সুসংবাদ প্রতিদিন

চুয়াডাঙ্গায় বাজারে উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন জাতের লিচু

প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে উঠতে শুরু করেছে রসালো ফল লিচু। গত কয়েক দিন ধরে সুস্বাদু এই মৌসুমি ফল পাওয়া যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে। বেলা গড়ালেই জমতে শুরু করে লিচুর বাজারগুলো। মূলত লিচু ও আমসহ হরেক রকমের রসালো ফল পাওয়া যায় জ্যৈষ্ঠ মাসে। তবে তীব্র তাপদাহের কারণে চুয়াডাঙ্গায় গত বারের তুলনায় এ বছর লিচুর উৎপাদন কম হবে বলে ধারণা করছেন কৃষি বিভাগ। এদিকে দেশি লিচুর পাশাপাশি বোম্বাই জাতের লিচু বাজারে উঠতে শুরু করেছে। তবে বাজারে চাহিদা থাকায় ও বেশি লাভের আশায় অপরিপক্ক লিচুও বাজারে নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। লিচু চাষি ডালিম হোসেন জানান, আমার একটি লিচু বাগান আছে। বাগানে ১৫টি দেশি লিচুর গাছ ও ২০টি বোম্বাই জাতের লিচু গাছ রয়েছে। এ বছর তীব্র তাপমাত্রা এবং সেই সাথে অনাবৃষ্টির কারণে লিচুর ফলন খুব একটা ভালো হয়নি। এই তাপমাত্রা আর অনাবৃষ্টির কারণে গুটি আসার সময় অনেক লিচু ঝরে পড়ে গেছে। যার কারণে ফলনও কম হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা জানান, তীব্র তাপদাহের কারণে গত বারের তুলনা এ বছরের জেলায় লিচুর উৎপাদন কম হবে বলেই ধারণা করা হয়েছে। কিছুদিন আগে থেকেই থেকে দেখা যাচ্ছে সুস্বাদু বিভিন্ন জাতের লিচু পাওয়া যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন বাজারে। অন্যান্য জেলার তুলনায় চুয়াডাঙ্গায় লিচুর আবাদ তুলনামূলক কম। তারপরও এ জেলার লিচু সুস্বাদু হওয়ায় চাহিদা অনেক বেশি। জেলার চার উপজেলায় বিভিন্ন হাটবাজারে বাহারি জাতের রসালো এই ফল কেনাবেচা হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার চার উপজেলায় এ বছরের লিচুর আবাদ হয়েছে ২৯৩ হেক্টর জমিতে। গত বছর এখানে লিচুর আবাদ হয়েছিল ২১২ হেক্টর জমিতে। এ বছর লিচুর আবাদ বাড়লেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ফলন গতবারের তুলনায় অনেক কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, যে সময়ে লিচুর মুকুল এসেছে তখন তীব্র দাবদহ আর অনাবৃষ্টির কারণে মুকুল ঝরে গেছে। তারপরও এই জেলায় এ বছর ২ হাজার ৬৩৭ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদন হবে বলে ধারণা করা হয়েছে। মধু মাস হিসেবে পরিচিত গ্রীষ্মের এ জ্যৈষ্ঠ মাসে বিভিন্ন জাতের লিচু পর্যায়ক্রমে বাজারে আসতে শুরু করেছে। প্রথমে মাদ্রাজি, এরপর দেশি, বোম্বাই ও কাঁঠালি লিচু আসবে। একই সাথে জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষে বাজারে পাওয়া যাবে যথাক্রমে চায়না থ্রি ও চায়না ২ লিচু। বিভাস চন্দ্র আরো বলেন, এবারে তীব্র তাপদাহের কারণে খুব কষ্ট করে লিচু বাগানিরা লিচু গাছে সেচ এবং বিভিন্ন ভিটামিন স্প্রে করেছে, যার কারণে কিছুটা হলেও লিচুর মুকুল ও গুটি রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে।

লিচু ব্যবসায়ী দামুড়হুদা উপজেলার মজলিশপুর গ্রামের আলাউদ্দীন বলেন, প্রতিবারের মতো আমি কয়েকটি লিচু বাগান ক্রয় করেছি। শুরুতে গাছে মুকুল বেশি থাকলেও সময় মতো বৃষ্টি না হওয়া এবং অতিমাত্রায় দাবদাহের কারণে লিচুর মুকুল ও গুটি ঝরে যায়। এ বছর লিচু বাগানে সেচের পরিমাণ একটু বেশি লেগেছে। যতটুকু সেচ লাগার কথা তার চেয়েও গাছে বেশি পরিমাণে সেচ ও পরিচর্যা করতে হয়েছে। বর্তমানে বাজারে লিচুর যে দাম চলছে, তাতে আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তবে এর চেয়ে দাম কমে গেলে লোকসান গুনতে হবে। গত বারের তুলনায় এ বছর চাহিদার তুলনায় লিচুর সরবরাহ অনেক কম হওয়ায় লিচুর দামও একটু বেশি। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আলোকদিয়া ইউনিয়নের মমিনপুর গ্রামের টিপু সুলতান বলেন, গত বছর ১০০টি লিচুর দাম ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। কিন্তু এ বছরে ১০০টি লিচুর দাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কিনতে হচ্ছে। তার পরও লিচুর সেই রকম স্বাদ পাওয়া যাচ্ছে না। দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য লিচু ক্রয় করা কিছুটা কঠিন হয়ে পড়েছে।