ঢাকা ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চট্টগ্রামে পাহাড়ধসের আশঙ্কা

ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে মাইকিং

* সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর এবং নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত
ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে মাইকিং

চট্টগ্রামে পাহাড়ধসের আশঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে মাইকিং করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। গত বুধবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম নগরের ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসরকদের সরিয়ে আসতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্রমতে, বর্ষা মৌসুমের শুরুতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। কোথাও বৃষ্টি না হলেও আকাশ মেঘলা হয়ে আছে। এ কারণে সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর এবং নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। একই কারণে সাগরে সৃষ্টি হয়েছে গভীর মেঘমালা। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকাসহ সমুদ্রবন্দর এবং নদীগুলোর উপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে নগরীর সবকটি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এছাড়া পাহাড়ের আশপাশের স্কুল, কলেজ মসজিদ, মাদ্রাসাগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) তানভীর-আল-নাসিফ বলেন, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর উপর দিয়ে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর ৩ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পাহাড়ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণে সকাল থেকে মাইকিং করে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসকারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, গত মঙ্গলবার রাত থেকেই চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মানুষের জানমাল রক্ষার্থে ছয়জন সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে মানুষের জানমাল রক্ষায় জেলা প্রশাসনের কয়েকটি টিম কাজ করছে। মাইকিং থেকে শুরু করে মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে সরে যেতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। নগরীর আকবরশাহ ঝিল ১, ২ ও ৩ নম্বর এলাকা, বিজয়নগর পাহাড়, শান্তিনগর পাহাড়, বেলতলীঘোনা পাহাড় থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। তিনি বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাবার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের স্ব স্ব এলাকায় নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি সুসমন্বয়ের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সব উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্টসহ সব স্বেচ্ছাসেবী দলকে সক্রিয় রাখা হয়েছে। বাকলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার ভূমি এ এফ এম শামীম জানান, বাকলিয়া বন্দর এলাকায় বিকাল থেকে মাইকিং করা হয়েছে নদী এবং নদীর পাড়ের লোকজন যেন সতর্ক থাকে এবং যেন নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়। আগ্রাবাদ সার্কেলের সহকারী কমিশনার ভূমি আব্দুল্লাহ খায়রুল ইসলাম চৌধুরী জানান, লালখান বাজার পোড়া কলোনি বস্তি এলাকা, ঢেবারপাড়, আমবাগান-সংলগ্ন পাহাড়ে বসবাসরত বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে। এছাড়া উত্তর হালিশহর সংলগ্ন সমুদ্রপাড়ের নিকটে বসবাসকারী মানুষজনকে বাসস্থান খালি করতে মাইকে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে কাউন্সিলরের সাথে যোগাযোগপূর্বক আশ্রয়কেন্দ্র ও স্কুলগুলোকে দুর্যোগকালীন সময়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। নগরীর চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইউসুফ হাসান জানান, নগরীর টাংকির পাহাড় এবং আমিন জুট মিল এলাকা, পাহাড়িকা, সমবায় আবাসিক, সমসামিত গৃহ নির্মাণ, মিয়ার পাহাড়, মুরাদপুর রেলস্টেশন-সংলগ্ন রেলওয়ের পাহাড় ও আশপাশে মাইকিং করা হচ্ছে এবং এসব এলাকার সংলগ্ন একাধিক স্কুল ও মাদ্রাসাকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিমরান মোহাম্মদ সায়েক জানান, আকমল আলী ঘাটসহ পতেঙ্গার বিভিন্ন অংশে মাইকিং করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত