অনেক বাবা-মা অভিযোগ করেন শিশুরা খাওয়ানার সময় নানা বায়না করে। কিছুকেই খেতে চায় না অনেক শিশুই পাতের খাবার শেষ না করেই উঠে পড়ে অনেকে। তাতে সন্তানের শরীরে পুষ্টির অভাব তো হবেই। তা ভেবে দুশ্চিন্তায় থাকেন মায়েরা। কারণ জানা জরুরি : জোর করে খাওয়ালে কোনো পুষ্টিই লাগবে না সন্তানের শরীরে। উল্টো বমি হয়ে গিয়ে সব চেষ্টাই জলে যেতে পারে। তাই সন্তান কেন খেতে চাইছে না আগে তা খতিয়ে দেখতে হবে। আপনার সন্তানের খেতে না চাওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ হতে পারে খিদে না পাওয়া। সেজন্যই হয়তো খাবার নেড়েচেড়ে পাত ছেড়ে উঠে পড়ে সে। খাওয়ার সময় টিভি বা খেলনা থাকলেও কিন্তু শিশুর খাবারের থেকে মন উঠতে পারে। তাই খাওয়ানোর আগে এসব দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখুন। ?পরিমাণের দিকে নজর দিন : একসঙ্গে অনেকটা খাবার খেতে দেবেন না শিশুকে। তাতে কোনো দিনই খাবারের প্রতি আগ্রহ বোধ করবে না তারা। বরং দিনে তিনটি বড় মিল এবং দুইবার স্ন্যাকস দিন নিয়ম করে। আসলে বাচ্চাদের প্রতি ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা অন্তর অন্তর অল্প কিছু খাওয়ানো উচিত। এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পানের দিকেও নজর দিতে হবে। তাতেই সন্তানের ডায়েটে ব্যালেন্স থাকবে। পেটও ভরবে পুষ্টিকর খাবারে।
পাতে আনুন পরিবর্তন : সন্তান বড় হতে থাকলে তার স্বাদেও নানা পরিবর্তন আসে। মিষ্টি জাতীয় খাবার ছেড়ে একটু মশলাদার খাবার খাওয়ার ইচ্ছে জাগে। সেখানে আপনি যদি রোজই সেই সিদ্ধ ভাত তার মুখের সামনে ধরেন, খাবারে অরুচি তো হবেই। তাই খাবারের মেনুতে মাঝেমধ্যে একটু অদলবদল করতেই হবে। রোজ একঘেঁয়ে রান্না না করে ভিন্ন ভিন্ন খাবার রাখুন পাতে। অবশ্যই সেসব খাবার পুষ্টিকর হতে হবে। এই পুষ্টি ও স্বাদের সংমিশ্রণে দেখবেন সন্তানের পাত ফাঁকা হয়েছে নিমেষে।
এই দিকে খেয়াল রাখুন : আমরা সকলেই দেখেছি, বাচ্চাদের বিশেষ করে বড়দের খাবারের প্রতি বেশ আগ্রহ থাকে। নিজের পাত ছেড়ে তারা বাড়ির বড়দের পাতেই উঁকি ঝুঁকি মারে বেশি। এমনকী তাদের সামনে বড়রা কিছু খেলে তারা সেগুলো খাওয়ার বায়না জুড়ে দেয়। তাই এক টেবিলে বসে খেতে হলে চেষ্টা করুন সন্তান যা খাচ্ছে, সেই খাবারই পেট ভরাতে। তবেই সন্তানের নিজের খাবারেও মন ও পেট ভরবে।
এসব ভুল করবেন না ভুলেও? : সন্তান খাওয়ার সময় জেদ করবেই। এমন বাচ্চা খুব কমই রয়েছে, যারা খাওয়া নিয়ে ঝামেলা করে না। তবে তাই বলে আপনি খড়গহস্ত হবেন না। বাচ্চাকে বকঝকা করে বা মেরে কিন্তু খাওয়ানো যায় না। বরং গান গেয়ে, ছড়া বলে নানা কৌশলে খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। তাতেই কাজ হবে। আর খাওয়ানোর সময় সন্তানের চিল চিৎকারে পাড়া-পড়শির ঘুমও ভাঙবে না।
সন্তানকে বোঝার চেষ্টা করুন? : সন্তানকে পেট ভরে খাওয়ানোর জন্য তার খাদ্যাভ্যাসও কিন্তু বুঝে নিতে হবে। সে কেমন খাবার খেতে পছন্দ করে, কতটা পরিমাণ তার জন্য সঠিক, এগুলো জেনে নিতে হবে আগে। তবেই তার পছন্দমতো খাবার পাতে দিতে পারবেন। তাতে পেট ও মন দুটোই ভরবে সন্তানের। ঘাটতি হবে না পুষ্টিতেও। সারাদিন খুব বেশি স্ন্যাকস ও পানীয় খেলেও কিন্তু সন্তানের পেট ভর্তি থাকতে পারে। তখন খাবারে অরুচি তো হবেই। তাই মিলের আগে পরে বাচ্চার স্ন্যাকিংয়ের সময় কমিয়ে দিন। তাতেই ভরপেট খেতে পারবে সন্তান।