দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও সেতু ভবন পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  বিশেষ প্রতিনিধি

রাজধানীর বনানীর সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল শনিবার সকালে দুর্বৃত্তদের আগুন ও হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এ ভবন পরিদর্শন করেন সরকারপ্রধান।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা, ভাঙচুর, সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সেতু ভবনে হামলা চালিয়ে অর্ধশতাধিক গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে অফিস ভবনও। গত ১৮ জুলাই সেতু ভবনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সেতু ভবনের কেয়ারটেকার রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় সেতু ভবনের ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৮ জুলাই প্রতিদিনের মতো সেতু ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসের কার্যক্রম করতে থাকেন। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অজ্ঞাতনামা ২৫০-৩০০ জন আসামি কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নাশকতার লক্ষ্যে বেআইনি জনতাবদ্ধে আবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে আমাদের অফিসের সামনে এসে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

এতে বলা হয়, সেতু ভবনের সিনিয়র সচিবসহ কর্মকর্তাদের পদণ্ডপদবি ধরে খোঁজাখুঁজি করে হুমকি প্রদর্শন ও ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে অন্তর্ঘাতমূলক ভীতি সৃষ্টি করে সেতু ভবন লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে আসামিরা আমাদের অফিসের মূল ফটক ভেঙে অনধিকার প্রবেশ করে সেতু ভবনের নিচ তলায় ভবনের সামনে রক্ষিত জিপ, কার, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মোটরসাইকেল, নিরাপত্তা ভবন, সিসি ক্যামেরা, পার্কিং শেড, ক্যানটিন, গাড়িচালকদের কক্ষ, আনসার শেড, মুজিব কর্নার, জেনারেটরস কক্ষসহ মূল ভবন ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ ঘটায়।

অভিযোগে বলা হয়, এ সময়ে সেতু ভবনের সিনিয়র সচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীরাসহ ভেতরে থাকা অফিস স্টাফ ও নিরাপত্তাকর্মী আসামিদের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম থেকে সরে যেতে অনুরোধ করলে আসামিরা তাদের মারধর করে ও গুরুতর জখম করে। এতে আরো বলা হয়, পরবর্তী সময় আসামিরা নিচ তলার আনসার শেড, ড্রাইভার শেড থেকে চেয়ার টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র এবং সেতু ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে নিচতলা থেকে ১১ তলা পর্যন্ত অফিসে ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। অফিসে রক্ষিত কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফাইল কেবিনেট, এসি, ফ্যান, পানির ফিল্টার, চেয়ার, টেবিল, আসবাবপত্রসহ অন্যান্য সরকারি ও ব্যক্তিগত মালামালসামগ্রী চুরি করে এবং প্রত্যেক ফ্লোরে অগ্নিসংযোগ ঘটায়। আসামিদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ও অগ্নিসংযোগে সেতু ভবনের নিচতলা থেকে ১২ তলা পর্যন্ত ফ্লোরে রক্ষিত পদ্মা সেতু প্রকল্প, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বহুলেন সড়ক টানেল-প্রকল্প, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প সেতু বিভাগের আওতাধীন সব প্রকল্পের প্রধান কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দলিলাদি, এফডিআর ইনস্ট্রুমেন্ট, টেন্ডার সিকিউরিটি ডকুমেন্টস, ইন্টারনেট সার্ভার, শতাধিক কম্পিউটার ও কম্পিউটারসামগ্রী, আসবাবপত্র, কম্পিউটার, জেনারেটর, ফায়ার এক্সটিংগুইশারসহ যাবতীয় নথিপত্র এবং সেতু ভবনের পার্কিংয়ে থাকা ৩২টি জিপ গাড়ি, ৯টি পিকআপ, ৭টি মাইক্রোবাস, একটি মিনিবাস, ৫টি মোটরসাইকেল, একটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দিলে ভস্মীভূত হয় আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকার মালামাল।