পিডিবির গাফিলতি

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে মা ও ছেলে

বিচার চাইল পরিবার

প্রকাশ : ২৯ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ময়মনসিংহ ব্যুরো

নিয়ম বহির্ভূতভাবে তিনতলার ছাদ ঘেঁষে ১১ হাজার ভোল্টের পিডিবির লাইন স্থাপন করায় বিদ্যুস্পৃষ্টে পঙ্গুত্ববরণ করে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে মেধাবী শিক্ষার্থী দেবরাজ কর বৃত্ত (১৭) ও তার মা রূপালী কর (৫০)। এ ঘটনায় দায়িদের বিচারসহ ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।

গতকাল দুপুর ১টায় ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ দাবি জানান ভুক্তভোগী দেবরাজ কর বৃত্তের বড় ভাই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দেবব্রত কর তীর্থ।

নগরীর নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা দেবরাজ কর বৃত্ত আনন্দ মোহন কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া শিক্ষার্থী। সে পিএসসি, জেএসসি ও মাধ্যমিক পরীক্ষায় স্কলারশিপপ্রাপ্ত বলে জানা গেছে। তাদের বাবা কেশব কর বর্তমানে কানাডা প্রবাসী একজন লেখক। সংবাদ সম্মেলনে তীর্থ জানায়, আমার বোন দেবযানী কর প্রাপ্তি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের পঞ্চমবর্ষের শিক্ষার্থী। তার সহপাঠী মারিয়া হক স্বর্ণা ময়মনসিংহ নগরীর খাগডহর শাহী মসজিদ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা। বিগত ১১ এপ্রিল আমিসহ আমার মা রূপালী কর, বোন দেবযানী কর প্রাপ্তি, ছোট ভাই দেবরাজ কর বৃত্তকে নিয়ে ঈদের দাওয়াতে স্বর্ণাদের বাসায় যাই। সেখানে দুপুরে খাওয়ার পর স্বর্ণা আমার বড় বোন প্রাপ্তি ও ছোট ভাই বৃত্তকে নিয়ে তাদের তিনতলা বাসার ছাদে ছবি তুলতে গেলে পিডিবির ১১ হাজার ভোল্টের বিপদজ্জনক লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় আমার ভাই বৃত্ত। এ সময় তাদের চিৎকারে ছাদে গিয়ে দেখি আমার ভাই গুরুতর জখম অবস্থায় পড়ে আছে। এ সময় বৃত্তকে বাঁচাতে গিয়ে মাসহ আমরা আহত হই। এ ঘটনায় চিকিৎসকরা আমার ভাই দেবরাজ কর বৃত্তের ডান হাত এবং মা রূপালী করের পায়ের চারটি আঙ্গুল কেটে ফেলেছেন। তারা বর্তমানে পঙ্গু হয়ে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছে।’ এ ঘটনায় গত ২৬ এপ্রিল কোতোয়ালি মডেল থানায় বাসার মালিক মনিফা বেগম ও তার মেয়ে মারিয়া হক স্বর্ণার নাম উল্লেখসহ পিডিবির অজ্ঞাতনামা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার বাদী দেবব্রত কর তীর্থের অভিযোগ, বিল্ডিং কোড অমান্য করে নির্মাণ করা বাসার তিনতলার ছাদ ঘেঁষে নিয়মবর্হিভূতভাবে ১১ হাজার ভোল্টের পিডিবির লাইন নির্মাণ করায় এবং বাসার মালিক পক্ষ আমাদের সর্তক না করে ছাদে নিয়ে যাওয়ার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে বিচার দাবি করছি। দুর্ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মামলার আসামি ও বাসার মালিক মনিফা বেগম বলেন, তারা আমাদের বাসায় বেড়াতে এসে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। এতে আমাদের দায় আছে বলে মনে করি না। তবে বিদ্যুৎ অফিসের দায় আছে কি না, আমার জানা নেই।

জানতে চাইলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের (উত্তর) নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ বলেন, বিল্ডিং কোড না মেনে ভবন নির্মাণ করার কারণে ছাদ ঘেঁষে ১১ হাজার ভোল্টের লাইন স্থাপন করা হয়েছিল। তবে অভিযোগ পেয়ে ওই লাইনটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি একটি নিছক দুর্ঘটনা। এ নিয়ে মামলা হলে হতেও পারে। এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মতিউর রহমান বলেন, ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলমান আছে। তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে। তবে এ ঘটনায় দায়ী কে? তা এখনই বলা যাবে না।