প্রশাসনের যোগসাজশ

ঈদগাঁওয়ে অবৈধভাবে পশুর হাট বসানোর পাঁয়তারা

রাজস্ব বঞ্চিত হবে সরকার

প্রকাশ : ১০ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

প্রতিবারের ন্যায় এবারও ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলাজুড়ে ছয়টির অধিক অবৈধ পশুর হাট বসানোর তোড়জোড় শুরু করেছেন প্রভাবশালীরা। আর এ কাজে মদদ দিচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। এরই মধ্যে ঈদগাঁওয়ের কয়েকটি স্থানে খুঁটি গেঁড়ে জায়গা দখল প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ঈদগাঁওতে পশুর একটি বৈধ হাট রয়েছে, সেটি হলো ইজারাদার রমজানুল আলম পরিচালিত ঈদগাঁও বাজার। যেটি কক্সবাজারের দ্বিতীয় বৃহৎ পশুর হাট। একমাত্র এ পশুর হাট এখন জমে ওঠার অপেক্ষায়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গরু, মহিষ নিয়ে আসা ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা দুয়েক দিনের মধ্যে বাজার জমে উঠবে।

জানা যায়, প্রতি বছর বাংলা সনে ঈদগাঁও বাজার, কালীর ছড়া বাজার,, শাহ ফকির বাজার ইসলামপুর বাজার, নতুন অফিস বাজার সরকারিভাবে নিলাম হয়। সর্বোচ্চ করদাতাদের বাজার বুঝিয়ে দেয়ার সময় ইজারাদারের সাথে ইউএনও’র করা চুক্তিনামায় ১৬ নম্বর কলামে স্পষ্ট করে বলা আছে- ‘কোনোইভাবে পশুর হাট বসানো যাবে না’ কিন্তু চুক্তিনামা ভঙ্গ করে কয়েকজন ইজারাদার উপজেলা প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে পশুর হাট বসানোর পাঁয়তারা চালাচ্ছে।

জানা গেছে, প্রতি বছরই কোরবানির ঈদের সময় ঘনিয়ে এলে ঈদগাঁওয়ে অবৈধ হাট না বসাতে নির্দেশনা দেয় জেলা প্রশাসন। কিন্তু বাস্তবে তাদের এই নির্দেশনা তোয়াক্কা না করে অবৈধ পশুর হাট বসায় রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা। স্থানীয় সচেতন মহল জানিয়েছেন, উপজেলা প্রশাসনের নির্লিপ্ততার সুযোগে যততত্র বসে এসব অবৈধ পশুর হাট। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি, জামায়াতের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের একই কাতারে দেখা যায়। এবারও ব্যতিক্রম নয়। এসব প্রভাবশালীরা অবৈধ হাট বসানোর তোড়জোড় শুরু করেছেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এসব প্রভাবশালীরা ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছে। এসব টাকা তুলেছে অফিসের কয়েকজন সহকারী। উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের নতুন অফিস বাজার, ইসলামপুর বাজার, পোকখালী গোমাতলী বাজার, বাংলা বাজার, ঈদগাঁও কালীর ছড়া বাজার, ইসলামাবাদ শাহ ফকির বাজার, ডান্ডি বাজারসহ বেশ কিছু জায়গায় অবৈধ পশুর হাট বসানোর তৎপরতা চলছে।

স্থানীয়রা জানান, এসব যত্রতত্র পশুর হাট বসলে সরকার বিপুল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। এসব পশুর হাট বন্ধের জোর দাবি জানান জেলা প্রশাসকের কাছে।

খোঁজখবর ও প্রাপ্ত তথ্য জানা যায়, ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দেয়া ১৪৩১ বাংলা সনের হাট বাজার ইজারা চুক্তিনামায় ঈদগাঁও বাজারে পশুর হাট বসানোর নির্দেশনা রয়েছে। আগামী ১৭ জুনের ঈদকে সামনে রেখে অবৈধ পশুর হাটের নেপথ্যে রয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের আস্কারায় পশুর হাট বসানোর তোড়জোড় চলছে পুরো উপজেলা জুড়ে। আর সরকারি দলের এই নেতাকর্মীদের অবৈধ পশুর হাট বসাতে সহায়তা করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

গতকাল বিকালে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবল চাকমার বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। স্থানীয় চেয়ারম্যানদের এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। একপর্যায়ে ব্যস্তততা দেখিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।