বাংলাদেশ থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটেছে। ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও ভয়াবহ বেকায়দায় পড়েছেন আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা। অনেকে সুযোগ বুঝে দেশ ছাড়তে পারলেও আটকেপড়া অনেক এমপি-মন্ত্রী ও অসংখ্য নেতাকর্মী প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের অনেকে আবার বিভিন্ন দূতাবাসে আশ্রয়ও চেয়েছেন। আবার অনেকে আটক হয়েছেন।
সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে বিকাল ৩টার দিকে তাকে আটক করা হয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি জানিয়েছে। বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে অপেক্ষায় ছিলেন শেখ হাসিনা সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তখন বিমানবন্দরের কর্মচারীরা তাকে ভিআইপি লাউঞ্জে আটকে রাখেন। কিছুক্ষণ পর বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা এসে তাকে আটক করেন।
এর আগে দেশ ছাড়তে গিয়ে বিমানবন্দরে আটক হয়েছে দুই ছাত্রলীগ নেতা। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা হযরত শাহজাহাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক হন তারা।
আটক দুই নেতা হলেন- ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।
জানা গেছে, মঙ্গলবার দেশ ত্যাগের উদ্দেশে তারা দুইজন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গেলে সেখানে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের আটক করে।
এদিকে মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে দেশ ত্যাগের চেষ্টা করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত। তবে ইমিগ্রেশন পুলিশের বাধায় দেশ ছাড়তে পারেননি তারা।
এর আগে গত সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে সামরিক হেলিকপ্টারে চড়ে ভারতের উদ্দেশে উড়াল দেন শেখ হাসিনা। তার তাৎক্ষণিক এ সিদ্ধান্তে কয়েকজন এমপি-মন্ত্রী দেশ ছাড়তে না পেরে দেশে গাঢাকা দেন। এমনকি, মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বিভিন্ন দূতাবাসে আশ্রয় চেয়েছেন বলেও খবর চাউর হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত শনিবার বিকাল থেকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গাঢাকা দিয়েছেন। জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে প্রতিদিন মিডিয়ার সামনে কথা বললেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শেষ মুহূর্তে মিডিয়ায় কথা কম বলতে দেখা যায় তাকে। গত শনিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেষবারের মতো কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তবে রোববার থেকে তাকে কোথাও দেখা যায়নি।
আরেকটি সূত্র বলছে, রোববার রাতেই দেশত্যাগ করেছেন ওবায়দুল কাদের। বর্তমানে তিনি সিঙ্গাপুর রয়েছেন। অন্য একটি সূত্র বলছে, ওবায়দুল কাদের বর্তমানে নয়াদিল্লিতে অবস্থান করছেন। সূত্র জানায়, গত সোমবার ভোর থেকেই প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত এমপি-মন্ত্রীদের অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। অনেকের মুঠোফোন বন্ধ ছিল। বিশেষ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক অজ্ঞাত স্থানে চলে যান