বিজয়নগরের লিচুর সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে

এবার ফলন ভালো

প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ফরহাদুল ইসলাম পারভেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে:

তীব্র গরমের কারণে লিচুর সাইজ একটু ছোট হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে এবার লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, তীব্র গরমের কারণে এমনটি হলেও যাদের বাগানে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল, তাদের লিচুর সাইজ ঠিক আছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবছর ৪৩০ হেক্টর জায়গায় লিচুর আবাদ হয়েছে। লিচু বাগান আছে ৯০০টির বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ২০ কোটি টাকার লিচু বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভারত সীমান্ত ঘেঁষা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা। এই উপজেলায় সব ধরনের সবজি ও ফলের ভালো উৎপাদন হয়। বিশেষ করে এখানকার সুস্বাদু লিচুর সুনাম রয়েছে পুরো দেশজুড়ে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ৫০ বছর আগে এই উপজেলায় লিচুর উৎপন্ন শুরু হয়। জায়গা ও শ্রম কম হওয়াই লিচুর ব্যবসা শুরু করেন স্থানীয় কৃষকরা। উপজেলার বিষ্ণুপুর, কাঞ্চনপুর, কাশিমপুর, সিঙ্গারবিল, আদমপুর, কালাছড়া, মেরাশানী, সেজামুড়া, কামালমুড়া, হরষপুর, মুকুন্দপুর, নোয়াগাঁও, অলিপুর, কাশিনগর, ছতুরপুর, বক্তারমুড়া, রূপা, শান্তামুড়া, কামালপুর, কচুয়ামুড়া, গোয়ালনগর, ভিটিদাউপুর, পত্তন, এলাকায় লিচুর বাগান রয়েছে। এছাড়া উপজেলার প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতেই একটি করে লিচুর গাছ আছে। যাদের বাড়িতেই একটু জায়গা আছে, তারা তাদের বাড়িতে লিচুর গাছ লাগান। এসব গাছে পাটনাই, বম্বে, চায়না থ্রি, চায়না-২ ও এলাচি জাতীয় লিচুর ফলন হয়। উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে পরিচিত আউলিয়া বাজার। এছাড়াও সিংগারবিল, হরষপুর, চম্পকনগর বাজারে বিক্রি হয় অধিকাংশ লিচু। এসব বাজার থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নরসিংদী, ভৈরব, নোয়াখালী, চাঁদপুর, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, শায়েস্তাগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, ফেনী ও রাজধানী ঢাকার ব্যবসায়ীরা পাইকারি দরে লিচু কিনে নিয়ে যান। সরেজমিন উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের কচুয়ামুড়া, ভিটিদাউদপুর, সেজামুড়া ও কামালমুড়ার বিভিন্ন বাগানে ঘুরে দেখা যায়, বাগান পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগান মালিকরা। এ সময় কথা হলে পাহাড়পুর ইউনিয়নের কচুয়ামুড়া গ্রামের বাসিন্দা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত সার্জেন্ট মো. ইকবাল হুসাইন টিটু বলেন, ‘আমার দুইটি বাগানে ৪৩টি লিচু গাছ রয়েছে। এবছর আমার গাছে খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে লিচুর সাইজ একটু ছোট হয়েছে। এবছর ৩ লাখ টাকার লিচু বিক্রি হবে বলে আশা করছি। তিনি বলেন, লিচুর সিজন আসলে আমি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাগান পরিচর্যায় লেগে যাই। আমার অফিসের সবাই জানে আমি বাগান প্রিয়। ছুটি শেষে অফিসের সবার জন্য বাগানের লিচু নিয়ে সবাইকে দেই সবাই খুশি হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর থেকে লিচু বাগানে স্ত্রী শতাব্দি চক্রবর্তী তমা ও ছেলে সর্বজিৎ চক্রবর্তীকে নিয়ে ঘুরতে আসা সুমন চক্রবর্তী জানান, বাগানে এসে পরিবারের সবাইকে নিয়ে লিচু পেড়ে খাওয়ার মজাই আলাদা। এছাড়া লিচু বাগানসহ আশপাশের পরিবেশ মনোমুগ্ধকর। পরিবার নিয়ে এমন সুন্দর জায়গায় সময় কাটানো অনেক আনন্দের। বিজয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাব্বির আহমেদ বলেন, উপজেলায় এবছর ৪৩০ হেক্টর জায়গায় লিচুর আবাদ হয়েছে। লিচু বাগান আছে ৯০০টিরও বেশি। এবছর ২০ কোটি টাকার লিচু বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।