চট্টগ্রামে বেশ কিছুদিন ধরে সবজি, মাছ ও মাংসের দামের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা গেছে। নগরীর প্রায় সব কাঁচাবাজারের চিত্র এমনই। লাগামহীনভাবে নিত্যপণ্যের এমন দাম বৃদ্ধির কারণে ক্রেতাসাধারণের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা
যায় ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সরবরাহ কমে যাওয়ায় সবজি, মাছ, মাংস ও ডিম এসব ভোগ্যপণ্যের দামের উপর প্রভাব ফেলেছে। গতকাল নগরীর চকবাজার, অক্সিজেন, বহদ্দারহাট, আতুরার ডিপো, কাজীর দেউড়ি, কর্ণফুলী কমপ্লেক্স, খাতুনগঞ্জ, রিয়াজউদ্দিন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। জানা যায়, কয়েক সপ্তাহ ধরে সোনালী মুরগির দাম বাড়তি। ক’দিন আগেও যে মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৭০ টাকায়, সেই মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাছের দামও। চকবাজার বাজারের মুরগী বিক্রেতা মোহাম্মদ আবুল বশর বলেন, বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে মুরগির দাম লাগামহীন। কিছুদিন গরম ছিল, তখন ফার্মে মুরগি মারা গেছে। এরপর আবার ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব। তাই কমেছে সরবরাহ। আরও কিছুদিন বাড়তি দামেই মুরগি বিক্রি করতে হবে। গত সপ্তাহে কিছু সবজির দাম কমলেও এ সপ্তাহে বরবটি, টমেটো, কাঁচামরিচসহ দাম বেড়েছে বেশ কয়েকটি সবজির। বাজার ঘুরে দেখা যায়, কয়েকদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা বেড়ে দাম দ্বিগুণ হয়েছে বরবটির। কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে টমেটো ৮০ টাকা এবং ২০ টাকা বেড়ে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ। মিষ্টি কুমড়া ও লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ঢ্যাঁড়শ ও চিচিঙ্গা। শসা ও পটল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। করলা, বেগুন, আলু ও ঝিঙে ৬০ টাকা। লতি ও কচুর ফুল ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সোনালি মুরগির দামে ট্রিপল সেঞ্চুরি। ২৮০ টাকা কেজি সোনালি মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৬০ টাকায়। আর ব্রয়লার ২০০ থেকে ২২০ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি আর খাসি ১১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে রুই মাছ ২৬০ টাকা থেকে ৩৬০ টাকা, কাতলা ৩২০ টাকা থেকে ৩৬০, মৃগেল ২০০-২৫০, পাঙ্গাস ১৮০ টাকা থেকে ২২০, তেলাপিয়া ১৮০ টাকা থেকে ২০০, স্যালমন ফিশ ৪৫০, বাগদা চিংড়ি ৮০০, রূপচাঁদা জাত ও আকারভেদে ৫৫০ টাকা থেকে ৭০০, পোয়া মাছ ২৫০, পাবদা ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০, সুরমা ৩৫০ টাকা থেকে ৬৫০, টেংরা ৩৭০ টাকা এবং নারকেলি মাছ ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিম প্রতি ডজন ১৫০ টাকা। খাতুনগঞ্জে ৪০-৬০ টাকা কমে জিরা ৬৬০ টাকা, ১২০ টাকা কমে লবঙ্গ ১৩০০ টাকা এবং ৫ টাকা কমে দারুচিনি ৩৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে গোল মরিচের দাম। খাতুনগঞ্জে ৮২০ টাকা থেকে ৮৩০ টাকা কেজি দরে পণ্যটি বিক্রি হয়েছে। এখনও বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে হলুদ, এলাচ, গোলমরিচ এবং আদা। গত বৃহস্পতিবার হলুদ ২৬০ টাকা, এলাচ ৪ হাজার ২০, আদা ২২০, রসুন ১৯০ টাকা কেজি দরে পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে খাতুনগঞ্জে। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দীন জানান, খাতুনগঞ্জে সব ধরনের মসলা যথেষ্ট আমদানি হয়েছে। তাই এখন সরবরাহ বেশি থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে। কোরবানির ঈদে মসলা সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই।