নৌযান শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে অগ্রগতি হয়েছে
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
নৌযান শ্রমিকদের ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
গতকাল নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। সভায় বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন, নৌযান মালিক সমিতি এবং সরকারের সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
জানানো হয় যে, নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে, নাবিকদের নিয়োগপত্রের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য নৌযান মালিকদের পত্র দেওয়া হয়েছে; সব মালিক সমিতিকে এক প্লাটফর্মে এনে এককেন্দ্রিক সিরিয়াল মেইনটেইন করে চট্টগ্রাম বন্দরসহ সব বন্দরে পণ্য পরিবহনে সমতা বিধানের লক্ষ্যে মালিক সমিতির সাথে আলোচনা চলমান রয়েছে; মালিক সমিতিসমূহের সাথে গেজেট বহির্ভূত দ্বিপাক্ষিক চুক্তিভুক্ত অমীমাংসিত দাবিসমূহ পুনর্নির্ধারণ করে চুক্তি সম্পাদন করা মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনের বিষয়ে মালিক সমিতি ব্যবস্থা নিবে; চট্টগ্রাম বন্দরে নিরাপদে জাহাজ রাখার জন্য শঙ্খ নদীকে পোতাশ্রয়ের উপযোগী করা, অভ্যন্তরীণ নদীর নাব্যতা রক্ষা, নৌপথ, নদী ও সকল নদী বন্দরে পর্যাপ্তসংখ্যক মার্কা-বয়া-বাতি স্থাপন, চ্যানেলে জাল পাতা বন্ধ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পাইলট সরবরাহ বিআইডব্লিউটিএ নিশ্চিত করবে; চট্টগ্রামের চরপাড়া-জালিয়াপাড়া পর্যন্ত নাবিকদের নিরাপদে উঠা নামার জন্য কমপক্ষে পাঁচটি ইজারামুক্ত ঘাট ও মেরিন ড্রাইভওয়ের উপর চরপাড়া ও জালিয়াপাড়া এলাকায় দুটি ফুটওভার ব্রিজ স্থাপনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে; ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস এর বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা চলছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে এ বিষয়টি আলোচনার লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে; নৌপরিবহন অধিদপ্তর কর্তৃক বিধি অনুযায়ী নৌযানে মাস্টার-ড্রাইভার নিয়োগ নিশ্চিত করা হচ্ছে, ইনল্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ার প্রযোজ্য জাহাজগুলোতে ইনল্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে পত্র দেয়া হয়েছে, নৌযানের মাস্টার-ড্রাইভার জন্য লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পূর্বে ০১ জুলাই থেকে চক্ষু পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে; বালুবাহী নৌযানে কর্মরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশের হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ও পুলিশ মহাপরিদর্শককে পত্র দেয়া হয়েছে; অভিযান-১০ লঞ্চের চারজন মাস্টার-ড্রাইভারের সনদ বাতিলের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে, নৌদুর্ঘটনার সকল মামলা নৌআদালতের এখতিয়ারভূক্ত করার জন্য বিআইডব্লিউটিএ এবং বাংলাদেশ নৌ পুলিশকে পত্র দেওয়া হয়েছে; সামুদ্রিক মৎস্য শিকারী জাহাজ শ্রমিকদের গেজেটের বাস্তবায়নে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কাজ করছে এবং নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, কালোবাজারি, জাহাজ ছিনতাই বন্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ও পুলিশ মহাপরিদর্শককে জানানো হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, সভায় ভালো আলোচনা হয়েছে। অনেক বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। মালিক, শ্রমিক, সরকার একত্রে আলোচনা করলে অনেক কিছুই সমাধান হয়। এক বৈঠকে সমাধান না হলে, আরও বৈঠকে সমাধান হয়। ফলপ্রসু আলোচনা না হলে তখন শ্রমিকরা সংগ্রামে যেতে পারেন।
এ সময় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মোস্তফা কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব শেখ সালেহ আহমেদ, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার অ্যান্ড শিপ সার্ভেয়ার মোঃ মনজুরুল কবীর, পররাষ্ট্র, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বদিউজ্জামান বাদল, বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির আব্দুস সালাম খান, বাংলাদেশ ওয়েল ট্যাঙ্কার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোশারফ হোসেন, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশের লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আফসার হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।