াই প্রয়োজন। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস ও কয়েকটি কৌশল মেনে চললেই হজমের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবেন সহজেই। গরমে বিভিন্ন কারণে পেটের সমস্যা বাড়ে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিশুদ্ধ পানির ঘাটতি। অনেকেই রাস্তা-ঘাটে পানির তৃষ্ণা নিবারণ করতে খোলা শরবত খেয়ে থাকেন, যা পানিবাহিত রোগের কারণ হতে পারে। এছাড়া অনেকেই পানি না ফুটিয়েই পান করেন। এজন্যই পেটের নানা রোগ হয়।

গরমে ডিহাইড্রেশন, মসলাদার এবং আমিষজাতীয় খাবারের অত্যধিক ব্যবহার, সেই সঙ্গে বাসি বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস হতে পারে এর নেপথ্যে সাধারণ কারণ। কারো কারো ক্ষেত্রে পেটের তাপের কারণে বদহজম হতে পারে এবং গুরুতর ক্ষেত্রে পেপটিক আলসারের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে। গরমে সুস্থ থাকতে করণীয়-

১. খাবার চিবিয়ে খান : কর্মব্যস্ত জীবনে আমরা যেন বসে আয়েস করে খেতেই ভুলে গিয়েছি। সকালে অফিসে বের হওয়ার তাড়া, দুপুরে কাজের চাপ আর রাতে কত ক্ষণে খাওয়া শেষ করে ওয়েব সিরিজের শেষ ভাগটা দেখবেন- সেই চক্করে তাড়াহুড়া করে খাওয়ার অভ্যাস কম-বেশি সবারই আছে। এই অভ্যাসের কারণেই কিন্তু শুরু হয় পেটের নানা সমস্যা। খাবার চিবিয়ে না খেলে হজম করতে অসুবিধা হয়। খাবার ভালো করে চিবোলে তাতে নানা উৎসেচক যোগ হয়ে তাকে সহজপাচ্য করে তোলে। তাই ভালো করে চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন। পেটের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। ২. খাওয়ার সময়ে খাবারের দিকেই মনোযোগ দিন : অনেকেই টিভি দেখতে দেখতে কিংবা মোবাইলে ফোনে কথা বলতে বলতে খাবার খান। এতে খাওয়ার প্রতি কোনো মনোযোগ থাকে না। এ কারণেও হজমের সমস্যা দেখা যায়। খাওয়ার সময়ে খাবারের দিকেই নজর দিন, খাবার উপভোগ করে খান। ৩. খাওয়ার সময়ে অতিরিক্ত পানি না খাওয়াই ভালো : অনেকেই খাওয়ার সময়ে প্রচুর পানি খেয়ে ফেলেন। এ কারণেও কিন্তু গ্যাসের সমস্যা বাড়তে পারে। খাওয়ার সময়ে বেশি পানি খেয়ে নিলে হজমে সাহায্যকারী উৎসেচকগুলোর কার্যকারিতা হ্রাস পায়। তাই খাবার ঠিক মতো হজম হয় না। গ্যাস অম্বলের সমস্যা বাড়ে। তাই খাওয়ার সময়ে অল্প পানি খাওয়াই শ্রেয়। ৪. শরীরে পানির ঘাটতি না হয়, সেদিকে নজর রাখুন : গরমের দিনে অনেকেই ডিহাইড্রেশনের সমস্যায় ভোগেন। আর শরীরে পানির ঘাটতি হলেই হজমে অসুবিধা হয়। তাই সারা দিন দু-তিন লিটার পানি অবশ্যই খেতে হবে। খাদ্য তালিকায় ডিটক্স ওয়াটারও রাখতে পারেন। ৫. প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন : একই সঙ্গে খাওয়া উচিত নয়, এমন বেশ কিছু খাবার আছে। যেমন মাংস খেয়েই দুধ বা দুগ্ধজাত কোনও খাবার, ভাতের পরই ফল, ভাজাভুজি খেয়েই পানি- ভুলেও খাবেন না। এসব পর পর না খেয়ে একটু সময় রাখুন মাঝে। প্রক্রিয়াজাত খাবার যতটা পারবেন এড়িয়ে চলুন। প্রক্রিয়াজাত খাবারে অনেক রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এসব প্রক্রিয়াজাত খাবারের কারণে হজমের সমস্যার পাশাপাশি পরিপাকতন্ত্র তার কর্মক্ষমতা হারায়।