মামুনের সেই বন্ধু শাহেদ কোথায়?

* খরুলিয়ার মামুন হত্যা * অজ্ঞাত মামলা, কোন পথে হাঁটছে শৃঙ্খলা বাহিনী

প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এএইচ সেলিম উল্লাহ, কক্সবাজার

কক্সবাজারের রামুতে আবদুল্লাহ আল মামুন হত্যার ঘটনায় তার ভাই মোহাম্মদ পারভেজ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা একটি এজাহার দায়ের করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার রামু থানার পুলিশ এই এজাহারটি মামলা হিসাবে নথিভুক্ত করেছেন। রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু তাহের দেওয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তার, রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি দাবি করেন, তার নেতৃত্বে পুলিশ হত্যায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, সহসাই মামুন হত্যা নিয়ে সুখবর পাওয়া যাবে।

এদিকে এই হত্যার ঘটনা নিয়ে খুনের শিকার আবদুল্লাহ আল মামুনের বন্ধু শাহেদ হোসেন নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে। অনেকেরই প্রশ্ন সেই শাহেদ কোথায়? আত্মগোপনে না শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে? খুনের শিকার মামুনের ভাইয়ের দায়ের করা অজ্ঞাত এজাহারের উপস্থাপনায় শাহেদের নাম উল্লেখ রয়েছে।

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক শৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শাহেদ নামের একজন একটি বাহিনীর হেফাজতে রয়েছে। তবে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত কোন শৃঙ্খলা বাহিনী আনুষ্ঠানিক জানাননি।

খুনের শিকার মামুনের ভাই পারভেজের এজাহারে যা বললেন

যথাযথ সম্মানপূর্বক নিবেদন এই যে, আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী মোহাম্মদ পারভেজ আমার জেঠাত ভাই ইমরান মোহাম্মদ সেলিমসহ আপনার থানায় হাজির হইয়া এই মর্মে এজাহার দায়ের করিতেছি যে, আমার ভাই মৃত ভিকটিম আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩০) একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি কক্সবাজার পৌরসভাধীন ঝাউতলা গাড়ীর মাঠ এলাকায় প্রাণ কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটর এবং তাহার বন্ধু মোহাম্মদ শাহেদের সহিত ভিশন কোম্পানির ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রীর ব্যবসা করতেন। আমার ভাই ভিকটিম মৃত আব্দুল্লাহ আল মামুন কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকায় আমার বড় বোন আয়েশা ছিন্দিকার বাসায় থাকতেন। আমার মৃত ভাইয়ের সহিত রামু রাজারকুপ নিবাসী মোহাম্মদ শফির কন্যা জুবাইরা সোলতানার সহিত আকদ ও কাবিন হয়। পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে গত ২৬-০৬-২০১৪ খ্রি: তারিখ আমার ভাই ভিকটিম মৃত আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং জুবাইরা সোলতানার সহিত বিবাহবিচ্ছেদ হয়। আমার ভাই ভিকটিম মৃত আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং তাহার বন্ধু শাহেদ এর সহিত প্রায় সময় ব্যবসার লেনদেন নিয়ে ঝামেলা হয় মর্মে জানি। গত ০৬-০৭-২০১৪ খ্রি: তারিখ রাত অনুমান ০৮.৩০ ঘটিকার সময় রামু থানাধীন রাজারকুল যাওয়ার কথা বলে আমার মৃত ভাইয়ের পার্টনার ঝাউতলা ভিশন ইলেক্ট্রনিক্স-এর ম্যানেজার মোহাম্মদ শাহেদের সঙ্গে কক্সবাজার ঝাউতলা ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার থেকে আমার ভাইয়ের কক্সবাজার-ল-১১-৩১৭৬ মোটরসাইকেল যোগে রওয়ানা দেন। দীর্ঘ বিলম্বে আমার ভাই ভিকটিম আব্দুল্লাহ আল মামুন আমার বোনের বাসায় না আসায় আমার বোন আয়েশা ছিদ্দিকা আমাকে মোবাইল কোনে ভিকটিম আব্দুল্লাহ আল মামুন বাড়িতে এসেছে কিনা জিজ্ঞাসা করিলে আমি আসে নাই বলিয়া জানায়। আমার বোন রামু থানার আমাকে ভিকটিম আব্দুল্লাহ আল মামুন কোথায় আছে খোজার জন্য বলিলে আমি আমার জেঠাত ভাই মোহাম্মদ সেলিমকে জানায়। পরে আমি আমার জেঠাত ভাই ইমরান মোহাম্মদ সেলিমসহ শাহেদের সহিত যোগাযোগ করিলে শাহেদ জানায় সে এবং আমার ভাই ভিকটিম আব্দুল্লাহ আল মামুন একসাথে চাকমারকুল মাদ্রাসার রাস্তার মাথা পর্যন্ত গিয়েছিল বলিয়া জানায়। পথিমধ্যে ৩১-পধৎফ/০৯/২৮, ‘আমার ভাই ভিকটিম আব্দুল্লাহ আল মামুন বেশ কয়েকটি মোবাইল কল রিসিভ করে। ভিকটিম মামুন তার প্রাক্তন স্ত্রীর সাথে দেখা করিবে বলিয়া ওই এলাকা থেকে শাহেদ কে ফেরত পাঠায় এবং যথারীতি শাহেদ তার বাসায় চলে আসে বলিয়া জানায়। তাছাড়া আমার ভাইয়ের বন্ধু মোহাম্মদ শাহেদ সন্দেহমূলক বিভিন্ন আচরন করেন। আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে আমার ভাইকে বিভিন্ন আত্মীয় থানায় রসু স্বজনদের বাসায় গিয়েছে কিনা খবরা খবর নিই। কিন্তু আমার ভাই ভিকটিম আব্দুল্লাহ আল মামুনকে না পাইয়া খোঁজা অব্যাহত করা হইল। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে গত ০৭/০৭/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ সকাল অনুমান ০৮.০০ ঘটিকার সময় রামু থানাধীন রশিদনগর ইউনিয়নের ০৫নং ওয়ার্ডস্থ খাদেমের পাড়া গ্রামের রেল লাইনের পূর্ব পাশে জনৈক শফিকুর রহমানের ধান ক্ষেতের পশ্চিম পাশে একটি মানুষের লাশ পড়ে আছে বলিয়া শুনিতে পাই। আমিসহ আমার অন্যান্য আত্মীয়স্বজন বর্ণিত ঘটনাস্থলে গিয়ে পড়ে থাকা লাশটি দেখিয়া আমার ভাই মৃত আব্দুল্লাহ আল মামুনের লাশ বলিয়া শনাক্ত করি। পরবর্তীতে উক্ত ঘটনাস্থলে রামু থানার পুলিশ আসে এবং ঘটনাস্থলে আমাদের উপস্থিতিতে আমার ভাই ভিকটিম মৃত আব্দুল্লাহ আল মামুনের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেন। ‘সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। আমার ভাই ভিকটিম আব্দুল্লাহ আল মামুনের দুই হাত পেছনে দড়ি দিয়ে বাঁধা এবং দুই পা দড়ি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় আমার ভাইয়ের মুখে জাল গুজানো ছিল।