বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের বিচার কেন করেনি- তা জনগণ জানতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ড আজও রহস্যময় রয়ে গেছে; এ রহস্যের উন্মোচন ঘটাতে হবে।
গতকাল দুপুরে পুরান ঢাকার ধোলাইখালের সাদেক হোসেন খোকা খেলার মাঠে অসহায় হতদরিদ্র ১ হাজার ৩০০ পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে এই খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, আজ দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। ৪৩ বছর আগে জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার পরিবারের কেউ জিয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার চায়নি। কোনো থানায় জিয়া পরিবারের কেউ কোনো এফআইআর করেনি। কেন তারা করেনি জনগণ সেটা জানতে চায়। তিনি বলেন, বিএনপি তিন তিনবার ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বিএনপির নেতাদের বুকে সাহস থাকলে সেটার জবাব দিয়ে প্রমাণ করুন আপনারা সত্যিই জিয়াউর রহমানকে ভালোবাসেন।
মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, জিয়া হত্যার বিচারের নামে যা হয়েছে সেটা কোর্ট মার্শাল। তখন কিছু মুক্তিযোদ্ধা অফিসারকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। প্রকাশ্যে আদালতে বিচার হলে বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারত, সেদিন কী হয়েছিল, কারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল। কারা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী বা কারা হত্যাকাণ্ডের সুবিধাভোগী। তাদের মুখোশ উন্মোচিত হতো। আজকে ৪৩ বছর পর আমি একজন ক্ষুদ্র নাগরিক হিসেবে যারা বিএনপি নেতৃত্বে রয়েছেন, তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলাম- আপনারা জিয়া হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত করুন। বাংলার মানুষ জানতে চায় কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে; হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে কে লাভবান হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য যেদিন উন্মোচিত হবে, যারা আজকে বড় বড় কথা বলেন, যারা পান থেকে চুন খসলে জিয়ার কবরে গিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন, তাদের অনেকেই এতে ফেঁসে যাবেন। কারো দিকে আঙুল না তুলে আসুন আমরা সত্যটাকে উন্মোমোচন করি।
বিএনপির প্রয়াত নেতা সাদেক হোসেন খোকা খেলার মাঠের নামকরণের কথা উল্লেখ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, আজকে আপনারা যে মাঠে বসে আছেন এই মাঠের নাম আমি ইচ্ছা করলে পরিবর্তন করে দিতে পারতাম। আমি তা করিনি। জল সবুজে প্রকল্পের আওতায় ঢাকা দক্ষিণের যে ১৯টি পার্ক ও ১২টি মাঠ আধুনিকায়ন করেছিলাম, তার মধ্যে একটি এই মাঠ। ইতিহাস সাক্ষী থাকবে যার যেমন পাওনা, যার যা সম্মান তাকে সেটা দিতে হবে। সমালোচনা না করে উন্নয়ন করা সম্ভব। জনগণ রয়েছে মূল্যায়ন করার জন্য। তিনি বলেন, এই শহরের ২ কোটি মানুষের ৪ কোটি চোখ রয়েছে, এই ৪ কোটি চোখ ফাঁকি দেওয়া কারো পক্ষে সম্ভব না। আমি কোথাও কোনো নাম পরিবর্তন করিনি, আগের নামে রয়েছে। আমি কাজ শুরু করে দিয়ে গেছি, পরবর্তীতে যিনি এসেছেন তিনি সম্পূর্ণ করেছেন আমি তাকে ধন্যবাদ দিতে চাই। সম্মান যদি কেউ চায়, সে যেন আরেকজনকে সম্মান করে।
অনুষ্ঠানে খাদ্যসামগ্রী বিতরণের আগে ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে প্রাণপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী আপনাদের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য পাঠিয়েছেন। যাতে আপনাদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হয়। আপনাদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিসহ, আমাদের পুলিশের কর্মকর্তাসহ এই সমস্ত খাদ্যদ্রব্য আমরা আপনাদের হাতে তুলে দিচ্ছি। ইনশাআল্লাহ অল্প সময়ের মধ্যে দ্রব্যমূল্য নাগালের মধ্যে চলে আসবে। যতদিন না নাগালের মধ্যে আসছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার কর্মীরা আপনাদের পাশে থাকবে।