ঢামেক থেকে শিশু চুরি

উদ্ধারে মাঠে নেমেছে পুলিশ

প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) ২১২ নম্বর লেবার ওয়ার্ড থেকে গত মঙ্গলবার যে সদ্যজাত শিশু চুরি হয়েছে, তাকে উদ্ধারে মাঠে নেমেছে পুলিশের একাধিক টিম। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাজিরুর রহমান। গতকাল এ তথ্য জানান তিনি। যদিও এখন পর্যন্ত ওই শিশুর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। গত মঙ্গলবার যে দম্পতির নবজাতক চুরি হয়েছে, তাদের নাম শরিফুল ইসলাম ও সুখী বেগম। তারা ঢাকার ধামরাই উপজেলার কালামপুর এলাকার ভাড়াটিয়া। জানা যায়, গত সোমবার (৩ জুন) রাতে সুখীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরের দিন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দুই যমজ মেয়ের জন্ম দেন তিনি। তাদের একটি ছেলে সন্তানও আছে। নতুন জন্ম নেওয়া দুই যমজের মধ্যে এক নবজাতকই সন্দেহভাজন সেই নারী নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ শরিফুল-সুখী দম্পতির।

সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, কালো বোরখা ও কমলা রঙের ওড়না পরিহিত এক নারী শিশুটির দাদির সঙ্গে আলাপ করছেন। পরে সদ্যজাত যমজদের মধ্যে একজনকে তিনি কোলের নেন। পরে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের একটি কাগজ দেখিয়ে শিশুটিকে নিয়ে ওই নারী পালিয়ে যান।

গত মঙ্গলবার হাসপাতালের ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে সুখী বেগমকে তার এক সন্তানসহ দেখা যায়। তাকে তার অপর সন্তানের কথা জিজ্ঞেস করতেই কেঁদে ওঠেন। তিনি বলেন, আমার বাচ্চা হারিয়ে গেছে। আমাকে আমার স্বামী ও স্বজনরা জানায়নি। ওয়ার্ডে অন্য লোকদের মুখে জানতে পারি আমার একটি বাচ্চাকে চুরি করে নিয়ে গেছে। এতে কষ্ট করে দুটি বাচ্চাকে ৯ মাস পেটে রেখেছি। এখন জন্মের পর যদি একজন মা জানতে পারে একটি বাচ্চা চুরি হয়েছে, তখন তার কেমন লাগে? যে করেই হোক আমার সন্তানকে আমি ফিরে পেতে চাই।

সুখীর স্বামী শরিফুল ইসলাম বলেন, সন্তানদের জন্মের সময় তার মা হাসিনা বেগম সঙ্গে ছিলেন। যমজ বাচ্চা হওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান, তাদের নবজাতকের এনআইসিইউতে রাখতে হবে। তখন থেকেই ওই নারী আমাদের সাথে কথা বলতে শুরু করেন। আমার বাচ্চাকে কোলে নিয়ে ২১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে যান। তিনি আমার মায়ের সঙ্গে আলাপ করেছিলেন। তিনি তো কিছু বোঝেন না। এই সুযোগে ওই নারী আমার সন্তান নিয়ে পালিয়ে যান।

নবজাতকদের দাদি হাসিনা বেগম জানান, কালো রঙের বোরখা পরা এক নারী ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে ঢোকার সময় বারান্দায় আমার সঙ্গে গল্প শুরু করে। একপর্যায়ে আমার কোলে থাকা এক নাতনিকে কোলে নেয়। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাইনি।

ওসি মোস্তাজিরুর রহমান বলেছেন, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে একজন নারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। যাকে শনাক্ত করা হয়েছে, তিনি আগে থেকেই হাসপাতালে অবস্থান করছিলেন। গাইনি ওয়ার্ডে নবজাতকের স্বজনদের সঙ্গে সখ্য হওয়ার সুযোগে সদ্যজাত শিশুটিকে চুরি করে পালান তিনি। বাচ্চা চুরির ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশের একাধিক টিম শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ করছে।