ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শিক্ষার্থীদের কর্মযোগ্যতা বৃদ্ধির আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর

শিক্ষার্থীদের কর্মযোগ্যতা বৃদ্ধির আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর

দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কর্মযোগ্যতা বৃদ্ধিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে উপাচার্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। গতকাল রোববার ৪৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি। মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে শিক্ষা ও গবেষণা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের শিক্ষার্থীরা কর্মযোগ্যতায় অন্যান্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিষয়ভিক্তিক জ্ঞানের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সরাসরি সংযোগ ঘটাতে হবে। তাদের দিতে হবে কর্মক্ষেত্রের উপযোগী দক্ষতা।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার সেন্টারের মাধ্যমে বেসিক ডিজিটাল লিটারেসি, প্রয়োজনীয় সফট স্কিলস, ভাষা শিক্ষা ও যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি নবপ্রতিষ্ঠিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জেলার সরকারি কলেজগুলোকে অধিভুক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর পরামর্শ দেন। এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে অবকাঠামো এবং নতুন বিভাগ না খোলারও পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী। অধিভুক্ত কলেজের স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য অ্যাকাডেমিক মনিটরিংসহ প্রয়োজনীয় শিক্ষা অবকাঠামো গড়ে তোলারও আহ্বান জানান তিনি। শিক্ষামন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে কারিকুলামে বৈচিত্র্য নিয়ে আসা, শিক্ষকদের দিয়ে অ্যাকাডেমিক মাস্টার প্ল্যান তৈরি, ল্যাব ও অবকাঠামো সুবিধা বিনিময় করা, গবেষণার ফলাফল বাধ্যতামূলকভাবে প্রকাশের ব্যবস্থা এবং নিজস্ব র‍্যাংকিং ব্যবস্থা চালুর পরামর্শ দেন। ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, প্রফেসর ড. হাসিনা খান, প্রফেসর ড. মো. জাকির হোসেন, সচিব ড. ফেরদৌস জামান। অনুষ্ঠানে প্রফেসর আলমগীর বলেন, ‘গুণগত শিক্ষা, গবেষণার মানোন্নয়ন, উদ্ভাবন, শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সেতুবন্ধন তৈরি এবং বিদেশি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য অ্যানুয়াল পারফরম্যান্স অ্যাগ্রিমেন্ট (এপিএ) বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি সরকারের অন্যান্য কমিশনের মতো করে ইউজিসির স্বতন্ত্র বাজেট বরাদ্দ, বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত দাফতরিক বিষয় নিষ্পতির জন্য ইউজিসির মাধ্যমে সরাসরি আচার্যের কার্যালয়ে পাঠানো, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেট বৃদ্ধি করা, ১ নম্বর গ্রেডপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকদের পদমর্যাদা বৃদ্ধি, নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষদের জন্য নতুন গাড়ি ক্রয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২০ শতাংশ ব্যবহার কমানোর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া, সমহারে পিএচডি ইনক্রিমেন্ট সুবিধা দেওয়া, পিএল একাউন্টে যুক্ত না করে বিদ্যমান পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্ট পরিচালনার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর প্রতি মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সভায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা নতুন পেনশন স্কিম নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অবস্থান শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এপিএ বাস্তবায়নে প্রথম স্থান অর্জনকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং তৃতীয় স্থান অর্জনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সার্টিফিকেট ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান। কমিশনের অতিরিক্ত পরিচালক ও এপিএর ফোকাল পয়েন্ট বিষ্ণু মল্লিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ৫৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ইউজিসির পরিচালক, ৪৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তাসহ ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত