বাহারি রঙের ঢেউটিন ও কাঠ দিয়ে হাঁস-মুরগির দৃষ্টিনন্দন ঘর তৈরি করে দারিদ্র্যকে জয় করেছেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পুরাতন চৌয়ারা বাজার এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম। জমিজমা তেমন একটা না থাকলেও সাইফুলের অদম্য চেষ্টায় হাঁস-মুরগির ঘর তৈরির মাধ্যমে অভাব থেকে মুক্তি মিলেছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রঙিন ঢেউটিন এবং কাঠ দিয়ে হাঁস-মুরগির ঘর তৈরি করছেন সাইফুল ইসলাম। তাকে সহাযোগিতা করেন তার দুই ছেলে সাকিব ও রাকিব। সচ্ছলতা এসেছে সাত সদস্যের পরিবারে। সাইফুলের সফলতা দেখে পুরাতন চৌয়ারা বাজার এলাকায় বেশ কিছু নারী-পুরুষ কর্মসংস্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন বাহারি রঙের দৃষ্টিনন্দন হাঁস-মুরগির ঘর তৈরির কাজ। কাজ করার ফাঁকে সাইফুল ইসলাম জানান, প্রায় ২০ বছর ধরে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। একসময় একাই কাজ করতে হতো। এখন ব্যবসার পরিধি বেড়ে যাওয়ায় আমাকে সহাযোগিতা করে দুই ছেলে। চাহিদা থাকায় বিভিন্ন জায়গা থেকে হাঁস-মুরগির ঘর নিতে আসেন ক্রেতারা। প্রতিটি খাঁচা আকারভেদে ৫ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করি। প্রতিটি ঘরে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা লাভ হয়। এসব খাঁচা বিক্রি করে যা আয় হয়, তাই দিয়ে চলে আমার সংসার। সাইফুলের বড় ছেলে সাকিব বলেন, গ্রামে হাঁস-মুরগি পালন করতে হলে এসব ঘর লাগে। প্রত্যেক পরিবারে এসব ঘর থাকে। বর্তমানে চাহিদাও ভালো। আমাদের দেখাদেখি আশপাশের অনেকে এ কাজ শুরু করছেন। সদর দক্ষিণ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তানজিলা ফেরদৌসী বলেন, হাঁস-মুরগি পালনের জন্য এসব আয়তকার ঘর সবচেয়ে ভালো। কারণ, এগুলো পরিবেশবান্ধব। হাঁস-মুরগির ঘর পূর্ব পশ্চিমে লম্বালম্বি এবং দক্ষিণমুখী হলে ভালো হয়। তবে গ্রামগঞ্জে গ্যাবল টাইপ বা দোচালা ঘর এবং শেড টাইপ বা একচালা ঘর- এ দুই ধরনের হাঁস-মুরগির ঘর বেশি দেখা যায়। এ ধরনের ঘরের সুবিধা হচ্ছে যেকোনো প্রয়োজনে স্থানান্তর করা যায়। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবাইয়া খানম বলেন, উপজেলার এসব উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। তারা যদি একটি সমিতি গঠন করে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তাহলে সেই সমিতিকে নিবন্ধনের বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে। সমিতির নিবন্ধন হলে প্রতি বছর একটি আর্থিক অনুদান পাওয়ার সুযোগ থাকবে।