ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সরকারি সব ওয়েবসাইট বন্ধ

অনলাইনে ভূমিসেবায় বিড়ম্বনা
সরকারি সব ওয়েবসাইট বন্ধ

চলমান পরিস্থিতিতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর, অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট বন্ধ রয়েছে। এতে মানুষের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, তথ্য কমিশন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগসহ বেশ কিছু ওয়েবসাইটে ঢোকা যাচ্ছে না। সার্ভারের ত্রুটির কারণে এসব ওয়েবসাইট বন্ধ রয়েছে কি না, সেই বিষয়ে সরকারি ওয়েবসাইটগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে বিক্ষোভ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় সারা দেশে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ দেয় সরকার। সদ্য বিদায়ী ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশে সরকারি ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে অনলাইন ওয়েবসাইটগুলো খুব শিগগিরই সচল করা হবে।

তবে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, জরুরি কারিগরি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলমান আছে। উক্ত সময়ে সকল প্রকার সার্ভিস প্রদান বন্ধ থাকবে। সিস্টেমের সব গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীর নিকট আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ অতি সংবেদনশীল বিভিন্ন সরকারি দফতরের ওয়েবসাইটগুলোর সার্ভারেও সমস্যা হয়েছে। ভূমি সেবায় খতিয়ানের তথ্য অনুসন্ধানেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। রাজধানীর মগবাজারে বিটিসিএলের সার্ভারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তর, অধিদপ্তর, সংস্থা ও মাঠপর্যায়ে সরকারি অফিসগুলোর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যাচ্ছে না।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পরে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের নামে ২০১১-১২ অর্থবছরে প্রতিটি সরকারি অফিসের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হয়েছিল ২৪ হাজার ওয়েবসাইট। উদ্দেশ্য ছিল সরকারি সব কার্যক্রম সম্পর্কে সার্বক্ষণিক আপডেট থাকা এবং জনসাধারণকেও তাৎক্ষণিকভাবে হালনাগাদ কাঙ্ক্ষিত তথ্য দেয়া। অথচ অধিকাংশ ওয়েবসাইটই ভুল তথ্যে ভরা ছিল, হালনাগাদও হয়নি। বছরের পর বছর আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে অনলাইনের সেবার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও অসাধু কর্মকর্তারা। তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ অনুযায়ী যে তথ্যগুলো স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রকাশ করার কথা, সেগুলো প্রকাশ করা হয়নি। তাছাড়া দফতরের কার্যক্রম, গুরুত্বপূর্ণ নোটিশ, কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য, বিভিন্ন সভার কার্যবিবরণী, উন্নয়ন প্রকল্পের তথ্য, সুবিধাভোগীদের তালিকা এগুলোও নেই অধিকাংশ ওয়েবসাইটে। জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের অধিকাংশ ওয়েবসাইটই পুরোনো তথ্যে ঠাসা। এতে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন সঠিক তথ্যপ্রাপ্তির ন্যায্য অধিকার থেকে। সরকারি সেবার বিভিন্ন তথ্য সাধারণ মানুষ অবাধে না জানার ফলে মাঠপর্যায়ে দুর্নীতিও বেড়েছে। একইভাবে মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদফতরের ওয়েবসাইটগুলোতেও প্রয়োজনীয় তথ্য মিলছে না। কিছু বিষয় শুধু ইংরেজি ভাষায় তৈরি হওয়ায় অনেক ব্যবহারকারী সহজে ব্যবহার করতে পারেনি। তথ্যপ্রযুক্তির যুগেও বিপুল অর্থ ব্যয়ে সরকারি বিভিন্ন প্রতিবেদন ও প্রকাশনা বিজি প্রেসে ছাপানো হয় ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে। গত কয়েক দিন ধরেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রণালয়ের অধীন দফতর-অধিদফতরের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও ভূমি সেবার ওয়েবসাইট বন্ধের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কিছু বলতে পারছেন না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত