ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

ছেলের স্বপ্নপূরণে সফল উদ্যোক্তা হলেন বাবা

ছেলের স্বপ্নপূরণে সফল উদ্যোক্তা হলেন বাবা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ফৌজদারহাট এলাকার সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান আদনান চৌধুরী। ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনে চলে যান। সেখানে এলএলবি শেষ করে দেশে এসে বেসরকারি একটি চাকরিতে সম্পৃক্ত হন। ২০১৯ সালে কোরবানি উপলক্ষ্যে তার একমাত্র ছেলে জাইরিস ইজান চৌধুরী আবদার করে বসেন ছাগলের জন্য। একমাত্র সন্তানের যে কোনো আবদার মেটাতে বাবা সর্বদাই প্রস্তুত। নিয়ে আনলেন দুটি ছাগল। ঘটনাক্রমে ছাগলগুলো দিয়ে দেয়া হয়নি কোরবানি। এর মধ্যে কিছুদিন পর বাচ্চা দেয় একটি ছাগল। ছাগলছানা ও ছাগলের প্রতি মায়ায় বেড়ে যায় বাবা-ছেলের। একপর্যায়ে আরো বিভিন্ন জাতের বিদেশি ছাগল কিনতে থাকেন তিনি। পুরো দমে শুরু করলেন ছাগলের খামার। বর্তমানে তার সফলতায় এলাকার মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। আর এই সফলতার পেছনে তিনি কোনো দিন কারো থেকে সহযোগিতা নেননি। ইউটিউব ও গুগল থেকে সহযোগিতা নিয়েছেন। ২০২২ সালের একদিন একটি ফ্যামিলি নিয়ে ভ্রমণে যান গাজীপুরের একটি রির্সোটে। সেখানে একটি খামারে দেখতে পান দুম্বা পালন। ওই রিসোর্টের মালিকের কাছে দুম্বা পালনের সফলতার গল্প শুনে ছাগলের পালনের পাশাপাশি আগ্রহ জাগে দুম্বা পালনের। ওখান থেকে কয়েকটি দুম্বা কিনেন। দুম্বাগুলো মূলত তার্কি, অ্যারাবিয়ান ও পার্সিয়ার জাতের। এভাবেই আস্তে আস্তে গড়ে তুলেছেন বিশাল এক খামার। খামারে যে ছাগলগুলো রয়েছে অধিকাংশ ছাগল বিদেশি জাতের। আদনান চৌধুরী ওই খামারের নাম দিয়েছেন ইউনিক গট টার্ম। কিন্তু একজন সম্ভ্রান্ত পরিবারে ছেলে ও লন্ডন থেকে এলএলবি পাস করে দেশে এসে ছাগলের ব্যবসা, তা মোটেও ভালো চোখে দেখেননি পরিবারের লোকজন, এলাকাবাসী ও বন্ধুমহল। কিন্তু আদনান চৌধুরী হার না মানা এক যুবক। তার ধারণা, যে কোনো কিছুতে মনোবল শক্ত হলে, লেগে থাকলে সেখানে লাভবান হওয়া যায়। ঠিক তিনি এলাকাবাসীর কাছে তাই প্রমাণ করলেন। কোনো কর্মই যে ছোট নয়, তার একমাত্র জ্বলন্ত উদাহরণ আদনান চৌধুরী। বর্তমানে খাবারের মধ্যে শতাধিক বিদেশে ছাগল ও সত্তরের অধিক দুম্বা রয়েছে। রয়েছে বিভিন্ন জাতের ভেড়া। পাশাপাশি নতুন করে চেষ্টা করছেন বিদেশি মুরগি পালনের। এরই মধ্যে প্রায় ৫০টির অধিক বিদেশি মুরগি সংগ্রহ করেছেন, যেখানে প্রতিটি মুরগির দাম ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। তার খামারের ছাগলের মধ্যে রয়েছে বোয়ার (আফ্রিকা), কালাহারি (আফ্রিকা), বারবারি (ভারত), কাশ্মীর (কাশ্মীর), ক্রস। আর ভেড়ার মধ্যে রয়েছে ডোরপার (দক্ষিণ আফ্রিকা), স্থানীয় ভেড়া দুম্বার মধ্যে রয়েছে, হারলে রানী (ফারসি), আওয়াসি দুম্বা। এ ছাড়া মুরগির মধ্যে রয়েছে সাবেলপুট, পেন্সিল, সাটিন, ঠান্ডা, কোচিন, কোকো, কোচিন, সিল্কি, ব্রহ্মা, সেরামা, সেব্রাইট, সুলতান, ইয়োকোহামা, পোলিশ ক্যাপ তার এই খামার গড়ে তুলতে এই পর্যন্ত সর্বমোট খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ টাকার মত।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত