ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ডিজিটাইজেশন হচ্ছে বাংলাদেশের অগ্রগতির লাইফ লাইন। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ ত্বরান্বিত করতে ইন্টারনেটের অভাবনীয় শক্তিকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে হবে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট প্রসারে মোবাইল ফোন অপারেটরসহ যেকোনো বেসরকারি উদ্যোগ বাস্তবায়নে সরকার সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানে বদ্ধপরিকর। গতকাল সোমবার ঢাকায় এক হোটেলে গ্রামীণফোনের মোবাইল ব্রডব্যান্ড সেবা জিপিফাই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট নাগরিক অপরিহার্য। আমরা সোনার বাংলার জন্য সোনার মানুষ চাই। শিক্ষার্থীদের প্রতিভা কাজে লাগিয়ে তাদের প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট করে গড়ে তুলতে পারলে তাদের হাতেই গড়ে উঠবে স্মার্ট বাংলাদেশ। পলক বলেন, আর্কিটেক্ট অব ডিজিটাল বাংলাদেশ সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে জননেত্রী শেখ হাসিনা গৃহীত ডিজিটাল বাংলদেশ কর্মসূচির ফলে বাংলাদেশ বিশ্বে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সুলভ মূল্যে জনগণের দোরগোড়ায় নিরবচ্ছিন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের গৃহীত কর্মসূচি তুলে ধরে পলক বলেন, দেশে ২০০৬ সালে প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেটের দাম ছিল ৮৫ হাজার টাকা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল ৪০ লাখ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণের জন্য ইন্টারনেট সহজ লভ্য করতে প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেটের দাম মাত্র ৬০ টাকায় নির্ধারণ করেছেন। দেশে বর্তমানে ১৩ কোটিরও বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০০৬ সালে দেশে মাত্র সাড়ে সাত জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে ৫ হাজার দুইশত জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হচ্ছে। পলক বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশে আমাদের সামনে অসীম সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই আধুনিক টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী সাহসী সিদ্ধান্তের কারণে পঞ্চগড়ের দয়াল বর্মণ, কুষ্টিয়ার ইউটিউব গ্রাম, ৭ লাখ ফ্রিল্যান্সার ঘরে বসে আয় করতে পারছে। সাফল্যের গল্প রচনা সম্ভব হয়েছে। সম্প্রতি অপারেটরদের ইউনিফাই লাইসেন্স গাইড লাইন করায় এখন মোবাইল অপারেটররাও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দিতে পারবে। ন্যূনতম ২০এমবিপিএস থেকে ১৫০ জিবিপিএস পর্যন্ত তারহীন ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে জিপিফাইয়ের। অনুষ্ঠানে জিপিফাইয়ের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা সাজ্জাদ হাসিব, আবুল কাশেম মহিউদ্দি ও মইনুল মোমেন। তারা জানান, আনলিমিটেড তিনটি প্যাকেজ থাকছে জিপিফাই-এ। আনলিমিটেডে ১০টি ডিভাইসে সংযুক্ত করতে পরাবেন হোম ইউজাররা। থাকবে প্যারেন্টাল কন্ট্রোলিং। এজন্য আনা হয়েছে দুইটি রাউটার। এর একটির দাম ৪ হাজার ও অন্যটি ৭ হাজার টাকা। অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোন প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, ইন্টারনেট নারীদের জন্য আশীর্বাদ। ইন্টারনেটের শক্তি কাজে লাগিয়ে ঘরে বসেই আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হচ্ছেন গ্রামের মানুষ। দেশের ৯৯ শতাংশ অঞ্চলেই রয়েছে আমাদের নেটওয়ার্ক। গ্রামীণফোনের রয়েছে ৮ কোটি ৫০ লাখ ব্যবহারকারী। আমরা এখন এআই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছি। এটা খরচ বাঁচাতে নয় সেবার মান উন্নয়নে করছি। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশল মহিউদ্দিন আহমেদ, মহাপরিচলক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমান, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।