সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ। সাংবাদিকদের জন্য তার চিন্তাভাবনা খুবই ইতিবাচক। এই উদ্যোগ সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের জন্য খুবই সহায়ক ভূমিকা নিচ্ছে। গতকাল রোববার বিকালে তথ্য ভবন মিলনায়তনে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আরাফাত এসব কথা বলেন। এ সময় বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট হতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তৃতীয় পর্যায়ের কল্যাণ অনুদান-আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণের উদ্বোধন করা হয়। তিনি বলেন, ‘একদিকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সরকার গণমাধ্যমকে বিস্তৃত করবেন, তার পরিসর বাড়াবেন, গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থা করবেন, অন্যদিকে একটা গোষ্ঠী তার বিপক্ষে গণমাধ্যমে অসত্য কথা বলে যাবেন, এটা হতে পারে না। সাংবাদিক বন্ধুরা অপপ্রচারের বিপক্ষে সবাই রুখে দাঁড়ান, সত্যের পক্ষে থাকুন। অবশ্যই সরকারের ব্যর্থতাণ্ডবিচ্যুতির সমালোচনা করবেন। এটা সরকার স্বাগত জানাবে। কিন্তু মিথ্যাচারের মাধ্যমে সমালোচনা করলে, সেটা মেনে নেয়া হবে না, সত্য তুলে ধরে জবাব দেয়া হবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এ দেশে মিথ্যা বলারও স্বাধীনতা আছে। যখন-তখন যেভাবে ইচ্ছা সারাক্ষণ মিথ্যা বলারও স্বাধীনতা এ দেশে আছে। গত কিছুদিন ধরে বলা হচ্ছে- প্রধানমন্ত্রী ভারতে গিয়েছেন, সমঝোতা স্মারক করে এসেছেন, চুক্তি করে এসেছেন যে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতের ট্রেন যাবে, বাংলাদেশকে বিক্রি করে দিয়ে এসেছেন, বিরোধীদলের কিছু নেতারা টক শোতে এসব কথা বলেছেন। অথচ এই সমঝোতা স্মারকে আছে ভারতের ওপর দিয়েও বাংলাদেশের ট্রেন চলবে এবং বাংলাদেশের ট্রেন ভারতের ওপর দিয়ে চলে নেপাল-ভুটানে যাবে।’
সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে ভারতের বুকচিরে শুধু বাংলাদেশের ট্রেনই চলবে না, ভারতের আকাশ চিরে বিদ্যুৎও আসবে বাংলাদেশে। গণমাধ্যম এই হেডলাইন কেন করল না- এ সময় প্রশ্ন রাখেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারতের ট্রেন চলবে এই সমঝোতা স্মারক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করেছেন এটা সত্যি। কিন্তু এটা অর্ধেকটা সত্য। পুরো সত্য হচ্ছে, ভারতের ওপর দিয়েও বাংলাদেশের ট্রেন চলবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে শুধু মতপ্রকাশের স্বাধীনতাই নয়, মিথ্যা বলারও স্বাধীনতা আছে। সরকারের কোনো একটা চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক বা সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার অধিকার যে কারো আছে। কিন্তু মিথ্যা বলে কেন বিরোধিতা করতে হবে, জনগণকে বিভ্রান্ত করে কেন বিরোধিতা করতে হবে? এতে মানুষকে ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে। এটা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয়, এটা অপরাধ। অথচ বর্তমান সরকারের বিপক্ষে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলে বিভিন্ন অপপ্রচার করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাংবাদিক সমাজের যেমন নিবিড় সম্পর্ক ছিল, বঙ্গবন্ধু কন্যার সঙ্গে একইভাবে এক ধরনের নিবিড় সম্পর্ক সব সময়ই ছিল। যে কারণে বঙ্গবন্ধুর মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, গণমাধ্যম, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সাংবাদিক সমাজ এবং তাদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে কারণে সাংবাদিক সমাজের পাশে এবং গণমাধ্যমের পাশে সরকারকে দাঁড়াতে হবে। সাংবাদিকদের জন্য তার চিন্তাভাবনা খুবই ইতিবাচক। যে কারণে কল্যাণ ট্রাস্টের মতো এরকম একটি উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। এই উদ্যোগ সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের জন্য খুবই সহায়ক ভূমিকা নিচ্ছে।’ প্রতিমন্ত্রী যোগ করেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সারা দেশে ৭৮৪ জন সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের মাঝে ৬ কোটি ১৫ লাখ ৫০ টাকা কল্যাণ অনুদান প্রদান করা হয়েছে। সর্বশেষ পুরো বাংলাদেশে ২৯৩ জন সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের মাঝে ২ কোটি ২২ লাখ টাকা অন্দুান দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বাদলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এমপি, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া এবং ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী।