‘ছাত্রলীগের মামলায় আমার ছেলেকে আসামি করেছে, এলাকায় কীভাবে মুখ দেখাব’

প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এএইচ সেলিম উল্লাহ, কক্সবাজার

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে কক্সবাজারে ছাত্রলীগের দায়ের করা মামলায় জামায়াত, বিএনপি ও শিবিরের সাথে আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তানদের। তাদের দাবি, অতীতের ব্যক্তিগত আক্রোশ ও দলীয় কোন্দলের প্রতিশোধ হিসেবে মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। এতে মামলায় নাম আসা পরিবারের পাশাপাশি ক্ষোভ জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান। কক্সবাজার শহরের বিএনপি-জামায়াত অধ্যুষিত পাহাড়তলী ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা মো. আজিজুল হক। বিএনপি-জামায়াতের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত ইসলামপুর এলাকায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিশ্বাসী লোকের সংখ্যা অনেকটা কম। তার মধ্যে আজিজুলের পরিবারই অন্যতম। তবে আ.লীগের আমলেই আজিজুল পরিবারে অন্তরে দাগ লেগেছে ছাত্রলীগ নেতার দায়েরকৃত একটি মামলায়। কেন তার ছেলে আসামি হলো? কোনোমতেই অঙ্ক মিলাতে পারছেন না আ.লীগ নেতা আজিজুল। তবে কারো কাছে না গিয়ে তার মনের দাগ কাটতে বিষয়টি নিয়ে সময় সাক্ষেপে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আনার চেষ্টা করবেন বলে জানালেন আজিজুল। গত শুক্রবার দুপুরে কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী ইসলামপুর এলাকায় নিজ বাড়িতে কথা হয় আজিজুল হকের সাথে। তিনি বলেন, ছেলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা নিয়ে আমি হতাশ, চিন্তিত নয়। তবে আমার ছেলে ছাত্রলীগ নেতার মামলায় আসামি হয়েছে! তা লজ্জা লাগতেছে। আমি এলাকায় কীভাবে মুখ দেখাব? আমার ছেলে নির্দোষ। আমি ছেলের মামলার বিষয় নিয়ে কারো কাছে ধর্না দিব না। গত দুই দিনেই কাউকে অভিযোগ করিনি। করবোও না। হয়তো বিষয়টি সময় সাক্ষেপে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আনব।

আজিজুল আক্ষেপ করে বলেন, বিএনপি-জামায়াতের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত ইসলামপুর এলাকাটি। কোনো সময় সরকার পরিবর্তন হলে, ইসলামপুর এলাকায় আমার পরিবার বিরোধী লোকজনের হাতে আক্রমণের শিকার হবে। এই আতঙ্কে ছিলাম। তা হওয়ার আগেই ছাত্রলীগের মামলায় ঘরছাড়া আমার ছেলে। আমার ছেলেকে কণ্ঠ রোধ করার জন্য সমাজের কিছু কীট হয়তো মামলার বাঁদিকে ভুল তথ্য দিয়ে আসামি করেছে।

আজিজুল আক্ষেপ করে আরো বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আ.লীগ পরিচয়ে নিজের জন্য, পরিবারের জন্য কিছুই করিনি। তবে শেষ বয়সে এসে ছেলের বিরুদ্ধে নাশকতা মামলা উপহার পেলাম। তবুও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চাই। হয়তো আমি না, আমার পরিবারের কোনো সদস্য ‘নৌকা প্রতীকে’র বাইরে ভোট দিয়েছি কি না মনে নেই। তবে এলাকায় আওয়ামী লীগ পরিচয়ে কীটদের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান ছিল। তারা হয়তো সংঘবদ্ধ হয়ে, আমাকে এবং পরিবারের লোকজনকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য ছাত্রলীগ নেতার দায়েরকৃত নাশকতা মামলায় জড়িয়ে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করেছে।

আপনি কীভাবে জানলেন অনিক আসামি হয়েছে? এমন প্রশ্ন করা হলে আজিজুল বলেন, প্রতিদিনের মতো আমার ছেলে এমরান ফারুক অনিক গত বুধবার (২৪ জুলাই) সকালে তার কর্মস্থল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনালে’ যান। ওইদিন রাতে হঠাৎ কল করেন, ‘বাবা আমাকে ছাত্রলীগ নেতার নাশকতা মামলায় আসামি করা হয়েছে। হয়তো বাসায় ফিরব না। দোয়া চেয়ে মুঠোফোন রাখেন। আমি তার জন্য দোয়া করি। এক মিনিটের জন্য হতাশ হইনি। তবে এক কাপড়ে ছেলেটা কোথায় থাকছে জানি না। আমার বিশ্বাস অনিক আঁধার কাটিয়ে জয় করবে। হয়তো সাময়িক কষ্ট হচ্ছে তার।

অনিককে আসামি করার কারণ কি হতে পারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমার ছেলের তেমন প্রতিপক্ষ নেই। নানা কারণে এলাকার বাজে চরিত্রের আ.লীগ নেতা পরিচয়ে একজন লোক, হয়তো জেলা ছাত্রলীগের একজন মাঝারি মানের দায়িত্বশীলের নাম উল্লেখ করেন আজিজুল।

আজিজুল বলেন, আমার পাঁচ ছেলে, এক কন্যার মধ্যে অনিক অত্যন্ত সাহসী, স্পষ্টবাদি। হয়তো চলার পথে স্পষ্টবাদিতাই তার জন্য কাল হয়েছে। আমার বিশ্বাস অনিক নাশকতার মতো ঘটনায় জড়িত নয়। আমি যতটুকু জানি, ঘটনার দিন সারা দিন সে তার কর্মস্থলে ছিল। যা তদন্তে প্রমাণ মিলবে।

আজিজুল হকের রাজনৈতিক পরিচয় : তার সাথে কথা বলে এবং খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজিজুল হক ছোটকাল থেকেই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৭০ সালে ঈদগাঁও আলমাসিয়া মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালে প্রভাবশালী অনেকেই তৎকালীন আল-বদর ছাত্র সংগঠনে যোগদান করার জন্য উদ্বুদ্ধ করলেও তিনি তাতে রাজি হননি। আজিজুল হক কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের তৎকালীন মরহুম মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ হোসেন বিএ’র কমিটিতে ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তখন তার সভাপতি ছিলেন ওয়াজিবুল হক মুন্সী। পরবর্তীতে তাকে কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের মুজিবুর রহমান-উজ্জ্বল করের ২০০৭-২০০৮ সালের কমিটিতে ওই ওয়ার্ডের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

কোন মামলায় আসামি হলেন এমরান ফারুক অনিক : কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সহিংসতার ঘটনায় কক্সবাজারে ছয়টি মামলা রেকর্ড করা হয়। এর মধ্যে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় পাঁচটি, চকরিয়া থানায় একটি। সদর মডেল থানার পাঁচ মামলার মধ্যে দুইটি পুলিশ বাদী, অন্য তিনটিতে আ.লীগ, ছাত্রলীগ ও জাসদ বাদী। কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাজিবুল ইসলাম মোস্তাকের দায়েরকৃত মামলায় এমরান ফারুক অনিককে ৫৪নং আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় ১০৩ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে।

আজিজুলের পাঁচ ছেলে এক কন্যার পরিচিতি : আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল হকের সাংসারিক জীবনে পাঁচ ছেলে, এক কন্যা। তার বড় সন্তাটি কন্যা। দ্বিতীয় ছেলে এমরান ফারুক অনিক, আইটি কর্মকর্তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল, কক্সবাজার।’ এছাড়া সে কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত দৈনিক সাগর দেশ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল কক্সবাজার সময় ডটকমে বিশেষ প্রতিবেদক হিসাবে কর্মরত এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, স্কুল প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত। তৃতীয় ছেলে মাহমুদুল হাসান প্রবাসী, চতুর্থ ছেলে মুজিবুর রহমান পর্যটনসেবি ও চট্টগ্রাম কলেজে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত, পঞ্চম ছেলে মাহফুজুর রহমান, ঢাকা সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি করছেন। তার সর্বকনিষ্ঠ সন্তান তারেক আজিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে অধ্যয়নরত আছেন। সে বিজয় একাত্তর হলে ছাত্রলীগের দায়িত্বে আছেন।

এলাকাবাসী যা বললেন : গত শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী ইসলামপুর এলাকায় বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আ.লীগ নেতা আজিজুল হকের পাঁচ ছেলে আছে অনেকেই জানেন না। এলাকায় তার ছেলেদের কোনো ধরনের কোলাহল দেখেনি তারা। অনেকটা এলাকাবাসীর কাছে ‘তারা শান্ত ছেলে হিসেবে পরিচিত। নানাজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত বুধবার সকাল থেকে অনিকের মামলার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে মিশ্র প্রক্রিয়া দেখা দেয় এলাকায়।

নুর কামাল নামের এক ব্যবসায়ী জানান, একটি ঘরে কাছাকাছি বয়সের পাঁচ ছেলে থাকলে এলাকায় কতো কথা আসে। কিন্তু আজিজুলের ছেলেগুলো শান্তপ্রিয়। অনেকটা অনিক ছাড়া বাকিরা তো এলাকার বাইরে থাকেন। অনিকও কর্মক্ষেত্রে সকালে যান, রাতে ফিরে। এলাকায় তাকেও অযথা আড্ডা দিতে দেখা যায় না। এলাকাবাসী মামলার বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের দাবি তোলেন।

বাবা কোথায় জানেন না অনিকের দুই সন্তান : খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাংসারিক জীবনে এমরান ফারুক অনিকের দুই সন্তান। তারা হলো, সুলতানা আজিজ (৪) ও ইশতিয়াক আজিজ (১ বছর ৭ মাস)। গত শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী ইসলামপুর এলাকায় অনিকের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সুনসান নিরবতা। প্রতিবেদকের সাথে অনিকের বড় কন্যা সুলতানা আজিজের সাথে কথা হয়। তারা এখনো বুঝে উঠতে পারেনি তার বাবা কোথায়। রীতিমতো দাদা, দাদির সাথে খুনসুটি করছে তারা।

ছাত্রলীগ নেতার মামলা নিয়ে যা বললেন অনিক : কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সহিংসতার ঘটনায় কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাজিবুল ইসলাম মোস্তাকের দায়েরকৃত মামলায় আমাকে আসামি করা হয়েছে।

অনিক দাবি করেন, এজাহারে উল্লেখিত তারিখ, সময়ে সে তার কর্মস্থল উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনালের অফিসে ছিলেন। গত ২৫ জুলাই কক্সবাজার পৌরসভায় তিনটি টেন্ডার ছিল। তার কাজ সম্পাদন করতে ঘটনার সময় সারা দিন অফিসেই ব্যস্ত ছিলেন। প্রতিদিনের মতো রাত ১০টার দিকে বাড়ি ফিরেন। তা স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করেন অনিক।

তিনি আরো বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ কোথাও খারাপ মন্তব্য করিনি।

অনিক বলেন, আমি সরাসরি রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে জড়িত না থাকলেও আমার বাবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে মুজিব আর্দশে বিশ্বাসী। রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রচলিত যেই কোনো নির্দেশনা মেনে চলি।

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে শুধু আমার বাবা নয়, আমার দাদা মরহুম অ্যাডভোকেট অদুদ আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও কক্সবাজার স্বাধীনতা সংগ্রাম কমিটির ট্রেজারার ছিলেন। আমার চাচা তকিউল্লাহ কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। চাচা মোহাম্মদ হুজাইফ উল্লাহ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। চাচাতো ভাই কাজী আব্দুল্লাহ ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। এছাড়া আমার আপন সহোদর তারেক আজিজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।

যা বললেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান : কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সহিংসতার ঘটনায় কক্সবাজারে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের দায়েরকৃত মামলায় কিছু ভুল রয়েছে। তা নজরে এসেছে। এই নিয়ে হতাশ হওয়ার কারণ নেই। পরবর্তীতে অডিও, ভিডিও দেখে এবং গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখে তাদের অব্যাহতি দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। সহিংসতায় জড়িত নেই, এমন কেউ হয়রানি হবে না বলে আশ্বাস দেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আ.লীগ ঘরনার লোকজন আসামি হওয়ার খবর শুনে আমার রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাদের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। মামলায় এজাহারনামীয় আসামি হওয়ায় তারা তো প্রাথমিকভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে, এমন প্রশ্ন করা হলে আ.লীগ সম্পাদক আরো বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বিষয়টি কানে আসার পর শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করা হয়েছে। যাতে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করেন।

আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের দায়েরকৃত মামলায় কি পরিমাণ আ.লীগ ঘরানার মানুষ আসামি হয়েছে, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি আরো বলেন, এখনো চূড়ান্তভাবে জানা যায়নি। তবে বিছিন্নভাবে খবর আসছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজারে মোট ৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে। ভিডিও, ছবি দেখে যাদের শনাক্ত হচ্ছে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কোনোমতেই অযথা কাউকে হয়রানি করা হবে না।