নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে সুখবর মিলছেই না। অব্যাহতভাবে বাড়ছে দ্রব্যমূল্য। আর তাতে নাভিশ্বাস উঠেছে সীমিত আয়ের মানুষের। সরকার কঠোরভাবে বাজার মনিটরিংয়ের নির্দেশ দিলেও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কিছুতেই কমছে না। মজুতদাররা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে যখন-তখন ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। এ নিয়ে ক্রেতাদের অসন্তোষ ও ক্ষোভের শেষ নেই। বাজারে ডিমের হালি হাফ সেঞ্চুরি ছুঁয়েছে গত সপ্তাহেই। পাড়া-মহল্লার দোকানে ৫৫ টাকা হালিও বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪৫ টাকা, আর তিন সপ্তাহ আগে ছিল ৪০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে কাঁচা মরিচের দাম। এ পণ্যটি কেজিতে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ২০০ টাকা ছুঁয়েছে। বাড়তি আলু-পেঁয়াজের দামও। বাজারে এখন মাছ-মাংসের দামও বেশ চড়া। এছাড়া বাজারে প্রতিটি সবজিই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এ সময়ে আমিষের চাহিদা পূরণে ডিমই ভরসা নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত তথা সীমিত আয়ের মানুষের। তবে এ পণ্যটির দাম হঠাৎই বেড়ে যাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা, যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর এলাকার সবজির বাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। বাজারে প্রতি কেজি ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা করে, ঝিঙে ৮০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, বরবটি ৬০ টাকা, ঢেড়স ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অথচ এসব সবজির প্রায় সবগুলোই এই মৌসুমেরই সবজি। এছাড়াও বাজারে প্রতি পিস ফুলকপির দাম ৬০ টাকা, বাঁধা কপি ৬০ টাকা ও লাউ ৬০ থেকে ৮০ টাকা পিস, প্রতি কেজি গাজর ৭০ টাকা, পেঁপে ৮০ টাকা, টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকা, আলু ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি করে।
বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারকে কেন্দ্র করে সব ধরনের পণ্যেই কিছুটা বাড়তি উত্তাপ থাকে। চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও এখন একদিনেই সপ্তাহের বাজার করে কিছুটা নিশ্চিন্তে থাকতে চান। তাই শুক্রবারকেন্দ্রিক মানুষের এই চাহিদাকে ঘিরে প্রায় প্রতিটি পণ্যেরই দাম বেড়ে যায় কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। বাজার করতে রুবেল হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বন্ধুরা মিলে একসঙ্গে থাকি, শুক্রবারেই সব বাজার করে ফেলার চেষ্টা করি। কিন্তু এখন দেখি যে অন্যান্য দিনের তুলনায় এই দিন বাজার থাকে বেশি চড়া। অন্যান্য দিনে কম থাকবে আর গতকাল শুক্রবার বেড়ে যাবে, এটা কেমন কথা? এই দিন কি বাজারে সবজি কম থাকে? রাজু আহমেদ নামে আরেক ক্রেতা বলেন, আমাদের স্বল্প বেতনে প্রতিদিন মাছ-মাংস খাওয়া যায় না। কিন্তু সবজির দামও যদি এমন বাড়তি হয়, তাহলে এটা খাওয়াও কমিয়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, বাজারে সব ধরনের সবজিতে ভরপুর। কোনো সংকট নেই। তারপরও ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে দাম বাড়িয়ে দেয়। আমরা আসলে যাব কোথায়? এদিকে সবজির দাম বাড়তি প্রসঙ্গে বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, বাজারে সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম একটু বাড়তি। গরম কমলে সামনে দাম কিছুটা কমতে পারে। তাছাড়া কিছু জিনিসের দাম শুক্রবার এলে এমনিতেই বেড়ে যায়। যেমন, শসা অন্যান্য দিনে ৩০-৪০ টাকা বিক্রি করি, কিন্তু শুক্রবারে ৫০-৫৫ টাকা বিক্রি করি। গাজরের চাহিদাও বাড়ে, যে কারণে দামটাও বাড়ে। আরেক সবজি বিক্রেতা রাব্বি বলেন, গত কিছুদিন ধরে সারা দেশেই গরমটা একটু বেশি পড়তেছে। প্রচণ্ড রোদের কারণে অনেক কৃষকের সবজি নষ্ট হয়েছে, তাই সব সবজির দামটা একটু বেড়ে গেছে। আমরা যে ইচ্ছাকৃতভাবে বেশি দামে বিক্রি করি বিষয়টা এরকম নয়। তিনি আরো বলেন, শুক্রবারে প্রায় অধিকাংশ মানুষ পুরো সপ্তাহের বাজার করে ফেলে। যে কারণে চাহিদা থাকে অনেক বেশি। অন্য দিনগুলোতে সারাদিনে যা বিক্রি করি শুক্রবার এলে সকালের দিকেই সেই পরিমাণ বিক্রি হয়ে যায়। দামটা যদি আর একটু কম থাকত তাহলে হয়তো বিক্রি আরো বেশি হতো।
কাঁচামরিচের ডাবল সেঞ্চুরি : এক সপ্তাহ আগেও বাজারে কাঁচামরিচ ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হতো। সপ্তাহের ব্যবধানে সেটির দাম বেড়ে এখন ২০০ টাকা পৌঁছেছে। কোথাও কোথাও দাম ২২০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে কাঁচামরিচের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে , সব বাজারেই কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তবে যে সব মরিচের মান কিছুটা ভালো সেই দুই এক জাতের মরিচ ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আসন্ন ঈদুল আজহার বাকি প্রায় ১ মাস। এর আগেই বাজারে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে গিয়ে ২০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। গতবার (২০২৩) ঠিক এই সময়ে ঈদুল আজহার আগে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে ৭০০ টাকায় ঠেকেছিল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই সময়ে দেশে কাঁচামরিচের কিছুটা ঘাটতি থাকে, সে কারণে দাম বেড়ে যায়। তখন আমদানি করে কাঁচামরিচের ঘাটতি মেটানো হয়। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিছুদিনের বৃষ্টির কারণে কাঁচামরিচের দাম বেড়েছে। কারণ দেশের মরিচ গাছগুলো বৃষ্টি হলেই পচে যায়। এছাড়া কিছুদিনের তীব্র গরমে মরিচ গাছগুলো আগেভাগেই নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে মরিচের মৌসুম শেষ হয়ে আশায় গাছগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে বাজারে কাঁচামরিচের সরবরাহ আগের তুলনায় কম হচ্ছে, ফলে দাম বেড়েছে। রাজধানীর মালিবাগের একটি কাঁচাবাজারের খুচরা কাঁচামরিচ বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন আগেই কাঁচামরিচ ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করেছি। তারপর থেকেই কাঁচামরিচের দাম বেড়ে গেছে, এখন প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি করছি ২০০ টাকায়। যদিও এই কাঁচামরিচের মান খুব ভালো না, তবুও পাইকারি বাজার থেকে এই মরিচ বাড়তি দাম দিয়েই কিনে আনতে হয়েছে। পাইকারি বাজারে কাঁচামরিচ খুব কম পাওয়া যাচ্ছে, আগের মতো সরবরাহ নেই পর্যাপ্ত। সে কারণেই বাজারে বাড়তি দাম চলছে কাঁচামরিচের। নতুন করে মরিচ ওঠার আগ পর্যন্ত এ দাম বাড়তি থাকবে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে কাঁচাপণ্যের সঙ্গে কাঁচামরিচও কিনে এনে খুচরা বিক্রি করেন আলমগীর হোসেন নামের এক বিক্রেতা। তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের ব্যবসার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি যে, বছরের এই সময়ে এসে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে যায়। কারণ এ সময় কাঁচামরিচের উৎপাদন তেমনভাবে হয় না, ফলে বাজারে সরবরাহ কম হয়। খেতের গাছগুলো এখন শুকিয়ে যাওয়ার পথে, এছাড়া কয়েকদিন বৃষ্টি হয়েছে যাতে করে গাছগুলো পচে গেছে। পাশাপাশি গত কিছুদিনের তীব্র গরমে আগেভাগেই কাঁচামরিচের গাছগুলো শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। তাই বাজারে বাড়তি দাম যাচ্ছে কাঁচামরিচের। রাজধানীর মহাখালী বাজারে অন্যান্য বাজারের সঙ্গে কাঁচামরিচ কিনেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগেও এক পোয়া কাঁচামরিচ কিনেছি ৩০ টাকায়, আজ সেটাই কিনলাম ৫০ টাকা। সবকিছুর দাম বাড়তি যাচ্ছে, সেখান থেকে আমাদের ছাড় দেয়নি কাঁচামরিচও। এটারও এখন বাড়তি দাম। ২০০ টাকা কেজি কিনে খেতে হচ্ছে। বাজারে আর কিছু দাম বাড়তে বাকি থাকল না। গত বছর কোরবানি ঈদের আগে কাঁচা মরিচ ৭০০ টাকা কেজি ছিল, এবছর এ সময়ে এসে কেবল ২০০ টাকা ঠেকেছে। না জানি কত টাকায় গিয়ে ঠেকে কাঁচামরিচের দাম। বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি ও মাছ : বাজারে ব্রয়লার মুরগি থেকে শুরু করে সব ধরনের মাংস ও মাছ আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। একবার দাম বাড়লে যেন কমার আর কোনো খবর নেই। তাই মাছ-মাংসের বাজার বাড়তি দামেই আটকে আছে। এদিকে, বাজারে সবকিছুর বাড়তি দামের বিষয়ে বরাবরের মতোই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। বিপরীতে সেই পুরোনো অজুহাত হিসেবে সরবরাহ কম থাকার বিষয়টিকে দাম বাড়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিক্রেতারা। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আজকের বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকা দরে। লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৭০ টাকায়। আর সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩৬০ টাকা ও দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়। গরুর মাংস আগের বাড়তি দামেই প্রতি কেজি ৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়। রাজধানীর মালিবাগ বাজারে সপ্তাহের ছুটির দিন কেনাকাটা করতে আসা সোলাইমান বলেন, আজ বেশ কিছুদিন ধরে ব্রয়লার থেকে শুরু করে সব ধরনের মুরগির দাম অতিরিক্ত বেশি। কিন্তু বাজার মনিটরিংয়ের কোনো কার্যক্রম দেখছি না। আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতাদের বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া গরু-খাসির মাংস তো স্পর্শ করতে পারি না। মাংসের চাহিদা সাধারণ মানুষ মেটায় ব্রয়লার মুরগি দিয়ে। কিন্তু সেই ব্রয়লার মুরগিও ২১০ থেকে ২২০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। সোনালি ও লেয়ার মুরগির দাম আরো দেড়শ’ টাকা বেশি। তাহলে আমরা সাধারণ মানুষ এত দাম দিয়ে কিনব কীভাবে? এসব মুরগির দাম যে বেড়েছে, আর কমার কোনো নামই নেই। বাড়তি দামের বিষয়ে একই বাজারের মুরগি বিক্রেতা সোহেল মিয়া দাবি করে বলেন, কিছুদিন আগে তীব্র গরমের কারণে মুরগির উৎপাদন কমে গিয়েছিল। খামারির অনেক মুরগি মারা গেছে গরমে। মূলত সেই সময় ব্রয়লার থেকে শুরু করে সব ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে। এখনও গরম চলমান আছে। সেই কারণে মূলত সব ধরনের মুরগির দাম বাড়তি। পাইকারি বাজার থেকে আমাদের বাড়তি দামে মুরগি কিনতে হচ্ছে। তাই মূলত খুচরা বাজারে মুরগির দাম বাড়তি যাচ্ছে। এদিকে, বাজারে সব ধরনের মাছের দামই? বাড়তি যাচ্ছে। এর মধ্যে রুই মাছ প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায়, বড় রুই ৪০০ টাকায়, পাঙাশ ২৩০ টাকা, চিংড়ি আকার ভেদে ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকায়, পাবদা ৪০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, চাষের কই ২৮০ টাকায়, কাতল ৩৫০ টাকায়, গলসা প্রতি কেজি ৫৫০ টাকায়, টেংরা ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায়, বড় শিং ৫৫০ টাকায়, ছোট শিং ৪০০ টাকায়, বড় বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় ও বড় আইড় মাছ ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছের অতিরিক্ত দামের বিষয় অভিযোগ জানিয়ে গুলশান সংলগ্ন লেকপার বাজারের ক্রেতা আলামিন বলেন, মাছের দাম এত বাড়তি যে, চাষের মাছও কেনা যায় না। আমাদের মতো সাধারণ মানুষ পাঙাশ, তেলাপিয়া, চাষের কই ও রুই কোনোভাবে কিনছিলাম। কিন্তু এখন এসব মাছের দামও অতিরিক্ত বেশি। পাঙাস মাছ তো ২৩০ টাকা কেজি, চাষের কই ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি। ভালো মানের মাছ তো কিনতেই পারি না, সেগুলোর দাম আকাশ ছোঁয়া। দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে এখন কাটা পাঙাশ মাছ কিনলাম। অন্যদিকে, মহাখালী বাজারের মাছ বিক্রেতা ওসমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই মাছের দাম বাড়তি যাচ্ছে। প্রথমত ফিডের দাম বেড়ে যাওয়ার পরে সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছিল। সেভাবেই বাজার চলছিল। কিন্তু গত কিছুদিনের তীব্র গরমে মাছের সরবরাহ কমে গিয়েছিল। সেই সময় মাছের দাম আরেক দফা বেড়েছে। মাছের বাড়তি দামের বিষয়ে বিক্রেতাদের কোনো হাত নেই। আমরা পাইকারি বাজার থেকে যেমন দামে মাছ কিনে আনি, তেমন দামে খুচরা বাজারে বিক্রি করি। যখন আমাদের কেনা দাম কম পড়বে, তখন আমরাও ক্রেতা পর্যায়ে কম দামে মাছ বিক্রি করতে পারব।
ডিমণ্ডআলুতেও স্বস্তি নেই : রাজধানী ঢাকায় ডিমের বড় দুটি পাইকারি বাজারের মধ্যে একটি কারওয়ান বাজার সংলগ্ন তেজগাঁও রেলস্টেশন পাইকারি ডিমের বাজার, অন্যটি পুরান ঢাকার কাপ্তানবাজার। উভয় বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সোমবার পাইকারিতে প্রতি ১০০ পিস বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ১৮০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। প্রান্তিক খামারিরা ডিমের দাম কমা-বাড়া নিয়ে তেজগাঁও আড়ত মালিকদের সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন। তারা বলছেন, কিছুদিন আগেই ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমিয়ে দেন আড়ত মালিকরা। সে সময় সারাদেশে ডিম হিমাগারে মজুত হয়েছে। এখন দাম বাড়িয়ে তারা মুনাফা করছে। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, সারাদেশে ম্যাসেজের মাধ্যমে তারা (তেঁজগাও আড়ত মালিকরা) ডিমের দাম নির্ধারণ করেন। হুট করে দাম কমিয়ে খামারিদের থেকে ডিম নিয়ে হিমাগারে সংরক্ষণ করেন। এরপর আবার দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা লুটে সিন্ডিকেট। তিনি বলেন, ঢাকার আড়তগুলোতে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ লাখ ডিম বিক্রি হলেও মজুতদাররা সারাদেশে দৈনিক বিক্রিত প্রায় ৪ কোটি ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ বা ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে। প্রতিদিন তারা ম্যাসেজ দিয়ে বাজারদর জানিয়ে দেয় সারাদেশের আড়তদারদের। তারাই এখন ডিমের বাজারে সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেট। এদিকে বেড়েছে পেঁয়াজের দামও। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ৫ টাকা বেশি। এছাড়া আদা বা রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকার কমে মিলছে না। আলুর কেজি গত সপ্তাহে ৫০ টাকা থাকলেও তা বেড়ে ৫৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।