ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

করজাল বাড়াতে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

করজাল বাড়াতে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

প্রস্তাবিত কারিগরি সহায়তার ধরন নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের মতামত জানতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। করজাল বাড়াতে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। করজাল বাড়াতে বাংলাদেশকে কারিগরি সহযোগিতা করার আগ্রহ দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। ট্রেজারি বিভাগ থেকে এ বিষয়ে পাঠানো প্রস্তাবের কথা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়ে জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগ। চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু গত ১৪ থেকে ১৬ মে ঢাকা সফর করেন। সে সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি বাংলাদেশে করজালের আওতা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের কারিগরি সহায়তা দেওয়ার আগ্রহের কথা জানান। প্রস্তাবিত সেই কারিগরি সহায়তার ধরন নিয়ে এখন বাংলাদেশ সরকারের মতামত জানতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের কারিগরি সহায়তা অফিস থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ব্রোসিউর এবং এ বিষয়ের ওপর একটি উপস্থাপনা বাংলাদেশকে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (কর আইন) বাপন চন্দ্র দাস বলেন, আমরা চিঠি পেয়েছি। আমাদের কাছে মতামত চাওয়া হয়েছে। এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আমরা তাদের আগ্রহ বিশ্লেষণ করে একটা মতামত দেব। ট্রেজারি বিভাগের উপস্থাপনায় বলা হয়েছে, রাজস্ব আদায় বাড়াতে আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা বাস্তবায়ন, আইনের সংশোধন ও বাস্তবায়ন, কমপ্লায়েন্স বাস্তবায়নে ঝুঁকির অবসান, রাজস্ব ব্যবস্থায় প্রশাসনে ন্যায্যতা উৎসাহিত করা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে নিজেদের ‘ব্যাপক’ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে উপস্থাপনায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯০ সাল থেকে আফ্রিকা, এশিয়া, সেন্ট্রাল এবং ইস্টার্ন ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়া অঞ্চল মিলিয়ে ৭০টি দেশে রাজস্ব উপদেষ্টা কাজ করেছে। আঞ্চলিক সহযোগিতায় ট্রেজারি মূল্যায়নের প্রভাব এবং দেশের চাহিদার ভিত্তিতে প্রতি বছর ১২ থেকে ১৫টি দেশে রাজস্ব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ট্রেজারি বিভাগ বলছে, তাদের কারিগরি সহযোগী অফিসের উপদেষ্টারা রাজস্ব প্রশাসনে বেশ অভিজ্ঞ। তারা নীতি পরামর্শ ও আইনি খসড়া, ব্যবস্থাপনা কৌশল ও পরামর্শ, আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার আলোকে ব্যবস্থাপনা সাজানো, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও ওয়ার্কশপ, গাইডলাইন ও মনিটরিংয়ে অভিজ্ঞ। এছাড়া রাজস্ব প্রশাসনের সব ক্ষেত্র, ট্যাক্সপেয়ার ও কাস্টমস ট্যাক্সপেয়ার/ইমপোর্টার্স অ্যাকাউন্টিং, প্রোসেসিং ও রেজিস্ট্রেশন, কমপ্লায়েন্স স্ট্র্যাটেজি, কর ব্যবস্থাপন, সাধারণ ও বিশেষায়িত শিল্প খাতের অডিট, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ও বিষয়াবলী, প্রোমোটিং ভলান্টারি কমপ্লায়েন্স-শিক্ষা, পাবলিক রিলেশন, কাস্টমার সার্ভিস, প্রতিষ্ঠান, পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতা, তথ্যপ্রযুক্তি, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, কর নীতি-নীতির সুপারিশ, রাজস্ব প্রাক্কলনে বিশেষ জ্ঞান রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। একইসঙ্গে ট্যারিফ ক্লাসিফিকেশন, ভ্যালুয়েশন, রুলস অব অরিজিন, ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট, কাস্টমস ব্রোকার মডার্নাইজেশন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, পোস্ট ক্লিয়ারেন্স অডিট, স্পেশালাইজড ইন্ডাস্ট্রি খাত, এক্সাইজ কর, এনফোর্সমেন্ট ও কমপ্লায়েন্স, ট্রেড ফ্যাসিলেশন, প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন, ইন্টারনাল অ্যাফেয়ার্স, অনুসন্ধান ও এন্টি করাপশনে বিশ্বে ‘শীর্ষস্থানে’ থাকার কথা বলেছে দেশটি। এনবিআরের কর্মকর্তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে চায়। দুটি দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ে সুসম্পর্ক থাকলে এমন অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান অস্বাভাবিক কিছু নয়। সামগ্রিক বিষয় যাচাই-বাছাই করেই এনবিআর সিদ্ধান্ত নেবে। ডলার সংকটে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ চুক্তি করার সময় কর আদায় সংক্রান্ত জ্ঞান নিয়েছিলেন এনবিআর কর্মকর্তারা। এবার তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ধারণা নেওয়ার প্রস্তাব বিবেচনা করছেন। এনবিআরের অতিরিক্ত কমিশনার থেকে সহকারী কমিশনার পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের ২০ কর্মকর্তা ‘ট্যাক্স এক্সপেন্ডিচার’ বিষয়ে আইএমএফের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। আইএমএফের তিন প্রতিনিধি-ডেভিড বার, ডেভিড ওয়েন্টওর্থ ও অরবিন্দ টানা ১০ দিনের ওই কর্মসূচিতে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত