দেশের ইতিহাসে এবারই গত ৫২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যদি তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করতে পারে। অনুমান অনুযায়ী ২০৫০ সালের মধ্যে তা ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েও যেতে পারে।
গতকাল মঙ্গলবারএনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (এসডোর) এক গবেষণায় এ তথ্য প্রকাশ কর হয়।
বাংলাদেশে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পেছনে চারটি প্রধান কারণ দায়ী ১. বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ২. জলবায়ুর পরিবর্তন ৩. জীবাশ্ম জ্বালানি এবং শিল্পকারখানা থেকে কার্বন নির্গমন বৃদ্ধি, যা গ্রিনহাউস গ্যাস বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ৪. এল নিনো ইভেন্টের মতো মহাসাগরীয় প্রভাব। এই কারণগুলি সম্মিলিতভাবে সাম্প্রতিক তাপপ্রবাহকে আরও তীব্র করে তুলেছে। গবেষণায় জানা গেছে যে, ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় উচ্চ তাপপ্রবাহের কারণে অনেকেই স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন কিন্তু এই সমস্যা মোকাবেলার বিষয়ে তাদের সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে এরইমধ্যে উল্লেখযোগ্য ভাবে কৃষিখাতে ক্ষতিসাধন হয়েছে, যেমন ২০২১ সালের তাপপ্রবাহে ২১০০০ হেক্টরের বেশি ধান নষ্ট হয়েছে। মানুষের পরিবেশ বিরোধী কার্যকলাপের কারণে দ্রুত গতিতে জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রতিদিন তাপ প্রবাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাপ বৃদ্ধিতে অবদান রাখে এমন কার্যকলাপগুলো কমিয়ে এবং কার্যকর ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে এর প্রভাব হ্রাস করা সম্ভব। এর মধ্যে রয়েছে পরিবেশবান্ধব কৃষি উৎপাদন ও নগর পরিকল্পনা করা। উচ্চ তাপমাত্রার হুমকি থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য স্বাস্থ্য সেবা জোরদার করা। গবেষণাটি বাংলাদেশে একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা তুলে ধরেছে। ২০০০ সালের শুরু থেকে তাপমাত্রা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পূর্ববর্তী তথ্যানুসারে, ১৯৯৪, ২০০৪ এবং ২০২৪ সালে চরম তাপপ্রবাহ বাংলাদেশে আঘাত হানে। এই প্যাটার্নটি থেকে বোঝা যায় যে, এই ধরনের তীব্র তাপপ্রবাহের ঘটনা প্রায় প্রতি দশকে পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এই প্রবণতা অনুসরণ করে, অনুমান করা যায় যে, ২০৩৪ সালের দিকে আরেকটি চরম তাপপ্রবাহ ঘটতে পারে। এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে চরম তাপপ্রবাহ চলছে। এর ফলে লাখ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সমস্যাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এজন্য আমাদের টেকসই ও পরিবেশ-বান্ধব নগর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।