বড় মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে জাপানি মা নাকানো এরিকোর বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার ঘটনায় আদালত অবমাননা মামলার শুনানি আগামী ১৫ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে উভয়পক্ষের আপিলও শুনানি করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে নাকানো এরিকোর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও অ্যাডভোকেট শিশির মনির। গত বুধবার বড় মেয়ে জেসমিন মালিকাকে জাপানে রেখে বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন জাপানি মা নাকানো এরিকো। এরপর বৃহস্পতিবার আদালতে এসে নাকোনো এরিকো বলেন, আদালতের প্রতি সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশে এসেছি। মামলার শুনানির সময় আপিল বিভাগে উপস্থিত থাকতে জাপান থেকে চলে এসেছেন। গত ৯ মে বড় মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে জাপানি মা নাকানো এরিকোর বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার ঘটনায় আদালত অবমাননা মামলার শুনানি ও হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে উভয়পক্ষের আপিল শুনানির জন্য ১১ জুলাই ধার্য করেন আপিল বিভাগ। সেদিন আদালত বলেছিলেন, মামলার উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে আমরা ওই দিন জাপানি শিশুদের নিয়ে আপিল মামলা নিষ্পত্তি করব।
এর আগে, বড় মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে জাপানে চলে যাওয়ার ঘটনায় জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকোর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন ইমরান শরীফ। এছাড়া, জাপানি তিন শিশুকে বাবা-মায়ের মধ্যে ভাগ করে দিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন উভয়পক্ষ। বড় কন্যা সন্তান জেসমিন মালিকাকে নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে জাপানে চলে যান জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো। গত ৯ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৩টায় এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে যান। জাপানি শিশুদের বাবা ইমরান শরীফ এমন অভিযোগ করেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন যে, জাপানি শিশু জেসমিন মালিকা (বড়) ও তার ছোট বোন সোনিয়া তাদের জাপানি মা নাকানো এরিকোর কাছে থাকবে। মেজ মেয়ে লাইলা লিনা বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবে। রায়ে বলা হয়, প্রথম ও তৃতীয় মেয়েকে নিয়ে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো বাংলাদেশে বা যে কোনো দেশে বসবাস করতে পারবেন। তবে বাবা সন্তানদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করার সুযোগ পাবেন। একইভাবে দ্বিতীয় মেয়ে লাইলা লিনা বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবেন। জাপানি মা দ্বিতীয় মেয়ের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন। তবে গত ৯ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। একইসঙ্গে পরবর্তী শুনানির জন্য ১৫ এপ্রিল দিন ধার্য করেন। কিন্তু ৯ এপ্রিল বিকালে নাকানো এরিকো বড় সন্তানকে নিয়ে জাপানে চলে যান। এদিকে, আদেশ অমান্য করার অভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল নাকানো এরিকোর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন শিশুদের বাবা ইমরান শরীফ। তার আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম সেদিন বলেছিলেন, সন্তানদের দেশের বাইরে যেতে আদালতের স্থিতাবস্থা ছিল। তারপরও বড় সন্তানকে নিয়ে নাকানো এরিকো চলে গেছেন। এ কারণে আমরা আদালত অবমাননার আবেদন করেছি। এর আগে, ঢাকার জেলা জজ আদালত বাংলাদেশে থাকা জাপানি দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা জাপানি মায়ের কাছে থাকবে বলে রায় দেন।