ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মৌসুমেও মেঘনায় ইলিশ কম হতাশ জেলেরা

নদীতে নেমে জ্বালানি খরচ উঠছে না
মৌসুমেও মেঘনায় ইলিশ কম হতাশ জেলেরা

চাঁদপুর নৌ-সীমানায় মৌসুম শুরু হলেও পদ্মা-মেঘনা নদীতে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। দিন ও রাতে নদীতে চষে বেড়ালেও জ্বালানি খরচ উঠছে না জেলেদের। স্থানীয় রূপালী ইলিশের আমদানি না থাকায় নদী উপকূলীয় অধিকাংশ আড়তের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধে হয়ে যাচ্ছে। তবে এখন পুরো ভর মৌসুমে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানালেন ইলিশ ব্যবসায়ী ও মৎস্য বিভাগ। ঈদুল আজহা পরবর্তী সময়ে জেলা সদরের মেঘনা উপকূলীয় জেলে পল্লী ও আড়তগুলোতে ঘুরে এবং জেলেদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। জেলা মৎস্য বিভাগের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, পদ্মা-মেঘনা নদীর চাঁদপুর নৌ সীমানার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত ৪৪ হাজার জেলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। বছরে দুটি সময় অর্থাৎ জাটকা এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ সময়ে তাদের প্রণোদনা দেয়া হয়। এছাড়া এসব জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়ে থাকে।

সদর উপজেলার হরিণা ও আখনেরহাট মাছঘাটে গিয়ে দেখাগেছে অধিকাংশ ইলিশের আড়ত বন্ধ। ইলিশের আমদানি না থাকায় অনেক আড়তে ব্যবসায়ীরা অবসর সময় কাটাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ আড়তেই ঘুমিয়ে আছেন।

হরিণা মাছঘাটের ব্যবসায়ী নেছার ছৈয়াল বলেন, নদীতে এখন মাছ কম। যে কারণে ব্যবসায়ীরা অনেকেই অবসর সময় কাটাচ্ছেন। তবে নদীতে পানি বাড়লে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি আল্লাহর ইচ্ছা। আখনের হাটের আড়তদার শহীদ সরদার বলেন, ইলিশের আমদানি না থাকায় ১১ আড়তের ছয়টি বন্ধ হয়ে গেছে। মৌসুমে সঠিকভাবে জাটকা সংরক্ষণ না হওয়া ইলিশ নদীতে কমেছে। আবারও জেলেরা নদীতে নামলে জালের প্রকারভেদ নিয়ে নৌ পুলিশের হয়রানিতো আছেই।

সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের গোবিন্দিয়া গ্রামের জেলে জাকির হোসেনের বলেন, তার নৌকায় তিনিসহ পাঁচজন জেলে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মেঘনায় ইলিশ ধরতে জাল ফেলেন। দুপুরে ফিরেছেন হরিণাঘাট আড়তে। ছোট-বড় ছয়টি ইলিশ নিয়ে, বিক্রি করে পেয়েছেন মাত্র ১ হাজার টাকা। এতে তাদের জ্বালানি খরচও উঠে না। চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মানিক জমাদার বলেন, নদীতে নাব্যতা সংকটসহ নানা কারণে নদীতে ইলিশের বিচরণ কম। এসব সমস্যা সমাধানে এগিয়ে না আসলে ইলিশের প্রাপ্যতা কমতে থাকবে। গত কয়েক বছর স্থানীয় ইলিশের উৎপাদন ক্রমান্বয়ে কমে আসছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম বলেন, চাঁদপুর নৌ-সীমানার সদরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে আমরা বছরজুড়ে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করছি। বিশেষ করে জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় আমরা জেলেদের সচেতন করে আসছি। এ বছর জাটকা সংরক্ষণ সফল হয়েছে। আগামী মৌসুমে এটির সুফল পাবে জেলেরা। তারপরও নদীতে চর জেগে উঠা, নদীর পানি দূষণ ও ইলিশের খাদ্য হ্রাস পাওয়ায় মিঠা পানিতে ইলিশের বিচরণ কম। তবে ভর মৌসুমে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত