ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

সৌদির খেজুর চাষে জাকিরের চমক

সৌদির খেজুর চাষে জাকিরের চমক

উত্তরের জেলা দিনাজপুর। ধান-লিচুর জেলা হিসেবে এখানকার সুখ্যাতি রয়েছে। তবে এবার মরুভূমির ফল খেজুর চাষ করে সাড়া ফেলেছেন দিনাজপুর জাকির হোসেন। দিনাজপুরের জেলার ফুলবাড়ী পৌর এলাকার স্বজনপুকুর গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন। ২০ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়েছেন সৌদি ও কুয়েতে। মধ্যপ্রাচ্যে থাকাকালীন মরুর ফল চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে অর্জন করেছেন ধারণা, গ্রহণ করেছেন কারিগরি প্রশিক্ষণ। দেশে ফেরার সময় সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন ১২ কেজি পাকা খেজুর।

২০২২ সালে প্রথম ফল ধরে তার বাগানের তিনটি গাছে। এখন প্রত্যেকটি গাছে থরে থরে ঝুলছে খেজুর। জাকিরের বাগানে খেজুরের মিষ্টির স্বাদ বর্তমানে ছড়িয়ে পড়েছে দিনাজপুরসহ সারা দেশে। জাকিরের বাগান দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন অনেকে। মাত্র চার থেকে ৫ বছরের মধ্যে সেই চারা গাছগুলো বর্তমানে পরিণত হয়েছে পূর্ণাঙ্গ বৃক্ষে। প্রথমে ২০ শতক জমিতে আজুয়া, মরিয়ম, আম্বার, বারহি, মেডজুল ও খনিজি জাতের খেজুর বাগান গড়ে তুলেন জাকির। খেজুর বাগান দেখেতে আসা এক দর্শনার্থী ইসমাইল হোসেন বলেন, আমি সৌদির খেজুর বাগান দেখতে আসছি। এর আগে কোনো দিন দেখিনি। বাগানটি দেখে অনেক ভালো লাগল।

খেজুর বাগান দেখেতে আসা দর্শনার্থী মোস্তাফা ইসলাম বলেন, আমরা তো সৌদির খেজুর খাই। সৌদির খেজুর দেখছি। বাংলাদেশে এমন খেজুর হয় তা দেখিনি। আজ প্রথম দেখলাম আমাদের দেশেও সৌদির খেজুর আবাদ হচ্ছে। আবার খাইতে পারছি এটাই আমাদের গর্ব। বাগান পরিচর্যাকারী জামিল হোসেন বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে এই খেজুর বাগান পরিচর্যা করি। এই বাগানে গত কয়েক বছর থেকে ফল আসা শুরু হয়েছে। এখন মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে বাগান দেখতে আসছে ফল খাচ্ছে, আবার কেউ খেজুর গাছের চারা নিয়ে যাচ্ছে। কৃষি উদ্যোক্তা জাকির হোসেন বলেন, এই বছর খেজুর বাগানে ৯টি গাছে ফল এসেছে। প্রতিটি গাছে ৮ থেকে ৯টি কাদিতে ধরেছে খেজুর। ৫০ থেকে ৫৫টি খেজুরের ওজন হয় এক কেজি। আর খেজুরের বীজ থেকে চারা গাছ হতে সময় লাগে দেড় থেকে দুই বছর। চারা রোপণের কয়েক বছরের মধ্যে আসে ফল।

বর্তমানে প্রতিটি চারা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাগানের চারা গাছ সংগ্রহ করছে কৃষি উদ্যোক্তারা। এর মধ্যে দেড় হাজার চারা ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি আমি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, ‘চাল-লিচুতে ভরপুর, জেলার নাম দিনাজপুর’ এই পরিচয় যুগ যুগ ধরে বহন করছে দিনাজপুর। তবে প্রথম সৌদির খেজুর চাষ করেছেন জাকির। তার হাত ধরে ফল-ফসলে আরো সমৃদ্ধ হলো এই জেলা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দিনাজপুরের উপ-পরিচালক মো. নূরুজ্জামান বলেন, মরু অঞ্চলের ফল দিনাজপুরের মাটিতে সফলভাবে ফলিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন প্রবাসী জাকির হোসেন। খেজুরগুলো বিলিয়ে দিচ্ছেন আশপাশের জেলায়ও। কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তাকে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত