ঢাকা ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুট

‘স্পেশাল ট্রেন’ চলাচল শুরু

‘স্পেশাল ট্রেন’ চলাচল শুরু

টানা ১২ দিন বন্ধ থাকার পর আবারও চলাচল শুরু করেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে স্পেশাল ট্রেন। গতকাল সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম থেকে যাত্রা দেয়া এই ট্রেন শতভাগ যাত্রী নিয়ে সকাল ১০টা ২০ মিনেটে কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনে এসে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্টেশন মাস্টার মো. গোলাম রব্বানি।

তিনি জানান, স্পেশাল ট্রেনটি সন্ধ্যা ৭টায় যাত্রী নিয়ে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা হবেন, যা রাত ১০টা ২০ মিনিটে চট্টগ্রামে গিয়ে পৌঁছবেন। এই স্পেশাল ট্রেন ঈদের পরবর্তী এক সপ্তাহ বা ২৪ জুন পর্যন্ত চলাচল করবে।

এর আগে গত এপ্রিল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে স্পেশাল ট্রেনটি চালু করেছিল রেল বিভাগ, যা গত ২৯ জুন এসে বন্ধ করে দেয়া হয়। ইঞ্জিন ও লোকো মাস্টার সংকটকে এই ট্রেন বন্ধের কারণ হিসাবে দেখিয়ে ছিল কর্তৃপক্ষ। তবে অভিযোগ রয়েছে, বাস মালিকদের চাপেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

যাত্রীসহ সচেতন মহলের দাবি, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার যাতায়াতে সড়কই ছিল একমাত্র পথ। বিমান এবং নৌ যোগাযোগ নেই। সময় ও অর্থ সাশ্রয়, নিরাপদ এবং আরামদায়ক এই বিবেচনা ট্রেনের এই স্পেশাল সার্ভিসটি জনপ্রিয়তা পায় ব্যাপক। এই সড়কপথে ১৪৫ কিলোমিটার দুরত্ব। যেখানে বাসে সময় লাগে ৫ ঘণ্টার কাছা-কাছি। নন এসি বাসে ৪২০ টাকা, এসি বাসে ১ হাজার টাকা ভাড়া নেয়া হয়। এর বিপরীতে ট্রেনে নন এসি শোভন চেয়ারের ভাড়া ২৫০ টাকা, এসি স্নিগ্ধা চেয়ারের ভাড়া ৪৭০ টাকা। ট্রেনে যেতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট।

প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ঢাকা-কক্সবাজার চালু থাকা দুইটি ট্রেনে চট্টগ্রামের জন্য বরাদ্দ মাত্র ২৩০টি সিট। অর্থাৎ প্রতিদিন চট্টগ্রামের ২৩০ যাত্রী দুটি ট্রেনে যাতায়তের সুযোগ পেয়ে ছিল। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন চালু করা হয়। ট্রেনটি ৭০৫টি সিট ছিল। রেল কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য মতে, এই ট্রেনটি ছিল লাভজনক। ৮ এপ্রিল চালু হওয়া এই ট্রেন থেকে ৫ মে পর্যন্ত মোট ২৫ দিনে ৫১ লাখ ২৫ হাজার ৩৬২ টাকার রাজস্ব আয় হয়, যা প্রতিদিনে ২ লাখ টাকার বেশি। অথচ চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে মহানগর এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেনটি এপ্রিল মাসের ৩০ দিনে আয় করেছে ৫০ লাখ টাকা। কিন্তু উল্টো লাভজনক ট্রেনটি বন্ধ নিয়ে অভিযোগের জেন শেষ নেই।

এর ফলে বাস মালিকদের ‘প্রেসক্রিপশনে’ কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন বন্ধ করা হয়েছে অভিযোগ করে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

বিবৃতিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে যাত্রীরা যখন এই ট্রেনে নিয়মিত যাতায়াত করছিলেন, তখন বাস মালিকরা একে একে সব পরিবহণে যাত্রী সংকট দেখা দিলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে যাত্রী প্রতি বাস ভাড়া ১০০ টাকা পর্যন্ত কমিয়ে আনে। এর পরই বন্ধ ঘোষণা করা হয় এই সার্ভিসটি। গত ২৭ মে প্রথম বাসভাড়া কমায় সৌদিয়া পরিবহন। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পর্যন্ত তাদের সরাসরি বাসভাড়া ছিল নন এসি ৪২০ টাকা; এখন তা ৩৩০ টাকা। পুরবী পরিবহনও ভাড়া কমিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ভাড়া ৩২০ টাকা বিক্রি করছে। এই নিয়ে আলোচনার-সমালোচনার মধ্যেই ১২ দিন পর আবারও স্পেশাল ট্রেন চালু হয়েছে। এটি বন্ধ না করে ধারাবাহিক করার দাবি যাত্রীদের।

কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনের মাস্টার মো. গোলাম রব্বানি বলেন, ভবিষ্যতে আরো সুযোগ-সুবিধা বাড়বে। এ ছাড়া ট্রেনের সংখ্যা বাড়তে পারে। যাত্রী সেবারমান কীভাবে আরো বাড়ানো যাবে এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ বেশ আন্তরিক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত