পুনর্বহালের প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  জাবি প্রতিনিধি

সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল করে মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দফা দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা সমাবেশ ও মিছিল করেছেন। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে এ সমাবেশ হয়। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল করেন তারা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়। এরপর বেলা ১১টা ৫৭ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৭ মিনিট পর্যন্ত ১০ মিনিট প্রতীকী অবরোধ করেন তারা। এ সময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ডেইরি ফার্ম থেকে সিঅ্যান্ডবি পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না। কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোয় মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। এছাড়া দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। সমাবেশে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম ইমন বলেন, গত ৯ জুন কোটা নিয়ে আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধের মত কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এই অসাম্য রায়ের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে আজকের এই সমাবেশের মাধ্যমে। সংবিধানে স্পষ্ট লেখা আছে শুধুমাত্র পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীর জন্যই কোটা থাকবে। ২০১৮ সালে তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তে কোটা বাতিলে পর সম্প্রতি হাইকোর্ট এটিকে অবৈধ ঘোষণা করেন। এ নিয়ে আমাদের অবস্থান আগের মতোই আছে। তাই সংশ্লিষ্টদের কাছে তড়িঘড়ি করে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে শিক্ষাবিদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে এটির যৌক্তিক সংস্কারের জরুরি দাবি জানাচ্ছি যাতে দেশের মেধাবীরা তাদের যথার্থ মর্যাদা পায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, যারা কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে তারা নাকি সরকারবিরোধী, তারা নাকি জামায়াত-শিবির! তাহলে পেনশন স্কিম নিয়ে যে আন্দোলন চলছে এটা কেন সরকারবিরোধী হবে না? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোরআন থেকে যে দলিল পেশ করেছিল মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে, সেখানে তিনি বলেছিলেন মুক্তিযুদ্ধায় বিজয়ীরা দেশের ৮০ ভাগ সুযোগ সুবিধা পাবেন। তাহলে আমার প্রশ্ন ১৯৭১ সালে কি সাধারণ জনগণ মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করেনি?

সর্বাত্মক কর্মবিরতি : অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা পেনশন-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনকে ‘ বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে এটির প্রত্যাহারসহ তিন দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির ঘোষণা অনুযায়ী সকাল থেকে সর্বাত্মক এ কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এর আগে গতকাল পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গত সপ্তাহের মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা তিন দিন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তবে এ সময় ক্লাসগুলো বন্ধ থাকলেও পরীক্ষা চলমান ছিল। কিন্তু আজ থেকে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ আছে। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে একধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। শিক্ষকদের অন্য দাবিগুলো হলো- প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন করা।