কে হচ্ছেন ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট?
প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গত মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর ইরানে নির্ধারিত সময়ের এক বছর আগেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামীকাল নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেবেন ইরানিরা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। এবার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে নিবন্ধিত ৮০ জনের মধ্যে ছয়জনের প্রার্থিতা অনুমোদন করেছে দেশটির আলেম ও আইনবিদদের নিয়ে গঠিত একটি প্যানেলগার্ডিয়ান কাউন্সিল। সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির তত্ত্বাবধানে এই কাউন্সিল গঠিত। এমনকি সরকার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা প্রেসিডেন্টকেও শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ নেতার কাছে জবাবদিহিতা করতে হয়। এবার নির্বাচনে চূড়ান্ত ছয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজনই কট্টরপন্থি। একজন মধ্যপন্থি।
মোহাম্মদ বাগের গালিবাফ : ইরানের বিপ্লবী গার্ডের সাবেক কমান্ডার এবং খামেনির মিত্র, গালিবাফ কট্টরপন্থি অধ্যুষিত পার্লামেন্টের বর্তমান স্পিকার। ৬২ বছর বয়সি গালিবাফ এর আগে দুবার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হয়েছিলেন এবং একবার ইব্রাহিম রাইসির পক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছিলেন। তেহরানের মেয়র হিসেবে রেকর্ড ১২ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০০৯ সালে মেয়রের দায়িত্ব নিয়েই তেহরানের রক্তক্ষয়ী অস্থিরতা দমনে সাহায্য করেছিলেন তিনি।
সাঈদ জালিলি : জালিলি একজন কট্টরপন্থি কূটনীতিক। ১৯৮০ দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধে গার্ডদের পক্ষে লড়াই করার সময় তিনি তার ডান পা হারিয়েছিলেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পিএইচডি অর্জন করা জলিলি ২০০৭ সাল থেকে ৫ বছরের জন্য সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৫৮ বছর বয়সি সাবেক এই উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ২০১৩ সালে এক্সপিডিয়েন্সি কাউন্সিলের সদস্য নিযুক্ত করেছিলেন খামেনি। স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রধান পারমাণবিক আলোচক জালিলি একবার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীও হয়েছিলেন।
মাসুদ পেজেশকিয়ান : ইরানের একমাত্র মধ্যপন্থি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী পেজেশকিয়ান। ৭০ বছর বয়সি পেশায় চিকিৎসক পেজেশকিয়ান পাঁচবার সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত সংস্কারপন্থি প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামির অধীনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০২২ সালে পুলিশের হেফাজতে ইরানি কুর্দি তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর বিষয়ে ইরান সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেন তিনি।
মোস্তফা পুরমোহাম্মদী : ছয়জন প্রার্থীর মধ্যে গার্ডিয়ান কাউন্সিল কর্তৃক অনুমোদিত একমাত্র ধর্মগুরু মোস্তফা পুরমোহাম্মদী। ২০০৫ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কট্টরপন্থি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের প্রথম মেয়াদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। ১৯৮৮ সালে ইরানের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ভিন্নমতাবলম্বী বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক বন্দীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে ভূমিকা রেখে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযুক্তের তালিকায় ছিলেন তিনি। ৬৫ বছর বয়সি পুরমোহাম্মদী অবশ্য এ অভিযোগের কোনো জবাব দেননি।
আলীরেজা জাকানি : গত ৩ বছর ধরে তেহরানের কট্টরপন্থি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ৫৯ বছর বয়সি আলিরেজা জাকানি। সাবেক এই আইন প্রণেতাকে ২০১৩ ও ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। বিপ্লবী গার্ডের একটি সহযোগী বাহিনী-বাসিজের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন তিনি। চার বার সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন জাকানি। রাইসিকে সমর্থনের জন্য ২০২১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছিলেন তিনি।
আমির হোসেন গাজিজাদেহ-হাশেমী : বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং শহিদ ফাউন্ডেশনের প্রধান গাজিজাদেহ-হাশেমি একজন কট্টরপন্থি রাজনীতিবিদ। ২০২১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরেছিলেন তিনি। ৫৩ বছর বয়সি হাশেমি পেশায় নাক, কান, গলার গলার সার্জন। এর আগে চারবার সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।