ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন : ভাসমান বাজার

প্রতি হাটে দেড় কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি

প্রতি হাটে দেড় কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি

ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে নদীর বুকে বসতে শুরু করে এক ভাসমান হাট। পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বৈঠাকাটা বাজার সংলগ্ন বেলুয়া নদীতে সপ্তাহের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার বসে এই ভাসমান হাট। বেলুয়া নদীতে ভাসমান বাজারে বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০-৫০টি ট্রলার বোঝাই করে হাটে তরমুজ নিয়ে এসেছে ব্যবসায়ীরা। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা ট্রলারে উঠে দরদাম করছেন। ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে সরব তরমুজের হাট। দামে বনিবনা হলে ট্রলার থেকে তরমুজ কিনে আরেক ট্রলারে তোলা হচ্ছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও ট্রলার থেকে তরমুজ কিনে ছোট নৌকায় তুলছেন। অনেক ব্যবসায়ী ট্রলার থেকে তরমুজ কিনে পাশের বৈঠাকাটা বাজারে রাখা ট্রাকে বোঝাই করছেন। নাজিরপুর উপজেলা সদর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে বেলুয়া নদী। বৈঠাকাটা বাজার ও বেলুয়া মুগারঝোর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে এই নদী। এই নদীতে প্রায় ৬৬ বছর ধরে ভাসমান তরমুজের হাট বসে। মার্চ থেকে শুরু করে এপ্রিল পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। প্রতি হাটে বিক্রি দেড় কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। ঢাকা, খুলনা, যশোর, নরসিংদী, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের বড় বড় ব্যবসায়ী এই হাটে তরমুজ কিনতে আসেন। স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা তাদের কাছে তরমুজ বিক্রি করে ভালো দাম পান। খেত কিনে পাইকারি ধরে ভাসমান বাজারে তরমুজ বিক্রি করতে আসা রবিউল তালুকদার বলেন, উপকূলীয় জেলাগুলোর চরাঞ্চলে প্রচুর তরমুজ আবাদ হচ্ছে। আমরা খেত হিসেবে তরমুজ কিনি। প্রতি বিঘা খেতের দাম পড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। এরপর খেত থেকে তরমুজ কেটে আকারভেদে পাইকারি বাজারে বিক্রি করি। পাইকারি বাজারে শত (১০০টি) হিসেবে তরমুজ বিক্রি হয়। বৈঠাকাটা বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন জানান, ভোলার চরফ্যাশন, পটুয়াখালী, বরগুনার বিভিন্ন চরে আবাদ করা তরমুজের খেত কেনেন ব্যবসায়ীরা। এরপর খেত থেকে পাকা তরমুজ ট্রলারে করে বৈঠাকাটাসহ বিভিন্ন বাজারে নিয়ে বিক্রি করা হয়। বড় আকারের ১০০টি তরমুজের পাইকারি মূল্য ২২ হাজার থেকে ২৫ হাজার। মাঝারি আকারের তরমুজ ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। ছোট তরমুজ আকার ভেদে ৫ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। হাট থেকে তরমুজ স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী ও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বড় ব্যবসায়ীরা কিনে নেন। এই হাট থেকে নিয়মিত তরমুজ কিনে নিয়ে যান উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মো. আজিজুল শেখ। তিনি জানান, প্রতি হাটে দেড় থেকে ২ কোটি টাকার তরমুজ কেনাবেচা হয় এখানে। বৈঠাকাটা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা তালুকদার বলেন, বাজারটি একশত বছরের পুরোনো। এ বাজারে বিভিন্ন জেলা থেকে কাঁচামাল ট্রালারযোগে আসে ট্রলারেই হাট বসে। প্রতি বছরের মতো এবারও তরমুজের বাজার জমজমাট।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত