এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে বিক্ষোভ ও সহিংসতা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার কারণে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের পর এবার ফেসবুক ও হোয়াটঅ্যাপ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে ইউটিউবসহ গুগলের পরিষেবাগুলো এখনো চালু রয়েছে। গতকাল রোববার দুপুর ১টা থেকে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো ফোর-জি নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। এরপর থেকে ব্রডব্যান্ডেও ফেসবুক ও হোয়াটঅ্যাপ কাজ করছে না।
জানা গেছে, মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের পাশাপাশি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের আইআইজি অপারেটররা ফেসবুক, হোয়াটঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রামের ক্যাশ সার্ভারগুলো ডাউন করে দেয়া হয়েছে। এর আগে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো জানিয়েছিল, দুপুর ১টা থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক ডাউন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ ফোর-জি সেবা বন্ধের নির্দেশনা তাদের কাছে এসেছে। ফলে মোবাইল ইন্টারনেটে ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক মাধ্যমগুলো ব্যবহার করা যাবে না। একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের শীর্ষ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ফোর-জি সেবা বন্ধের নির্দেশনা তাদের কাছে এসেছে। গত শুক্রবারও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক মোবাইল নেটওয়ার্কে ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। একই সঙ্গে মোবাইল নেটওয়ার্কে কাজ করছিল না রাশিয়াভিত্তিক মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামও।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার মধ্যে গত ১৭ জুলাই রাতে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়। ১৮ জুলাই রাতে বন্ধ করা হয় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও। এরপর থেকেই দেশের সামাজিকমাধ্যম ব্যবহারকারীরা ফেসবুকসহ অন্যান্য মাধ্যম ব্যবহার করতে পারছিলেন না।
পাঁচদিন পর ২৩ জুলাই রাতে পরীক্ষামূলকভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কূটনীতিক পাড়া, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ, ফ্রিল্যান্সিং ও প্রযুক্তি এবং রফতানিমুখী খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই সেবা চালু হয়। পরে বাসাবাড়িতেও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু করা হয়।
বন্ধের ১১ দিন পর চালু করা হয় মোবাইল ইন্টারনেটও। তবে সেবা চালু হলেও মিলছে না স্বাভাবিক গতি। জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আজ বিকেলের মধ্যে ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউব চালু হবে। এরই মধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিটিআরসি কাজ শুরু করেছে। স্বাভাবিক হবে ইন্টারনেটের গতিও। সর্বোচ্চ গতি নিশ্চিত করার কার্যক্রম চলছে। গত ২৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ের কিছু ভিডিও কন্টেন্টের ব্যাপারে ফেসবুক, ইউটিউব ও টিকটককে চিঠি দিয়ে তলব করে সরকার। চিঠিতে তাদের কাছে যৌক্তিক ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। একই সঙ্গে ৩১ জুলাই সশরীরে বিটিআরসিতে প্রতিনিধিদের হাজির হতেও বলা হয়। টিকটক চিঠির জবাব দিলেও ফেসবুক জবাব দেয়নি বলে জানা যায়।