ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ ব্যবসায়ীদের

আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ ব্যবসায়ীদের

বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতিতে কারখানাগুলোর প্রতি সহানুভূতিশীল থাকা এবং অপ্রত্যাশিত বিলম্বের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাগুলোর ওপর যেন বাড়তি কোনো চাপ তৈরি না হয় সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে বিজিএমইএ। গতকাল সোমবার এক সভায় আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের প্রতি এ অনুরোধ জানায় তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। বিকেল ৩টায় উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে বাংলাদেশে অবস্থিত বিশ্বের নামিদামি পোশাক ক্রেতা প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ সভা হয়।

দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে এবং তৈরি পোশাকখাতে তার প্রভাব ও এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক পোশাক ক্রেতাদের জানাতে এ সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় বাংলাদেশে সম্প্রতি ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন তৈরি পোশাকের আন্তর্জাতিক ক্রেতারা। একই সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ এবং আগামী দিনে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজিএমইএ এসব তথ্য জানায়।

সভা শেষে বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) বলেন, সভায় আমরা গত ১৮ জুলাই শুরু হওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এবং তা নিয়ন্ত্রণে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেছি। শিল্পের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড চলমান রাখতে এবং সাপ্লাই চেইন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে বিজিএমইএ’র পদক্ষেপগুলো ক্রেতাদের জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পাঁচদিন বন্ধের সময় আমরা বেশকিছু উৎপাদন এবং রপ্তানি হারিয়েছি, আমাদের মার্কেটিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে কারখানাগুলো আর্থিকভাবে এবং সাপ্লাই চেইনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা যখন টিকে থাকার জন্য চেষ্টা করছিলাম, সেসময় এ রকম একটি পরিস্থিতি আমাদের শিল্পের জন্য একটি বড় ধাক্কা। তিনি বলেন, আমি চলমান পরিস্থিতিতে কারখানাগুলোর প্রতি সহানুভূতিশীল থাকার জন্য ক্রেতাদের আহ্বান জানিয়েছি। অপ্রত্যাশিত বিলম্বের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাগুলোর ওপর যেন বাড়তি কোনো চাপ তৈরি না হয় সে বিষয়ে আমি ক্রেতাদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছি। সেই সঙ্গে এই অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির প্রভাব কমাতে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ ও সরকারের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ইন্টারনেট পরিসেবা দ্রুত চালু করার বিষয়ে আমরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত আলাপ-আলোচনা করেছি, যেন সীমিত পরিসরে হলেও অনতিবিলম্বে ইন্টার চালু করা হয়। আমাদের অনুরোধে ও দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের স্বার্থে সরকার দ্রুততার সঙ্গে ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরায় চালু করেছে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, যদিও তথ্যপ্রযুক্তির যুগে নজিরবিহীন এই পরিস্থিতিতে পোশাক কারখানা ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানসহ সবাই দুর্ভোগে পড়েছিল। আমাদের কারখানাগুলো যখন শীত মৌসুমের অর্ডার নেগোসিয়েশনে (যোগাযোগ) ব্যস্ত সময় পার করছিল, তখন এ রকম একটি নৈরাজ্যকর ঘটনা দেশের অর্থনীতিতে আঘাত হেনেছে।

তিনি বলেন, এছাড়াও বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসার পরিবেশ স্বাভাবিক করা, শিল্পে গতি ফিরিয়ে আনা ও বন্দর কার্যক্রমে যেন কোনো ধীরগতি বা জটলা না হয়, সে বিষয়ে আমাদের কর্মতৎপরতার বিষয়গুলো আমরা তাদের কাছে তুলে ধরেছি। আমরা গতকাল নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। বন্দর পরিষেবাগুলোকে দ্রুততর করার জন্য এবং অনাকাঙ্ক্ষিত বিলম্বের ফলে আমদানি-রপ্তানিকারকরা যেন বন্দরে কোনো ধরনের ক্ষতির শিকার না হন সেই দাবি জানিয়েছি। তিনি আমাদের অনুরোধে নীতিগত সম্মতি দিয়েছেন।

‘এছাড়াও শিল্পের গতি দ্রুত পুনরুদ্ধারের জন্য বন্দর, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, এনবিআরসহ সার্বিক পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি এবং প্রয়োজনীয় সবরকম পদক্ষেপ নিচ্ছি বলে তাদের আশ্বস্ত করেছি।’ যোগ করেন তিনি।

এস এম মান্নান কচি আর বলেন, পোশাক শিল্পে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আমরা প্রথমদিন থেকেই সরকারের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করে আসছি। আমরা প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি এবং দ্রুততম সময়ে কারখানা চালু করা এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ শিল্পের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের অনুরোধ জানিয়েছি। সরকারের আন্তরিক ও তড়িৎ পদক্ষেপের ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আমরা অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে পুনরায় কারখানাগুলো চালু করতে পেরেছি। এজন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারের নিকট আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত