গর্ভকালে একজন নারীকে খাবার-দাবারের দিকে মনোযোগ দিতেই হবে। এই সময়ে শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দেয়। তাই যে করেই হোক, হবু মা এবং সন্তানের শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ হবে। সুস্থ থাকবে দুইজনেই। আর শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা ঠিক থাকলে হাড়ও মজবুত হবে। ফলে কোমরে ব্যথা থেকেও মুক্তি পাবেন হবু মায়েরা। আজ তাই কিছু ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার সম্পর্কে জানুন। গর্ভস্থ ?সন্তানের হাড় গঠনে সাহায্য করে ক্যালসিয়াম। এই খনিজের গুণেই হার্ট, পেশি এবং স্নায়ুর কার্যকারিতা ঠিক থাকে। এমনকি রক্ত জমাট বাঁধতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ক্যালসিয়াম। আর প্রেগনেন্সিতে মায়ের শরীর থেকে ক্যালসিয়াম সঞ্চারিত হয় শিশু দেহে। তাই হবু মায়েদের হাড় ক্ষয় হয়। যে কারণে হাঁটু-কোমরে ব্যথাও সঙ্গী হয়। তাই হাড় মজবুত করতে এই সময় বেশি করে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনীয়তা : হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে এই খনিজ। এছাড়া একাধিক শারীরবৃত্তীয় কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ক্যালসিয়াম। সেজন্যই গর্ভাবস্থায় নারীদের এই খনিজ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে বেশি করে। ওয়েবএমডি’র রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯ থেকে ৩০ বছরের গর্ভবতী নারীদের দৈনিক অন্ততপক্ষে ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন রয়েছে। ৩১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে গর্ভধারণ করলে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কিছুটা বাড়বে। তখন ১৩০০ মিলিগ্রামই হবে সঠিক পরিমাপ। তাই শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটাতে গর্ভবতী নারীরা কোন কোন খাবার রাখবেন পাতে? জেনে নিন এই ঝটপট।
চুমুক দিন দুধের গ্লাসে : দুধে ভরে ভরে রয়েছে ক্যালসিয়াম। তাই প্রেগনেন্সিতে শরীরে এই খনিজের চাহিদা পূরণ করতে চুমুক দিতে পারেন দুধের গ্লাসেই। জেনে রাখা ভালো, ৪০০ মিলিলিটার সেমি-স্কিমড দুধ থেকে ৪৬৪ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাবে আপনার শরীর। অর্থাৎ আপনার টার্গেটের অর্ধেকই পূরণ হয়ে যাবে দুধ পান করেই। তবে পাস্তুরাইজড দুধ খাবেন। অন্যথায় পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
দইও খেতে পারেন : গর্ভাবস্থায় চোখ বন্ধ করে দই খেতে পারেন নারীরা। ২ টেবিল চামচ দই থেকেই মোটামুটিভাবে ১৩০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাবেন আপনি। এদিকে দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ফলে নানা ধরনের সংক্রমণের ফাঁদ এড়ানো যায়। হজমও হয় ভালো। তাই গর্ভাবস্থায় নারীরা পাতে দই রাখলে অনেক সুফল মিলবে। তবে এক্ষেত্রে কম চিনিযুক্ত এবং ফ্লেভার ছাড়া দই খাওয়াই ভালো। অন্যথায় দাঁতের ক্ষতি হতে পারে।
ড্রাই ফ্রুট খান মুঠো ভরে : বিকালের স্ন্যাকসে ভাজাভুজি না খেয়ে হবু মায়েরা পেট ভরান এক মুঠো ড্রাই ফ্রুট দিয়ে। তাতে ওজনও বাগে থাকবে। আবার শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদাও পূরণ হবে। অয়াপ্রিকট, প্রুন, খেজুর এবং আমন্ডে ভরে ভরে রয়েছে ক্যালসিয়াম। এমনকি এসব খাবার থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রনও পাবে শরীর। তাতে গর্ভাবস্থায় অ্যানিমিয়া থেকেও মুক্তি পাবেন।